উফশী প্রযুক্তি কি
উফশী প্রযুক্তি বাংলাদেশের কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। খাদ্য সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে কৃষিপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশে পরিচালিত গবেষণার ফলশ্রুতি হলো উফশী প্রযুক্তি। উফশী প্রযুক্তির আওতায় উচ্চ ফলনশীল বীজ, রাসায়নিক সার ও পানি সেচ সমবায়ে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
উচ্চ ফলনশীল (উফশী) প্রযুক্তি কি
উচ্চ ফলনশীল বা উফশী প্রযুক্তি ব্যবহার করে পৃথিবীর অনেক দেশ কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। উফশী প্রযুক্তি বলতে কৃষিতে আধুনিক, উন্নত কলাকৌশল, উন্নত বীজ ও পর্যাপ্ত পরিমাণ সার ব্যবহারের মাধ্যমে খেতের ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিকে বুঝায়। মোটকথা, উচ্চ ফলনশীল বীজ, গভীরভাবে ভূমি কর্ষণ, আদর্শ চারা রোপণ, পর্যান্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার, ফসলের রোগ প্রতিরোধের জন্য সময়মতো কীটনাশক ওষুধ প্রয়োগ, সেচব্যবস্থার উন্নয়ন, নিচু জমি থেকে পানি নিষ্কাশন ইত্যাদিকে একত্রে উচ্চ ফলনশীল প্রযুক্তি বলা হয়। বিশ্বে খাদ্য সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করলেও সমস্যা সমাধানকল্পে কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন অধিকমাত্রায় বৃদ্ধি করার জন্য উফশী প্রযুক্তির উদ্ভাবন হয়। তবে এ প্রযুক্তির অধীনে চাষাবাদ করতে হলে দেশে কিছু কারিগরি ও প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ সুবিধা থাকা প্রয়োজন। সাধারণ কৃষকদের প্রশিক্ষণ, বিজ্ঞানমনস্কতা, স্বল্প তথা ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের আধুনিক কৃষি উপকরণ সরবরাহ, প্রাতিষ্ঠানিক উৎস থেকে পর্যাপ্ত ঋণ সরবরাহ, সর্বোপরি উৎপাদিত ফসলের সঠিক বাজারজাতকরণ ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী) প্রযুক্তি সঠিকভাবে ব্যবহারের জন্য অপরিহার্য। তবে এখানে উল্লেখযোগ্য নানাপ্রকার কারিগরি ও প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতা বা বাধার কারণে আমাদের দেশে উচ্চ ফলনশীল প্রযুক্তির ব্যবহার আশানুরূপ অগ্রগতি সাধিত হয়নি।
পরিশেষে বলা যায় যে, উফশী প্রযুক্তির সার্বিক প্রভাব বিশ্লেষণ করলে অনুধাবন করা যায় যে কতিপয় ক্ষেত্রে এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ হওয়া বাঞ্ছনীয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রযুক্তির আওতাধীন গভীর ও অগভীর নলকূপ ব্যবহারের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে জমির গুণাগুণ ও মৎস্য উৎপাদন বিঘ্নিত হতে পারে। সুতরাং উফশী প্রযুক্তির প্রতিকূল প্রভাব হ্রাস করতে হলে এর নিয়ন্ত্রিত ও সংশোধিত ব্যবহার কাম্য।