পড়াশোনা

শিশু কেন্দ্রিক শিক্ষা কাকে বলে? শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষার বৈশিষ্ট্য

1 min read

শিশু কেন্দ্রিক শিক্ষা কাকে বলে?

শিশুই হলো সমস্ত শিক্ষাব্যবস্থায় কেন্দ্র বিন্দু। শিক্ষার্থীর সামর্থ্য, বুদ্ধি, আগ্রহ, রুচি, প্রক্ষোভ, চাহিদা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে যে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত হয় তাকেই বর্তমানে শিশু কেন্দ্রিক শিক্ষা বলে।

 

শিশুই হলো শিক্ষা প্রক্রিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শিশুকে কেন্দ্র করে সম্পূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। শিশুর সর্বাঙ্গীণ বিকাশকে ত্বরাণ্বিত করতে গিয়ে শিশুর আগ্রহ, রুচি ও প্রবণতাকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার পরিচালনার ব্যবস্থা হয়েছে। অর্থাৎ বাইরে থেকে জোর করে শিক্ষার্থীর উপর চাপিয়ে দেয়া যাবে না। তার নিজের চাহিদা এবং যে সমাজে সে বাস করে সেই সমাজের চাহিদার মধ্যে সমন্বয় সাধন করে শিক্ষা গড়ে তুলতে হবে। স্বাভাবিকভাবে এই ধারার প্রভাবে শিক্ষার তাৎপর্য, লক্ষ্য, পদ্ধতি সবকিছু পরিবর্তিত হয়ে যাবে।

গতানুগতিক শিক্ষায় যেখানে শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু ছিল শিক্ষক, তাঁকে ঘিরেই সমস্ত শিক্ষাপ্রক্রিয়া পরিচালিত হত। যেখানে শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন শিক্ষক। যেখানে শিশুর আগ্রহ, চাহিদা ও সামর্থ্যকে গুরুত্ব দেওয়া হত না। কিন্তু বর্তমানে শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষায় একজন শিশু শিক্ষাক্ষেত্রে সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনতা ভোগ করে এবং শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে ব্যক্তি স্বাধীনতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে।

 

শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষার বৈশিষ্ট্য

মনস্তত্ব ভিত্তিকঃ আধুনিক শিশু কেন্দ্রিক শিক্ষার মনস্তত্বের পরীক্ষিত তত্ত্বের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। শিক্ষার পদ্ধতি, শৃঙ্খলার ধারনা, পাঠক্রম ইত্যাদি সবকিছুই মনস্তত্বের দ্বারা বিশেষ ভাবে প্রভাবিত হয়েছে।

সক্রিয়তাঃ বর্তমানে সক্রিয়তা ভিত্তিক পদ্ধতির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শ্রেনীতে শিশুরা নিস্ক্রিয় হয়ে বসে না থেকে সক্রিয়তার মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করে।

অবাধ স্বাধীনতাঃ শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষা শিশুকে দিয়েছে অবাধ স্বাধীনতা। কোন কিছু বর্তমানে শিশুকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়না। শিশুরা তাদের আগ্রহ, পছন্দ এবং সামর্থ্য অনুসারে কাজকর্ম করতে পারে।

সৃজনশীলতাঃ নানা ধরনের হাতের কাজের মাধ্যমে শিশুর সৃজনশীলতার বিকাশের চেষ্টা করা হয় শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষায়। যেমন: কাগজের নানা ধরনের কাজ, মাটির কাজ, ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে নানা ধরনের কাজ ইত্যাদি।

 

শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কঃ ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষা পদ্ধতি শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষায় গ্রহণ করার ফলে শিক্ষক শিক্ষার্থীর মধ্যে সম্পর্ক নিবিড় ও মধুর হয়। বর্তমান শিক্ষক হলেন শিক্ষার্থীর বন্ধু ও পরামর্শদাতা। শিক্ষার্থীর নৈতিক চরিত্র গঠনে ও ব্যক্তিত্ব বিকাশে শিক্ষক প্রয়োজনমত সুপরামর্শ দিয়ে থাকেন।

সমন্বয়িত পাঠ্যক্রমঃ শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষায় একাটি বৈশিষ্ট্য হল এর সমন্বিত পাঠ্যক্রম (Integrated Curriculum)। এই পাঠ্যক্রমে দার্শনিক, মনস্তাত্বিক, বৈজ্ঞানিক ও সমাজবিদ্যার সমন্বয় ঘটেছে। শিক্ষার বিভিন্ন তত্বকে কেন্দ্র করে পাঠ্যক্রম তৈরী হয়ে থাকে।

আধুনিক শিক্ষোপকরনঃ শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষার আর একটি বৈশিষ্ট্য হল শিক্ষার ক্ষেত্রে আধুনিক উন্নত শিক্ষোপকরনের ব্যবহার। যার মাধ্যমে শিক্ষাকে অনেক বেশী আগ্রহশীল ও আনন্দদায়ক করে তোলা যায়।যেমন- মন্টেসরি তে শিক্ষামূলক সারঞ্জাম (Deductive Apparatus), ফ্রয়েবেলের কিন্ডারগার্টেন পদ্ধতিতে উপহার(Gift) ইত্যাদি, উপকরন শিশুদের পক্ষে খুবই উপযোগী।

শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষার গুরুত্ব বর্তমান কালে সবাই স্বীকার করে থাকেন। বিদেশে এ ব্যপারে বিশেষ চিন্তা ভাবনা চলছে এবং ভবিষ্যতে আশা করা যায় শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষা বিশেষ উন্নতি লাভ করবে।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

x