প্লাস্টিড কাকে বলে, এর চিত্র, গঠন, কাজ এবং প্রকারভেদ

প্লাস্টিড কাকে বলে

উদ্ভিদ কোষস্থ সজীব বস্তু (প্রোটোপ্লাজম) এর ভিতর সাইটোপ্লাজমস্থ কোষীয় যে সর্ব বৃহৎ অঙ্গাণু বা ক্ষুদ্রাঙ্গটি স্ট্রোমা, গ্রানা কণা ও লিপো প্রোটিন ঝিল্লি দ্বারা আবদ্ধ থাকে, তাকে প্লাস্টিড বলে। প্লাস্টিড হচ্ছে উদ্ভিদ কোষের একটি সবুজ ক্ষুদ্রাঙ্গের নাম। আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র দ্বারা ১৮৮৩ সালে উদ্ভিদ বিজ্ঞানী শিম্পার সবুজ বর্ণের ধরণের কণা উদ্ভিদ কোষে দেখতে পান। এক কোষীয় কণা বা অঙ্গাণু ছিল প্লাস্টিড। তবে, শিম্পার ঐ সময়ে কোষীয় ক্ষুদ্রাঙ্গটির নাম দেন ক্লোরোপ্লাস্ট। বিশেষ দ্রষ্টব্য স্বরুপ বলে রাখা দরকার যে, ক্লোরোপ্লাস্ট এক ধরণের প্লাস্টিডের প্রকারভেদ।

প্লাস্টিড এর চিত্র ও গঠন

প্লাস্টিড এর সংজ্ঞা থেকেই আমরা বুঝতে পারি যে, প্লাস্টিড এ তিন ধরণের কোষীয় বস্তু থাকা আবশ্যক। এই তিনটি বস্তু হল, স্ট্রোমা, গ্রানা কণা ও লিপো-প্রোটিন ঝিল্লি। নিচের চিত্রে তা স্পষ্ট ভাবে দেখানো হল। স্ট্রোমা ও গ্রানা কণা সমূহ অভ্যন্তরীণ ঝিল্লী দ্বারা আবিষ্ট থাকে। স্ট্রোমা ও গ্রানা সম্মলিতভাবে থাইলাকয়েড মেমব্রেন তৈরি করে। থাইলাকয়েড মেমব্রেন সালোকসংশ্লেষন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে যা ক্লোরোপ্লাস্ট প্লাস্টিডে দেখা যায়। প্লাস্টিডের বাইরের ঝিল্লী হচ্ছের প্রোটিন দ্বারা নির্মিত। প্লাস্টিডের বাইরের ঝিল্লীর অতিরিক্ত অংশকে লিপো প্রোটিন ঝিল্লী। যত ধরণের প্লাস্টিড আছে সবধরনের প্লাস্টিডেই এই তিনটি বস্তু বিদ্যমান। এছাড়াও প্লাস্টিডে রাইবোসোম ও ডি এন এ থাকে।

প্লাস্টিড এর চিত্র ও গঠন
প্লাস্টিড এর চিত্র ও গঠন

 

প্লাস্টিড এর প্রকারভেদ

প্লাস্টিড সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে। নিচে তাদের সংক্ষিপ্ত বিবরন দেওয়া হল।

  • লিউকোপ্লাস্টঃ লিউকোপ্লাস্ট বর্ণহীন হয়ে থাকে, কারন এই ধরণের প্লাস্টিড ভূমির নিচে উদ্ভিদের মূলে বা ভূ-নিম্নস্থ কান্ডে অবস্থান করে।
  • ক্রোমোপ্লাস্টঃ ক্রোমোপ্লাস্ট বর্ণযুক্ত হয়ে থাকে। এই ধরণের প্লাস্টিডকে রঙ্গিন প্লাস্টিডও বলা হয়ে থাকে। এক কথায় বলতে গেলে, উদ্ভিদের যেসব অঙ্গ রঙিন থাকে, সেই সব অঙ্গের প্লাস্টিডকে ক্রোমোপ্লাস্ট বলা হয়ে থাকে। ফুলের রঙিন পাপড়ি ক্রোমোপ্লাস্ট এর উদাহরণ।
  • ক্লোরোপ্লাস্টঃ এই ধরনের প্লাস্টিড রঙিন, তবে তা সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে। যেকোন উদ্ভিদের সবুজ অংশকে ক্লোরোপ্লাস্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্লাস্টিডের মধ্যে ক্লোরোপ্লাস্ট এর গুরুত্ব অপরিসীম।

প্লাস্টিডের প্রধান কয়েকটি কাজ

  • কোষে শ্বেতসার, চর্বি ও প্রোটিন জাতীয় খাবার সংগ্রহ করতে সাহায্য করে।
  • পাতা রঙিন ও ফুলকে সৌন্দর্য বর্ধিত করে থাকে।
  • কোষে ফটোফসফোরাইলেশন ও ফটোরেসপিরেশনে অংশগ্রহণ করে।
  • সূর্যের আলোর উপস্থিতে সালোকসংশ্লেষন প্রক্রিয়ায় খাদ্য প্রস্তুত করে থাকে।

Similar Posts