যোগান শব্দটি অর্থনীতিতে সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত যোগান বলতে কোন দ্রব্য বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বাজারে নিয়ে যাওয়াকে বুঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে যোগান শব্দটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়।
যোগান কি
কোন একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট দামে একজন বিক্রেতা বা উৎপাদনকারী একটি দ্রব্যের কি পরিমাণ বিক্রয় করতে প্রস্তুত থাকে তাকে যোগান বলে। উৎপাদনকারী মোট উৎপাদন থেকে কতটুকু বিক্রয় করবে তা নির্ভর করে তার নগদ অর্থের প্রয়োজনীয়তা, ভবিষ্যৎ দামের প্রত্যাশা, দ্রব্যের পচনশীলতা, গুদামজাতকরণের খরচ, সরকারি নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক ধ্যানধারণা ইত্যাদি বিষয়ের উপর। উৎপাদনকারী যা উৎপাদন করে তার সবটুকু যোগান নাও হতে পারে। উৎপাদনকারী তার মোট মজুত বিক্রয় করতেও পারে আবার নাও করতে পারে। তাই মজুতই যোগান নয়। একজন উৎপাদনকারী নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট দামে মোট মজুত থেকে যতটুকু বিক্রয় করতে রাজি থাকে তাই যোগান। মূল্য ও যোগানের সম্পর্ক সাধারণত প্রত্যক্ষ হয়। এ সম্পর্ক সমীকরণের সাহায্যে প্রকাশ করলে তাকে যোগান অপেক্ষক বলে। দাম ও যোগানের সম্পর্ককে আমরা নিম্নোক্তভাবে প্রকাশ করতে পারি। যথা,
Sx = f(Px, Ps, Pc, Pr, N, T, S)
যেখানে, Sx = x দ্রব্যের যোগান; Ps = x দ্রব্যের পরিবর্তক দ্রব্য S এর মূল্য; Pc = x এর পরিপূরক দ্রব্য C এর মূল্য; Py = উপকরণের মূল্য; N = প্রাকৃতিক উপাদানসমূহ; T = পণ্যের উপর আরোপিত কর; S = পণ্যের উৎপাদনে প্রদত্ত ভরতুকি।
অপরাপর বিষয় স্থির থাকলে যোগানকে দামের অপেক্ষক হিসেবে প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ,
Sx = g(Px )
এ সমীকরণকে যোগান অপেক্ষক বলে। এ যোগান অপেক্ষক দ্বারা প্রকাশ পায় যে, স্বাভাবিক অবস্থায় দ্রব্যের দাম বাড়লে তার যোগান বাড়ে এবং দাম কমলে যোগান কমে। যোগানসূচি ও যোগানরেখার মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করার পূর্বে আমাদের প্রথমে যোগানসূচি ও যোগানরেখার সম্পর্কে জানা দরকার।