কোষ প্রাচীর কাকে বলে?
কোষ প্রাচীর কাকে বলে?
উদ্ভিদের জননকোষ ছাড়া অন্যান্য সমস্ত কোষের প্রোটোপ্লাজম চারদিক ঘিরে যে সছিদ্র, পুরু ও শক্ত জড় আবরণ থাকে সেটিই কোষ প্রাচীর।
রবার্ট হুক ১৬৬৫ সালে অণুবীক্ষণযন্ত্রে বোতলের কর্ক পরীক্ষাকালে যে প্রোকোষ্ঠ দেখেছিলেন তা ছিল মূলত কোষপ্রাচীর।
পাঁচজগত শ্রেণিবিন্যাস ধারণায় শৈবাল, ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, সায়ানোব্যাকটেরিয়াকে উদ্ভিদ বলে গণ্য করা হয় না কিন্তু এসব জীবেও কোষপ্রাচীর থাকে। কাজেই কোষপ্রাচীরকে উদ্ভিদের অনন্য বৈশিষ্ট্য না বলে প্রধান বৈশিষ্ট্য বলাই ভালো।
কোষের অবস্থান ও বয়সভেদে কোষপ্রাচীর সূক্ষ্ম অথবা স্থূল এবং মসৃণ বা কারুকার্যময় হতে পারে।
কোষ প্রাচীর উদ্ভিদ কোষের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এটি মৃত বা জড়বস্তু দিয়ে তৈরি। প্রাণিকোষে কোষপ্রাচীর থাকে না। কোষপ্রাচীরের রাসায়নিক গঠন বেশ জটিল, এতে সেলুলোজ, হেমিসেলুলোজ, লিগনিন, পেকটিন, সুবেরিন নামক রাসায়নিক পদার্থ থাকে।
তবে ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীর প্রোটিন, লিপিড ও পলিস্যাকারাইড দিয়ে এবং ছত্রাকের কোষপ্রাচীর কাইটিন দিয়ে তৈরি। প্রাথমিক কোষপ্রাচীরটি একস্তরবিশিষ্ট। মধ্য পর্দার উপর প্রোটোপ্লাজম থেকে নিঃসৃত কয়েক ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য জমা হয়ে ক্রমশ গৌণপ্রাচীর সৃষ্টি হয়।
এ প্রাচীরে মাঝে মাঝে ছিদ্র থাকে, যাকে কূপ বলে। কোষপ্রাচীর কোষকে দৃঢ়তা প্রদান করে, কোষের আকার ও আকৃতি বজায় রাখে। পাশের কোষের সাথে প্লাজমাডেজমাটা (আণুবীক্ষণিক নালি) সৃষ্টির মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে এবং পানি ও খনিজ লবণ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।