সিলেটে ভয়াবহ বন্যা গত ২৪ ঘন্টায় পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে
সিলেটে গত ২৪ ঘন্টায় বন্যার পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। এই পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। উজান থেকে নেমে আসা বানের পানি আর দেশের ভেতরের অতি বৃষ্টির কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে সুরমা-কুশিয়ারার পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে।
অনেক সড়ক ডুবে যাওয়ায় বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোর অনেক
এলাকাই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে জেলা শহর থেকে। সুরমা নদীর পানি অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় গতকাল থেকে প্রবেশ করতে শুরু করে সিলেট নগরীতেও। এতে নগরীর নিচু রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সুরমা নদীর তীরবর্তী মাছিমপুর ও নগরীর অভিজাত পাড়া হিসেবে পরিচিত উপশহর এখন পানিবন্ধী। নতুন নতুন এলাকা ও নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে।
ভারতের উজানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় জকিগঞ্জ-কানাইঘাটে ভয়াবহ বন্যার দেখা দিয়েছে। বন্যায় তলিয়ে গেছে বহু রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, বীজতলা ও শত শত একর উঁচু জমির বোরো ফসল। বিভিন্ন পুকুর ও ফিশারীর মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এতে কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় মানুষজন।
কাঁচা/আধাকাঁচা অনেক ঘরের ক্ষতি হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ। লোকজনকে আশ্রয়কেন্দে আসার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়েছে বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও হাটবাজার। অনেক মাদ্রাসা ও স্কুলে বন্যার পানি উঠার ফলে শ্রেণী কক্ষে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার বন্যা পরিস্থিতিঃ
কানাইঘাটঃ সিলেটের কানাইঘাটে বন্যার পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। বন্যার পানিতে অনেকের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। বন্যায় ইতোমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন উপজেলার লাখো মানুষ। অনেক মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্র সহ উচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যা কবলিত এলাকা গতকাল সোমবার (১৬ মে) সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিদর্শন করেছেন কানাইঘাট-জকিগঞ্জ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদার।
সিলেট সদরঃ সিলেট সদরের অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বন্যায়। উপজেলার মোগলগাও ইউনিয়ন অর্ন্তভূক্ত নদীর তীরবর্তী অনেক এলাকায় বন্যার পানি ঘরবাড়িতে উঠেছে।
জৈন্তাপুরঃ জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট এবং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের অনেক গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এসব গ্রামের সঙ্গে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন। এ উপজেলায় ফসলি জমিও তলিয়ে গেছে।
গোলাপগঞ্জঃ গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়ন, বাদেপাশা ইউনিয়ন, শরিফগঞ্জ ইউনিয়ন সহ উপজেলার অনেক নিম্নাঞ্চলে ঘরবাড়িতে পানি ওঠেছে। পানিবন্দী হয়েছে হাজারো মানুষ।
বিশ্বনাথঃ বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ও খাজাঞ্চি ইউনিয়নের অনেক নিম্নাঞ্চল এলাকার ঘরবাড়িতে পানি উঠায় ফলে মানুষ অসহায় হয়ে পরেছে।