পদার্থ বিজ্ঞান

পদার্থ কাকে বলে? পদার্থ কত প্রকার ও কী কী? সংজ্ঞাসহ উদাহারন

1 min read

পদার্থ কী?

আমাদের আশেপাশে আমরা যা দেখতে পাই বা অনুবভব করতে পারি তাই হচ্ছে পদার্থ। আপনার সামনে একটি টেবিল আছে, টেবিলে গ্লাস আছে এবং গ্লাসে পানি আছে। এখানে টেবিল, গ্লাস, পানি প্রত্যেকেই এক একটি পদার্থ। আমরা নিজে নিজেই একটি পদার্থের অন্যতম উদাহারন। আমাদের শ্বাস প্রশ্বাস চলার মাধ্যমে আমরা বেঁচে আছি। আমরা সবাই জানি, শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে আমরা অক্সিজেন গ্রহন করি এবং কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরন করি। অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইড আমরা দেখতে পাই না, কিন্তু অনুভব করতে পারি। এই অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইড প্রত্যেকেই এক ধরনের পদার্থ।

পদার্থ কাকে বলে?

যা নির্দিষ্ট স্থান দখল করে এবং যার একটি নির্দিষ্ট ভর আছে, তাকেই পদার্থ বলে। এখানে, ভর হচ্ছে একটি পদার্থের পরিমাণ। এই পরিমাণের উপর ভিত্তি করে পদার্থ তার নিজের স্থান দখল করে। একটি পদার্থের আকার ও আয়তন থাকতে পারে আবার নাও থাকতে। আমাদের আশেপাশে যা আছে সবকিছুই হচ্ছে পদার্থের উদাহারন। কলম, খাতা, পেন্সিল, কাঠ, কম্পিউটার, মাউজ, কাপ, মগ ইত্যাদি হচ্ছে পদার্থ।

পদার্থ কত প্রকার ও কী কী?

পদার্থ গঠনভেদে দুই প্রকার,

১। মৌলিক পদার্থ : যেসব পদার্থকে সম্পূর্ণ রূপে বিভাজন বা পৃথক করলে শুধুমাত্র ঐ পদার্থ ছাড়া অন্য কোনো পদার্থ পাওয়া যায় না, তাদেরকেই মৌলিক পদার্থ বলে। অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন ইত্যাদি মৌল হচ্ছে মৌলিক পদার্থ।

২। যৌগিক পদার্থ : যেসব পদার্থকে বিভাজন বা পৃথক করলে, ঐ পদার্থ ছাড়া অন্য কোনো পদার্থ পাওয়া যায়, তাদেরকেই যৌগিক পদার্থ বলে। পানি, কার্বন ডাই অক্সাইড ইত্যাদি যৌগ হচ্ছে যৌগিক পদার্থের উদাহারন।

আবার অবস্থানভেদে পদার্থ চার প্রকার,

১। কঠিন পদার্থ : যে পদার্থের নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন আছে এবং অনু পরমাণু গুলো খুব ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত থাকে, তাকে কঠিন পদার্থ বলে। পদার্থের কঠিন অবস্থায় আন্তঃআনবিক ও আন্তঃপারমানবিক শক্তি সবচেয়ে বেশি থাকে। এই অবস্থায় অনু পরমাণুর মধ্যে কম্পনশীলতা ও সংকোচন অনেক পরিমাণে থাকে। ইট, পাথর, কাঠ ইত্যাদি হচ্ছে কঠিন পদার্থের উদাহারন।

২। তরল পদার্থ : যে পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন আছে, কিন্তু নির্দিষ্ট আকার নেই এবং ঐ পদার্থের অনু পরমাণু গুলো একে অপরের সাথে অল্প দূরত্ব বজায় রাখে, তাকে তরল পদার্থ বলে। পদার্থের তরল অবস্থায় আন্তঃআনবিক ও আন্তঃপারমানবিক শক্তি কঠিন অবস্থার চেয়ে তুলনামূলক কম থাকে। এই অবস্থায় অনু পরমাণুর মধ্যে কম্পনশীলতা ও সংকোচন কম থাকে। পানি, তেল, দুধ ইত্যাদি হচ্ছে তরল পদার্থের উদাহারন।

৩। বায়বীয় পদার্থ : যে পদার্থের নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন নেই এবং ঐ পদার্থে অনু পরমাণু সমূহ একে অপরের সাথে অনেক দূরত্ব বজায় রাখে, তাকে বায়বীয় পদার্থ বলে। পদার্থের কঠিন অবস্থায় আন্তঃআনবিক ও আন্তঃপারমানবিক শক্তি খুবই নগণ্য। এই অবস্থায় অনু পরমাণুর মধ্যে কম্পনশীলতা ও সংকোচন প্রায়ই নেই বললে চলে। বাতাস, পানির বাষ্প, কার্বন ডাই অক্সাইড ইত্যাদি হচ্ছে বায়বীয় পদার্থের উদাহারন।

৪। প্লাজমা : পদার্থের যে গ্যাসীয় অবস্থায় সমান সংখ্যক ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়ন বহন করে আয়নিত হয়, তাকে প্লাজমা বলে। পদার্থের প্লাজমা অবস্থায় ধনাত্মক চার্জ বা আয়ন কণা বা অনু-পরমাণু বহন করে এবং ঋণাত্মক আয়ন বা চার্জ ইলেকট্রন বহন করে। বজ্রপাত, নিয়ন গ্যাস দিয়ে তৈরি রাসায়নিক যৌগ, নিউক্লিয়ার বোমায় উৎপন্ন আগুন ইত্যাদি হচ্ছে পদার্থের প্লাজমা অবস্থার উদাহারন।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

x