সংস্কৃতি কাকে বলে?
সংস্কৃতি কাকে বলে?
সংস্কৃতি হলো এমন জীবন ধারা যা মানুষ তার জীবন নির্বাহ করতে গিয়ে নানা প্রয়োজনে নিজস্ব সাংস্কৃতিক উপাদান ছাড়াও বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক উপাদানসমূহ সংযোজনের মাধ্যমে নিজেদের সংস্কৃতির উৎকর্ষ সাধন করে। বিভিন্ন পথ উদ্ভাবন করতে শিখে থাকে।
মানসিক, বুদ্ধিভিত্তিক এবং দৈহিক চাহিদা পূরণের জন্য চর্চার মাধ্যমে প্রাপ্ত বিষয়বস্তুর নির্যাসই হলো সংস্কৃতি। বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী এবং নৃবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে সংস্কৃতিকে সংজ্ঞায়িত করেছেন।
যেমন –
ব্রিটিশ নৃবিজ্ঞানী ই.বি টাইলর তাঁর ‘Primitive Culture’ গ্রন্থে বলেছেন, “সংস্কৃতি হলো সমাজস্থ মানুষের সমগ্র জীবন প্রণালী।” তাঁর মতে, সংস্কৃতি হচ্ছে সমাজের সদস্য হিসেবে মানুষের অর্জিত জ্ঞান, বিশ্বাস, শিল্পকলা, নৈতিকতা, আইন, রীতিনীতি এবং অন্য যেকোনো দক্ষতা ও অভ্যাসের জটিল সমষ্টি।
সংস্কৃতির সংজ্ঞায় Jones বলেন, “মানুষ তার চলার পথে জীবিকা নির্বাহের জন্য যা কিছু সৃষ্টি করে তা-ই সংস্কৃতি।”
ম্যালিনোস্কি তাঁর, “সংস্কৃতি হলো মানুষের আপন কর্মের সৃষ্টি যার মাধ্যমে সে তার উদ্দেশ্য সাধন করে।”
সমাজবিজ্ঞানী স্পেনসার সংস্কৃতিকে একটি অধি-জৈবিক পরিবেশের সাথে তুলনা করেছেন, এই জৈবিক পরিবেশ বৃক্ষরাজি এবং পশুপাখি দ্বারা গঠিত এবং এটি জৈবিক বা প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে ভিন্ন।
Samuel Koenig তাঁর Sociology গ্রন্থে বলেন, “মানুষ তার চারপাশের পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য যে প্রচেষ্টা চালায় এবং তার জীবনমান বৃদ্ধিতে যত কাজ করে তার সমষ্টিই হলো সংস্কৃতি।”
উপরের সংজ্ঞাগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, মানুষের সামগ্রিক কার্যাবলি যা সে তার জীবন ধারণের জন্য করে থাকে তাকে সংস্কৃতি বলে। মানুষের আচার-আচরণ, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, জ্ঞান, প্রজ্ঞা, মেধা, নীতিবোধ ইত্যাদির সমষ্টিই সংস্কৃতি।