ব্যবস্থাপনা একটি সামাজিক প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা কর

সমাজের সকল শ্রেণীর সাথে সম্পর্কযুক্ত বিধায় ব্যবস্থাপনা একটি সামাজিক প্রক্রিয়া হিসেবেও পরিগণিত হয়। মানুষ সামাজিক জীব। তাই পরস্পরের সহযোগিতার উপরই গোটা সমাজের উন্নয়ন নির্ভরশীল। আর মানুষের এ উন্নয়নশীল প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রক্রিয়া হিসেবে কাজ করে।

ব্যবস্থাপনা সামাজিক প্রক্রিয়া কিনা

বিভিন্ন লেখক ও বিশেষজ্ঞ ব্যবসায়ের সামাজিক দায়িত্বকেই ব্যবস্থাপনার সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে অভিহিত করেছেন। ইতালীয় শব্দ ‘Managgiare’ অথবা ফরাসি শব্দ ‘Manger” হতে Management শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে বলে ধরা হয়। এক্ষেত্রে উৎপত্তি অনুসারে Management শব্দের অর্থ দাঁড়ায় অশ্ব পরিচালনা অথবা পরিবার পরিচালনা করা। অশ্বপালকে নিয়ন্ত্রণ করা যথেষ্ট দক্ষতার পরিচায়ক। কালের বিবর্তনে সেই দক্ষতা মানুষের কার্যক্ষমতাকে পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হতে শুরু করে যা থেকে বিভিন্ন সামাজিক উদ্দেশ্য অর্জিত হতে থাকে। ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পৃক্ত সামাজিক পক্ষের বিস্তৃতি বাড়তে থাকে এবং ব্যবস্থাপনার ধীরে ধীরে একটি সামাজিক প্রক্রিয়ায় রূপান্তর হতে থাকে। মালিক, শ্রমিক, ক্রেতা-বিক্রেতা, উদ্যোক্তা, বিভিন্ন সরবরাহকারী সংগঠন তথা রাষ্ট্রের সাথে ব্যবস্থাপনার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠে, যা পরবর্তীতে ব্যাপক সামাজিক কর্মসূচিতে রূপলাভ করে।

ব্যবস্থাপনা একটি প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য একদল মানুষকে প্রশিক্ষিত করে একটি ব্যবস্থাপক সমাজ গড়ে তোলে। যেখানে সংগঠিত কর্ম প্রচেষ্টায় নিজেদের মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠান সমাজের অন্য সকল প্রতিষ্ঠানের মতোই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। ব্যবস্থাপনা ও সমাজের উন্নতি পরস্পর সমমুখী। ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ায় মূল উদ্দেশ্যই থাকে সমাজের বিভিন্ন পক্ষের সুবিধাদির বিবেচনা সাপেক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনে সচেষ্ট হওয়া। তাই ব্যবস্থাপনা কখনই সমাজমুখী হয়ে চলতে পারে না, যা প্রকারান্তরে সামাজিক প্রক্রিয়ারই নামান্তর।

উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বর্তমানকালে ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রক্রিয়া হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। কেবল মুনাফা অর্জনই নয়, বরং সমাজের সকল পক্ষের উন্নতি সাধনও ব্যবস্থাপনার অন্যতম লক্ষ্য।