কৃষি কী
কৃষি কী
কৃষি কথাটির সুস্পষ্ট সংজ্ঞা প্রদান সম্ভব নয়। কৃষি হলো এক ধরনের জেনেটিক (Genetic) শিল্প। কৃষিকে কোনো কোনো অর্থনীতিবিদ জমি কর্ষণের উপায় এবং বিজ্ঞান (The science and art of cultivating the soil) বলে অভিহিত করেন।
কৃষি কাকে বলে
সাধারণ অর্থে, জমিতে শ্রম এবং অপরাপর উপকরণ সংযোজন করে বিভিন্ন ধরনের শস্য উৎপাদন করাকে কৃষি বলা হয়। এক্ষেত্রে কৃষিকে শস্য উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
কিন্তু চাষাবাদ অথবা ভূমি কর্ষণের সাথে শস্য ছাড়াও অপরাপর প্রয়োজনীয় উদ্ভিদ এবং গবাদি পশুর উৎপাদন এবং ব্যবহার জড়িত থাকে। বিস্তৃত অর্থে, জমি চাষাবাদ করে বিভিন্ন ধরনের শস্য, শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদির উৎপাদন, বাছাইকরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের পাশাপাশি গবাদি পশুর প্রজনন/উৎপাদন এবং ব্যবহার সম্পর্কিত সব ধরনের কাজকে কৃষি বলা হয়। অর্থাৎ, অর্থনীতির আলোচনায় পশুপালন থেকে শুরু করে শস্য উৎপাদন, বনায়ন, খনিজ ও মৎস্যসম্পদ আহরণ প্রভৃতি সকল প্রকার প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ প্রক্রিয়াকে কৃষির অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
বাংলাদেশে কৃষিকে তিনটি উপখাতে বিভক্ত করা হয়। যথা,
- ১. শস্য
- ২. বনজ সম্পদ
- ৩. পশু সম্পদ
পূর্বে মৎস্যসম্পদও একটি উপখাত হিসেবে কৃষি খাতের অন্তর্ভুক্ত ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনের (GDP) হিসেবে মৎস্য উপখাতকে একটি পৃথক খাত হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। আধুনিক কৃষির পরিধি ব্যাপক বলা যায়। কারণ বিভিন্ন উপাদান পর্যালোচনা করে আধুনিক কৃষি নিম্নোক্ত তিন ধরনের শিল্পের সাথে জড়িত। যথা,
- ১. খামারভিত্তিক কৃষিপণ্যের জোগান শিল্প,
- ২. প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পসমূহের ও
- ৩.বণ্টন সম্পর্কিত শিল্পসমূহের।
নিম্নের চিত্রে উপর্যুক্ত তিন ধরনের শিল্পের আলোকে আধুনিক কৃষির পরিধি দেখানো হলো,
তিন ধরনের শিল্পের আলোকে আধুনিক কৃষির পরিধি |
পেশা ও মানব সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র। বস্তুত কৃষি শুধুমাত্র একটি বৃত্তি নয়, এটি জীবনধারণের একটি পদ্ধতিও বটে। কৃষি মানবজীবনের এমন একটি ধারা, যা বহু শতাব্দী ধরে কোটি কোটি মানুষের চিন্তা ও আশা আকাঙ্ক্ষাকে মূর্ত করেছে।
পরিশেষে বলা যায় যে, প্রায় আট হাজার বছর আগে কৃষি আবিষ্কৃত হয়। ধারণা করা হয় যে, তুরস্ক ও প্যালেস্টাইন সর্বপ্রথম চাষাবাদ শুরু হয়। পাঁচ হাজার বছর পূর্বেও মিসর মেসোপটেমিয়ায় লোহার লাঙল ব্যবহৃত হতো। চীন ও রোম সাম্রাজ্যে অতি প্রাচীনকালে কৃষির সূত্রপাত হয়।