হিসাববিজ্ঞানের ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের আধুনিক সূত্র বর্ণনা কর
হিসাববিজ্ঞানের ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের আধুনিক সূত্র ব্যাখ্যাসহ বর্ণনা
দুতরফা দাখিলাপদ্ধতি হিসাবরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ডেবিট এবং ক্রেডিট নির্ণয়ের নিয়ম আলোচনা করা হলো।
১. সনাতন পদ্ধতি
হিসাবের শ্রেণিবিভাগের উপর ভিত্তি করে সনাতন পদ্ধতিতে ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয় করা হয়। একে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়-
- (i) ব্যক্তিবাচক হিসাব
- (ii) সম্পত্তিবাচক হিসাব
- (iii) নমিক ও আয় ব্যয়বাচক হিসাব
নিচে এদের বিশ্লেষণ দেয়া হলো।
(i) ব্যক্তিবাচক হিসাব : যেসব লেনদেনের সাথে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম জড়িত থাকে তাকে ব্যক্তিবাচক হিসাব বলে। এতে সুবিধা গ্রহণকারী ডেবিট এবং সুবিধা প্রদানকারীকে ক্রেডিট করা হয়।
(ii) সম্পত্তিবাচক হিসাব : সম্পদ বা সম্পত্তি বিষয়ক লেনদেন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত থাকলে, তাকে সম্পত্তিবাচক হিসাব বলে। এক্ষেত্রে সম্পত্তি বৃদ্ধি পেলে ডেবিট এবং হ্রাস পেলে ক্রেডিট হয়।
(iii) নামিক ও আয় ব্যয়বাচক হিসাব : খরচ ও মুনাফা জাতীয় লেনদেনকে নামীক বা আয় বা ব্যয় হিসাব বলে। খরচ বা ব্যয় বৃদ্ধি পেলে ডেবিট, হ্রাস পেলে ক্রেডিট হবে। আয় বা মুনাফা বৃদ্ধি পেলে ক্রেডিট এবং হ্রাস পেলে ডেবিট হবে।
২. আধুনিক বা সমীকরণ পদ্ধতি
আধুনিক পদ্ধতিতে ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ে সমীকরণ পদ্ধতি অনেক বেশি জনপ্রিয়। এটি সর্বজনস্বীকৃত নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হয়। উক্ত সমীকরণ পদ্ধতিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
(i) মালিকানাস্বত্ব বা আন্তঃমূল্য দায়
(ii) পাওনাদারদের দাবি বা বহিঃদায় সমীকরণ পদ্ধতিকে নিম্নোক্তভাবে বিশ্লেষণ করা যায়।
A = P
বা, A = P + L
বা, A = O.E + L
A = মোট সম্পত্তি
P = মালিকানা স্বত্ব
L = বহির্দায়
OE = মালিকানাস্বত্ব
এ সমীকরণের পাঁচটি উপাদান বিদ্যমান,
- (i) সম্পত্তি
- (ii) পায়
- (iii) মালিকানা স্বত্বঃ
- (iv) আয়
- (v) ব্যয়
নিচে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
(i) সম্পত্তি : সম্পত্তি সাধারণত ডেবিট উদ্বৃত্ত প্রকাশ করে। কোনো কারণে সম্পত্তি বৃদ্ধি পেলে ডেবিট হবে এবং হ্রাস পেলে ক্রেডিট হবে।
(ii) দায় : দায় সাধারণত ক্রেডিট উদ্বৃত্ত প্রকাশ করে। দায় বৃদ্ধি পেলে ক্রেডিট এবং হ্রাস পেলে ডেবিট হবে।
(iii) মালিকানাস্বত্ব : মালিকানাস্বত্ব সাধারণত ক্রেডিট উদ্বৃত্ত প্রকাশ করে। মালিকানা স্বত্ত্ব বৃদ্ধি পেলে ক্রেডিট এবং হ্রাস পেলে ডেবিট হবে।
(iv) আয় : আয় সাধারণত ক্রেডিট উদ্বৃত্ত প্রকাশ করে। আর বৃদ্ধি পেলে ক্রেডিট এবং হ্রাস পেলে ডেটি হবে।
(v) ব্যয় : ব্যয় সাধারণত ডেবিট উদ্বৃত্ত প্রকাশ করে। ব্যয় বৃদ্ধি পেলে ডেবিট এবং হ্রাস পেলে ক্রেডিট হবে।
উপরিউক্ত সনাতন ও আধুনিক পদ্ধতি বিশ্লেষণ করে এক কথায় বলা যায় যে,
- খরচ, ক্ষতি, সম্পত্তি, উত্তোলন বৃদ্ধি পেলে ডেবিট এবং হ্রাস পেলে ক্রেডিট হবে।
- আয়, দায় লাভ, মূলধন বৃদ্ধি পেলে ক্রেডিট এবং হ্রাস পেলে ডেবিট হবে।