জীব বৈচিত্র্যের অর্থনৈতিক গুরুত্ব

জীব বৈচিত্র্যের অর্থনৈতিক গুরুত্ব

জীববৈচিত্র্যের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বহুবিধ। যথা –

  • উদ্ভিদ প্রজাতি দিবালোকে পরিবেশ থেকে সংগৃহীত জল, কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং খনিজ দ্বারা সালোকসংশ্লেষ পদ্ধতিতে খাদ্য উৎপাদন করে নিজের কোশে সংরক্ষণ করে। মানুষ ও বেশির ভাগ প্রাণী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল।
  • উদ্ভিদ প্রজাতি বা বনজ সম্পদ থেকে মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহারের নানাবিধ পোশাক প্রস্তুত করা হয়। বর্তমানে আধুনিক ও সূক্ষ্ম মসৃণ, উন্নত গুণমানের জামাকাপড় এই উদ্ভিদ প্রজাতি থেকেই অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে তৈরি করা হচ্ছে।
  • জীববৈচিত্র্য থেকে বিভিন্ন জীবনদায়ী ওষুধ প্রস্তুত করা হয়। জটিল ক্যান্সার রোগের প্রতিষেধক এই জীববৈচিত্র্য থেকেই বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা 90 টি উদ্ভিদ প্রজাতি থেকে 120 রকমের অতিপ্রয়োজনীয় ওষুধ তৈরি করেছেন। এমনকি অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলি প্রায় 80 শতাংশ মানুষ ভেষজ ওষুদের জন্য প্রত্যক্ষভাবে গাছপালার ওপর নির্ভর করে। বর্তমানে উন্নত দেশগুলি তার ভৌগলিক সীমানার বাইরে বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশ থেকে বিভিন্ন বনজ সম্পদগুলি (উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতি) ‘Bio-piracy’- এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্বার্থে নিজেদের দেশে নিয়ে গিয়ে আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে দুরারোগ্য ব্যাধির ওষুধ প্রস্তুত করছে, যার প্রকৃতমূল্য সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে। এর ফলে প্রকৃত উৎপাদনশীল দেশ এই মূল্যবান সম্পদ উৎপাদন করেও এর উপযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
  • জীববৈচিত্র্য থেকে বিভিন্ন জ্বালানি ও কাঠ উৎপাদিত হচ্ছে। শিল্পের বিভিন্ন কাঁচামাল এই জীববৈচিত্র্য থেকে সরবরাহ করা হয়। খেলাধুলার বিভিন্ন সাজসরঞ্জাম জীববৈচিত্র্য থেকে বিভিন্ন অত্যাধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়।
  • পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এই জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ স্থানগুলিকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বর্তমানে Eco-Tourism- এর জন্যও স্থানগুলি নির্বাচিত হয়েছে।

Similar Posts