হিসাববিজ্ঞান

হিসাববিজ্ঞানের নীতিমালা আলোচনাসহ ব্যাখ্যা

1 min read

হিসাববিজ্ঞানের নীতিমালা

ব্যবসা স্বত্ত্বা ধারণা ও চলমান প্রতিষ্ঠান ধারণা কিভাবে হিসাবরক্ষণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে তা নিয়ে এই আর্টিকলে আলোচনা করা হবে। সর্বজনস্বীকৃত নীতিমালা বা অনুসারে কারবার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধারণা ও নীতিগুলো নিচে আলোচনা করা হলো।

১. কারবারের স্বত্ত্বা ধারণা

প্রচলিত এ ধারণা অনুসারী কারবার ও তার মালিক পক্ষ দুটি আলাদা স্বত্ত্বা হিসাবে বিবেচিত হবে। মালিক প্রতিষ্ঠানে অর্থ দিলে প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ও দায় বৃদ্ধি পায়।

হিসাব সমীকরণ : Assets = Liabilities + Owners equity

হিসাব সমীকরণ হতে এটা স্পষ্ট যে কারবার প্রতিষ্ঠান একটি নিজস্ব সত্ত্বা হিসাবে এর যাবতীয় সম্পদ অধিকার করেছে, যার জন্য বিভিন্ন মহলের নিকট সে পৃথক স্বত্ত্বা হিসাবে ঋণগ্রস্থ।

২. চলমান প্রতিষ্ঠান ধারণা

একটি প্রতিষ্ঠান অসীম কাল ধরে চলতে থাকবে এমন ধারণার উপর নির্ভর করে জন্মলাভ করে। এ ধারণার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠানের আয় ব্যয়কে মুনাফা ও মূলধন জাতীয় হিসাবে শ্রেণিবিভাগ করা হয়েছে। স্থায়ী সম্পত্তির অবচয় বিয়োগ করে উদ্বৃত্তপত্রে দেখানো হলেও বাজারমূল্য দেখানো হয় না। অগ্রিম খরচের কোনো আদায় মূল্য নেই তবুও তাকে খরচ হিসাবে ধরা হয় না।

৩. অর্থের পরিমাপ যোগ্যতা

এ ধারণা অনুযায়ী লেনদেনকে অর্থের মানদণ্ডের পরিমাপ করা হয়। যেসব কর্মকাও অর্থের দ্বারা পরিমাপযোগ্য নয় তা হিসাববিজ্ঞানের আওতায় পড়ে না। মনে রাখতে হবে সকল লেনদেন অর্থের দ্বারা মূল্যায়ন করতে হবে।

৪. জন্মমূল্য ধারণা

প্রতিষ্ঠানের আর্থিক কর্মকাণ্ড, সম্পত্তি, দ্রব্যসামগ্রী, ক্রয়-বিক্রয় সকল ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের স্বার্থ হিসাবের খাতায় জন্ম মূলো লিপিবদ্ধ করা হয়। এ হিসাব অনুযায়ী স্থায়ী সম্পত্তি নিঃশেষ না হওয়া পর্যন্ত উদ্বৃত্তপত্রে দেখানো হবে।

৫. দ্বৈতস্বত্তা

এ নীতি অনুযায়ী প্রতিটি লেনদেনের দুটি পক্ষ থাকে একটি ডেবিট অন্যটি ক্রেডিট। কিন্তু মনে রাখতে হবে ডেবিট ক্রেডিট উভয় দিবের যোগফল সমান হবে।

৬. হিসাবকাল ধারণা

চলমান ধারণা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের আয়কাল অসীম, কিন্তু হিসাবকাল অসীম হলে চলবে না। হিসাবকালের একটি নির্দিষ্ট সময় থাকতে হবে যেমন : এক মাস, তিন মাস, ছয় মাস, এক বছর ইত্যাদি। উক্ত সময়ের মধ্যে সংগঠিত যাবতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে আর্থিক বিবরণী, উদ্বৃত্তপত্র ইত্যাদি প্রকাশ করতে হবে।

৭. সংযোজন ধারণা

চলত্তি, অগ্রিম, বকেয়াসংক্রান্ত বিষয়গুলো হিসাবভুক্ত করা হয় বলে একে সংযোজন ধারণাও বলে। সংশ্লিষ্ট বছরের প্রকৃত আয় ব্যয় সংযোজন করা হয়। সংশ্লিষ্ট বছর ছাড়া অন্যান্য আয় ব্যয়গুলো বিয়োগ করা হয়।

৮. আদায়করণ নীতি

এ ধারণা অনুযায়ী মুনাফা আদায় করা হলে অথবা আদায়যোগ্য হলে শুধু তখনই প্রকৃত মুনাফা হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে। যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো অর্থ পাওয়া না যাবে বা পাবার মতো আইন অনুযায়ী দাবি সৃষ্টি না করে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো লেনদেন সংগঠিত হয়েছে বলে মনে করা হয় না। প্রতিদানের বিনিময়ে লেনদেন হলে তখন তাতে আদায়করণ ধারণা অনুসারে মুনাফাসংক্রান্ত হিসাবে লেখা হয়।

৯. তহবিল ধারণা

এ ধারণা অনুযায়ী কোনো বিশেষ উভয় হতে প্রাপ্ত অর্থ বা কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে রক্ষিত অর্থ বা সম্পত্তি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করতে হবে। এ নীতি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান বিভিন্নভাবে তহবিল সংগ্রহ প্রতিষ্ঠানকে আরও শক্তিশালী করা হয়।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

x