এটিএম বুথে জাল নোট পেলে করণীয়: সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা সকলে জানেন জাল নোট বা নকল টাকা কোনো কাজে তো আসেই না, উলটো এই টাকা ব্যবহারের ফলে আপনারা বিপদে পড়তে পারেন। অর্থাৎ জাল নোট নিজের কাছে রাখা এবং ব্যবহার বিপদে পড়ার অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। কারো সাথে নোট আদান-প্রদান এর সময় হয়ত দেখেশুনে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে, কিন্তু আপনারা যদি এটিএম বুথ থেকে নকল নোট পান তাহলে কি করবেন?
বন্ধুরা যদিও ব্যাংকগুলো অত্যন্ত সতর্কভাবে এটিএম বুথে টাকা সরবরাহ করে, তাই এটিএম বুথ থেকে জাল নোট পাওয়ার ঘটনা হয়ত আপনাদের সাথে ঘটেনি। তবে মানুষ মাত্রই ভুল হতে পারে। তাই এটিএম বুথেও দুয়েকটি জাল নোট চলে আসার সম্ভাবনা একেবারে শূন্যও হবে সেটা বলা যায়না। মেশিন থেকে যদি নকল নোট বের হয়, সেক্ষেত্রে আপনাদের করণীয় কি? এই পোস্টে আপনারা জানবেন এটিএম বুথে জাল নোট পেলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
এটিএম বুথে জাল নোট পেলে করণীয়
এটিএম বুথে জাল নোট পেলে করণীয় সম্পর্কে জানার আগে আপনাদের আগে জানতে হবে কিভাবে জাল নোট চিনবেন সে সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক। সাধারণত ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার জাল নোট অধিক দেখা যায়। জাল নোট চেনার কিছু সাধারণ উপায় নিচে দেওয়া হলো।
- প্রথমত ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার সকল নোটে বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগোসহ নিরাপত্তা সুতা থাকে। তাই নোট একপাশ করে ধরলে আপনারা নিরাপত্তা সুতার লোগো দেখতে পাবেন। এই নিরাপত্তা সুতা নোট থেকে থেকে উঠানো যায়না ও অনেক মজবুত। জালনোটের ক্ষেত্রে এই সুতা নখের আঁচড়ের মত সামান্য বল প্রয়োগ করলে তা উঠে যাবে।
- এছাড়াও আরও লক্ষ করলে দেখবেন১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের ডানদিকের কর্নারে টাকার মূল্য ইংরেজিতে লেখা থাকে যার রঙ আবার পরিবর্তন হয়। ১০০ ও ১০০০টাকার নোটে নড়াচড়া করলেবুক্ত লেখা সোনালী থেকে সবুজ কালারে পরিণত হয়, অন্যদিকে আবার ৫০০টাকার নোট লালচে থেকে সবুজ কালারে পরিবর্তিত হয়। জালনোট এর ক্ষেত্রে এই ধরনের কালার পরিবর্তন দেখা যায়না।
- ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের সামনে ও পেছন দিকে উঁচুনিচু খসখসে ধরনের অনুভূত হয়। জালনোটের ক্ষেত্রে এসব বৈশিষ্ট্য একেবারেই অনুপস্থিত থাকে।
উল্লেখিত উপায়সমূহ ছাড়াও আপনারা আতশি কাঁচ কিংবা জালনোট সনাক্তকারী মেশিন দ্বারা যেকোনো ধরনের নোট জাল কিনা তা সহজে পরীক্ষা করে নিতে পারেন। উপরে উল্লেখকৃত নিয়ম ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে আপনারা সকল নোটের জন্য আসল নোট চেনার উপায় জানতে পারবেন। এবার জেনে নেওয়া যাক এটিএম বুথে জাল নোট পেলে করণীয় সম্পর্কে।
এটিএম বুথে জাল নোট পেলে কি করা উচিত?
বন্ধুরা এখন চলুন আলোচনা করি এটিএম বুথে জাল বা নকল টাকা পেলে কী করা উচিৎ সে সম্পর্কে।
ATM বুথের ক্যামেরার সামনে টাকাটা ধরুন
পাঠক বন্ধুরা এটিএম বুথের মধ্যে থাকাকালীন আপনাদের চেক করা উচিত যে নোটগুলো ঠিক আছে কিনা। তখন যদি দেখেন কোনো নোট জাল, তখন এটিএমের ভেতরে যে সিসি ক্যামেরা আছে সেই ক্যামেরার সামনে নোটটি ভালভাবে প্রদর্শন করবেন। এভাবে নোটটির উভয় পাশ ক্যামেরার সামনে ধরতে হবে যাতে ক্যামেরায় সেটির ছবি ভালভাবে উঠে।
গার্ডকে অবহিত করতে হবে
এটিএম বুথে জাল নোট পেলে সিসি ক্যামেরায় ছবি উঠানোর পর আপনাদের উক্ত বুথ এর গার্ডকে জাল নোট পাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে জানাতে হবে। গার্ড তার নোটবুকে আপনাদের জালনোট পাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে সকল প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিবে। সঠিক তথ্য প্রদান করতে গার্ডকে সহযোগিতা করতে হবে।
জাল নোট পাওয়ার বিষয়টি এটিএম বুথে থাকা ক্যামেরার মাধ্যমে নিশ্চিত করার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে, তাই এটিএম থেকে পাওয়া জালনোট বুথে থাকা ক্যামেরার সামনে ধরতে পারেন গার্ড। অর্থাৎ এই কাজটি গার্ড পুনরায় করতে পারেন। আপনারা ও তাকে এটি পুনরার করার কথা মনে করিয়ে দিতে পারেন যাতে বিষয়টি সঠিকভাবে করা নিশ্চিত হয়।
ব্যাংককে জানান
যে ব্যাংকের বুথে জাল নোট পেয়েছেন সে ব্যাংকের নিকটস্থ শাখায় ব্যাপারটি জানাতে হবে। কোন বুথে নকল টাকা পেয়েছেন সে সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সকল তথ্যের বিস্তারিত ব্যাংকে জানান। এবার আপনাদের অভিযোগের বিষয়টি যাচাই করে আপনাদেরকে সহযোগিতা করবে ব্যাংক।
থানায় অভিযোগ জানাতে হবে
অভিযোগ জানানোর জন্য এটিএম বুথের আশেপাশে থাকা নিকটবর্তী থানায় যেতে হবে। থানায় গিয়ে কোন বুথে নকল টাকা পেয়েছেন তা নিয়ে অভিযোগ জানান। যদি অনেক বড় এমাউন্টের টাকা আপনাদের হাতে নকল নোট হিসেবে চলে আসে সেক্ষেত্রে আসল টাকা উদ্ধার করতে না পারলে আপনাদের আর্থিক ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই আইন শৃংখলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের সাহায্য নিন।
এভাবে এটিএম বুথ থেকে জাল নোট পেলে তা সম্পর্কে সঠিকভাবে অভিযোগ জানিয়ে আসল নোট পেতে পারেন।