মহানগর প্রভাতি ট্রেনের সময়সূচী: বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত করলেন গুলোর মধ্যে একটি মহানগর প্রভাতী বা গোধুলী এক্সপ্রেস ।ট্রেন নং 703 বা 704 । এটি একটি আন্তঃনগর যাত্রীবাহী ট্রেন । এটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের মধ্যে নিয়মিত চলাচল করে থাকেন। গোধূলি ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাত্রাকালে মহানগর গোধুলী নামে এবং ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাত্রাকালে মহানগর প্রভাতী নামে চলাচল করেন। 1986 সালের ট্রেনটি প্রথম উদ্বোধন করা হয় এবং এই ট্রেন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম টু ঢাকা রুটে নিয়মিত চলাচল করেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী সকল মানুষের জন্য এটি একটি আরামদায়ক ও নিরাপদ ট্রেন। গোধূলি ট্রেন এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ নিরাপদ ও নিশ্চিন্তে চলাচল করে থাকেন।
তাই আজ আমরা মহানগর প্রভাতী বা গোধুলী এক্সপ্রেস ট্রেনটির ভাড়ার তালিকা, সময়সূচী, বিরোধী স্থান, সাপ্তাহিক ছুটির দিন, টিকিট কাটার স্থান সহ বিস্তারিত তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করব যাতে আপনারা খুব সহজেই সময়সূচী ও ভাড়া তালিকা সহ বিস্তারিত জানতে পারেন এবং নিরাপদে নির্দিষ্ট সময়মতো যাতায়াত করতে পারেন। মহানগর প্রভাতি ট্রেনের সময়সূচী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
মহানগর প্রভাতি ট্রেনের সময়সূচী
বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ও নির্ধারিত মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন এর সময়সূচী গত 2020 সালের 10 ই জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। এই ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বিকাল 3 টায় ছাড়েন এবং পৌঁছান 21:15। অপরদিকে কমলাপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছাড়ে সাড়ে 7 টা 45 মিনিটে এবং পৌঁছায় 14:50। মহানগর প্রভাতি/গোধুলী এক্সপ্রেস
ট্রেন নাম্বার | উৎস স্থান | ছাড়ার সময় | পৌঁছানোর স্থান | পৌঁছানোর সময় | সাপ্তাহিক ছুটি
|
৭০৩ | চট্টগ্রাম | ১৫:০০ | কমলাপুর | ২১:১৫ | নেই |
৭০৪ | কমলাপুর | ০৭:৪৫ | চট্টগ্রাম | ১৪:৫০ |
মহানগর প্রভাতী ট্রেনের টিকিটের মূল্য
মহানগর প্রভাতী ট্রেনের অনেক কয়েকটি আসন সংখ্যা রয়েছে এবং প্রতিটি আসনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন মূল্য রয়েছে। আপনারা আপনাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আসন নির্বাচন করে টিকিট ক্রয় করতে পারবেন। নিচে থেকে প্রতিটি আসনের নাম এবং ভাড়ার তালিকা আপনারা জানতে পারবেন।
- বার্থ এসি ৭৫৬ টাকা (প্রতি আসন)
- বার্থ প্রথম শ্রেণী ৪৫৫ টাকা (প্রতি আসন)
- স্নিগ্ধা ২য় শ্রেণী ৩৪৫ টাকা (প্রতি আসন)
- শোভন চেয়ার ২য় শ্রেণী ১৫০ টাকা (প্রতি আসন)
- শোভন ২য় শ্রেণী ১২৫ টাকা (প্রতি আসন)
- তিন থেকে বার বছরের বাচ্চাদের জন্য অপ্রাপ্ত বয়স্ক টিকিট ক্রয় করা বাধ্যতামূলক।
গোধূলি এক্সপ্রেস ট্রেনটির একটু সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
এই মহানগর প্রভাতি এক্সপ্রেস ট্রেনটির সংক্ষিপ্ত বিবরণ আমরা নিচে তুলে ধরা ধরছি যা থেকে আপনারা সহজেই ট্রেনটির সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা পেতে পারবেন।
- পরিষেবা ধরন: আন্তঃনগর
- প্রথম পরিষেবা: ১৯৮৬; ৩৬ বছর আগে
- বর্তমান পরিচালক: বাংলাদেশ রেলওয়ে
- যাত্রাপথ শুরু: চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন
- বিরতি: ৮টি
- শেষ: কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন
- ভ্রমণ দূরত্ব: ৩৪৬ কিলোমিটার (২১৫ মাইল)
- যাত্রার গড় সময়: ৬ ঘণ্টা ৪০ মিনিট
- পরিষেবার হার: দৈনিক
- রেল নং: ৭০৩/৭০৪
- ব্যবহৃত লাইন: আখাউড়া-লাকসাম-চট্টগ্রাম টঙ্গী-ভৈরব-আখাউড়া
- যাত্রাপথের সেবা শ্রেণী
- আসন বিন্যাস: আছে
- ঘুমানোর ব্যবস্থা: আছে
- ২টি শোভন চেয়ার+খাবার গাড়ী+গার্ডব্রেক
- ট্র্যাক গেজ: ১,০০০ মিলিমিটার (৩ ফুট ৩ ৩⁄৮ ইঞ্চি)
- পরিচালন গতি; ৭৬ কিমি/ঘণ্টা
- ট্র্যাকের মালিক: বাংলাদেশ রেলওয়ে রক্ষণাবেক্ষণ চট্টগ্রাম
মহানগর প্রভাতী ট্রেনের যোগাযোগ নাম্বার ও ঠিকানা
এই ট্রেনটির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য নিচে যে ঠিকানা গুলো রয়েছে মোবাইল অথবা ফোন নাম্বারে অথবা ওয়েবসাইট নাম্বারে যোগাযোগ করতে চাইলে নিচের নাম্বারগুলোতে যোগাযোগ করতে পারবেন.
কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন
- ফোন নম্বর: +৮৮-০২-৯৩৫৮৬৩৪,৮৩১৫৮৫৭, ৯৩৩১৮২২
- মোবাইল নম্বর: +৮৮-০১৭১১৬৯১৬১২
- বিমানবন্দর রেলওয়ে ষ্টেশন ফোন নম্বর: +৮৮-০২-৮৯২৪২৩৯
- ওয়েবসাইট: railway.gov.bd
মহানগর প্রভাতী ট্রেনের বিরতি স্থান
এই ট্রেনটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী কিছু স্থানে বিরোধী নিয়ে থাকেন এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম যদি জানতে চান তাহলে নিচের স্থানগুলি বিরতি স্থান। নিচে থেকে বিরতি স্থান গুলো দেখে নিতে পারেন.
- ফেনী জংশন
- গুণবতী
- লাকসাম জংশন
- কুমিল্লা
- আখাউড়া জংশন
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া
- ভৈরব বাজার জংশন
- ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন
খাওয়ার ব্যবস্থা
নাম | মূল্য |
চিকেন বার্গার (১পিস) | ৩৫/- |
বীফ বার্গার (১পিস) | ৩০/- |
মাটন বার্গার (১পিস) | ২০/- |
প্লেন কেক (১পিস) | ১২/- |
চিকেন স্যান্ডউইচ (১পিস) | ১৫/- |
চিকেন পেটিস (১পিস) | ১৫/- |
ভেজিটেবল পেটিস (১পিস) | ২০/- |
চিকেন রোল (১পিস) | ২০/- |
মাটন রোল (১পিস) | ২০/- |
ভেজিটেবল রোল (১পিস) | ১২/- |
পাউরুটি (জেম, জেমি বাটার ছাড়া) | ৪/- |
পাউরুটি (জেম, জেলিসহ) | ৫/- |
চা (প্রতি কাপ) | ৬/- |
কফি (প্রতি কাপ) | ১২/- |
ওভালটিন (প্রতি কাপ) | ১০/- |
চিকেন কাটলেট (১২৫ গ্রাম) প্রতিটি | ২০/- |
মাটন কাটলেট (১২৫ গ্রাম) প্রতিটি | ২০/- |
সিদ্ধ ডিম | ১০/- |
ফ্রাইড চিকেন দেশী (১২৫ গ্রাম ১/৪ অংশ) | ৩০/- |
ফ্রাইড চিকেন ফার্ম ১/৮ গ্রাম | ২৫/- |
ফ্রেঞ্চ ঝাল টোস্ট (১ পিস) | ১০/- |
চিকেন ভুনা (১২৫ গ্রাম) | ৩৫/- |
সামী কাবাব | ১০/- |
সিঙ্গারা (১০০ গ্রাম) | ৫/- |
সমুচা (১০০ গ্রাম) | ৬/- |
সফট ড্রিংকস/মিনারেল ওয়াটার | বাজারদর |
চিপস, চকলেট, দৈনিক পত্রিকা, ম্যাগাজিন | বাজারদর |
কুলি চার্জ
লাগেজের পরিমাণ | চার্জ (টাকা) |
অনধিক ২৮ কেজি (১টি ব্যাগ) | ১৫/- |
অনধিক ২৮ কেজি (২টি ব্যাগ) | ২০/- |
অনধিক ৩৭ কেজি (১টি ব্যাগ) | ২০/- |
অনধিক ৩৭ কেজি (২টি ব্যাগ) | ২৫/- |
অনধিক ৫৬ কেজি (১টি ব্যাগ) | ৩০/- |
অনধিক ৫৬ কেজি (২টি ব্যাগ) | ৬৫/- |
ট্রলি যাত্রী দ্বারা ব্যবহৃত | ১৫/- |
ট্রলি কুলি দ্বারা ব্যবহৃত | ২০/- |
হুইল চেয়ার যাত্রী দ্বারা ব্যবহৃত | ১০/- |
হুইল চেয়ার কুলি দ্বারা ব্যবহৃত | ২০/- |
ট্রেনের টিকিট কাটার স্থান
আন্তঃনগর এই গোধূলি ট্রেনটির ট্রেনের টিকিট যেখান থেকে পাওয়া যাবে তার একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিম্নে তুলে ধরা হলো:
- দেশের সকল টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কাটা যাবে
- টেনের ওয়েবসাইট থেকে টিকিট কাটা যাবে (www.esheba.cnsbd.com)
- *১৩১# নম্বরে ডায়াল করে এসএমএস এর মাধ্যমে টিকিট বুক করা যাবে ।
- টিকিটের জন্য কনফার্মেশন একটি মেসেজ পাঠানো হবে, তা যাত্রা ন্যূনতম আধাঘন্টা আগে, সংশ্লিষ্ট রেলস্টেশনের কাউন্টার থেকে টিকিট এর প্রিন্ট করতে হবে
- তবে যাত্রা দশদিন পূর্ব থেকে অগ্রিম টিকিট পাওয়া যাচ্ছে দেশের যেকোন কম্পিউটারাইজড টিকিট কাউন্টারে এবং ওয়েবসাইটে.
ট্রেনের বগি সংখ্যা
মহানগর প্রভাতি/গোধুলী এক্সপ্রেস, আজ আমরা এই নিবন্ধে আপনাদের সাথে আলোচনা করব এই ট্রেনের মোট বগি সংখ্যা এবং কি কি বগি রয়েছে.
- গোধূলি ট্রেনটিতে মোট বগি রয়েছে ১৬টি।
- একটি খাবার বগি রয়েছে
- একটি পাওয়ার কার বগি রয়েছে
- ট্রেনটিতে খাবারের বগির মধ্যে নামাজের জন্য আলাদা জায়গা বরাদ্দ রয়েছে
- এবং ট্রেনের মাঝামাঝি জায়গায় খাবারের বগিটি রয়েছে
অন্যান্য সুবিধাদি
- আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে নামাজের জন্য ও ব্যবস্থা আছে।
- এছাড়াও প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে ।
- কর্তব্যরত গার্ডের কাছে প্রত্যেক বগিতে একজন করে গাইড থাকার ব্যবস্থা আছে।
- এছাড়াও তারা যাত্রীদের সেবা, প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও ট্রেনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সার্বিক দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
- যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে জানালার পাশে এ্যালুমিনিয়ামের শাটার। ট্রেনে ভ্রমণকালে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। যেমন – ট্রেনের দরজা-জানালায় না বসা, ট্রেনের ছাদে না ওঠা, ইঞ্জিনে না চড়া। ঘনবসতি বা বস্তি এলাকাতে ট্রেন চলার সময় জানালার শাটার লাগিয়ে দেয়া।
- এসি কেবিন ছাড়া শোভন বগিতে স্ট্যান্ডিং টিকেট কাটার সুবিধা রয়েছে।
- মোট বরাদ্দকৃত টিকেট বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর স্ট্যান্ডিং টিকেট দেয়া হয়।
- স্ট্যান্ডিং টিকিটের মূল্য সিটিং টিকেটের সমান এবং সাথে সাধারণ টিকেটের মতই পণ্য নেয়া যায়।
মালামাল পরিবহন
- মালামাল পরিবহন ক্ষেত্রে একজন শীতাতপ/ এসি বগির যাত্রী ৫৬ কেজি ওজনের মাল পরিবহন করতে হবে। ঠিক এমন ভাবেই প্রথম শ্রেণীর যাত্রী ৩৭.৫ কেজি, শোভন শ্রেণীর যাত্রী ২৮ কেজি এবং সুলভ ২য় শ্রেণীর যাত্রীরা ২৩ কেজি পর্যন্ত তাদের মালামাল বিনা ভাড়ায় সাথে নিয়ে যেতে পারবেন।
- যদি কোনো যাত্রীর অতিরিক্ত মালামাল নিয়ে যেতে চান তাহলে মাশুল পরিশোধ করে তা লাগেজ হিসেবে তার নিজ গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারেন। বড় স্টেশনগুলোতে লাগেজ বুকিংয়ের জন্য আলাদা করে কাউন্টার রয়েছে। এছাড়াও লাগেজ বহনের জন্য ট্রলির ব্যবস্থা করা আছে।
- এমনকি অসুস্থ ব্যাক্তিদের বহনের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা ও গোধূলি ট্রেনে আছে।
পরিশেষে ,, বলতে চাই সম্মানিত ভিজিটর বন্ধুরা আপনাদের যদি আমাদের এই নিবন্ধ ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের আজকের পোস্টটি শেয়ার করে অন্যদের দেখার সুযোগ করে দিন। আমরা আরো ভালো ভালো পোস্ট করার চেষ্টা করবো যাতে আপনারা উপকৃত হন।