মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা

মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আজ আমরা আপনাদের সাথে মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা সম্পর্কে আলোচনা করব। কেন না এই মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রচনা। আপনাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রচনা প্রতিযোগিতা মূলক একটি রচনা আসে আর সেটা যদি হয় মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা নিজের মতো করে লিখ। তাহলে আপনার বিজয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বেশি।

কেননা আমাদের এই আর্টিকেলটি শুধু আপনাদের ধারণা নেওয়ার জন্য এই মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা উত্তর দিয়েছে। বিশেষভাবে আপনাদের অনুরোধ করা যাচ্ছে যে আপনার এই উত্তর হুবহু লিখবেন না আমাদের নিজের মতো করে লিখবেন।

ভূমিকা:

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ 1971 সালের 26 মার্চ শুরু হয়েছিল কিন্তু বাঙালির স্বাধীনতার সংগ্রাম যুগ যুগ ধরে চলে এসেছিল। অবশেষে দীর্ঘ 9 মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে 30 লক্ষ শহীদের রক্ত অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এর সমাপ্তি ঘটে 1971 সালের 16 ই ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের মাধ্যমে। এদিন  পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস একদিকে যেমন করুন, শোকাহত, অন্যদিকে ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত ও বীরত্বপূর্ণ।

 মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট:

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক পটভূমি। 1957 সালের 23 জুন ষড়যন্ত্রমূলক যুদ্ধে পলাশীর প্রান্তর বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজিত হন ইংরেজদের কাছে। সেখান থেকেই বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়। বাঙালির জাতী চলে আসে ইংরেজদের শাসনাধীনে। 200 বছর রাজত্ব চালায়। বিজাতীয় শাসন, শোষণ, বঞ্চনা আর  নিপীড়নের যাঁতাকলে বাঙালি জাতি নিষ্পেষিত হয়েছে। মনের লালিত স্বাধীন স্বাধীনতার ঝুলি- লুণ্ঠিত স্বপ্নসাধ থেকে বিভিন্ন সময়ে দেশের মানুষের মনে এর জন্ম।

পূর্ব-পশ্চিম:

পাকিস্তানি তাদের ধর্মের কারণে ঐক্যবদ্ধ ছিল ইসলাম। পশ্চিম পাকিস্তান 97  ভাগ মুসলমান এবং পূর্ব  পাকিস্তানে ছিল 85  ভাগ মুসলমান। যাইহোক,বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ  ছিল

যা পূর্ব পাকিস্তান এর জনগণকে তাদের পক্ষে লড়াই করতে বাধ্য করেছিল স্বাধীনতা অর্জনে। পশ্চিম পাকিস্তানের প্রদেশ ছিল: পাঞ্জাব, সিন্ধু, বেলুচিস্তান, এবং উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত। পূর্ব পাকিস্তান পঞ্চম প্রদেশ ছিল। প্রদেশ গুলির উপর নিয়ন্ত্রণ থাকা অবস্থায়, পশ্চিমের চেয়ে বেশি সম্পদ ব্যবহার করছে পূর্ব পাকিস্তান।

স্বাধীনতা আন্দোলন:

পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ 1948 সালে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই মূলত স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ বপন করা হয়। রাষ্ট্রভাষা করার জন্য সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। হাজার  1952 সালে পুনরায় উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা দিলে ছাত্র-জনতা পুনরায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।

হাজার  1952 সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। এ আন্দোলন স্তিমিত করার জন্য গুলি চালানো হয়। শহীদ সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত প্রমুখ সহ অনেক। 1954 সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগ ভরাডুবি এবং যুক্তফ্রন্টের অভূতপূর্ব পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতার ভিতর করে  নড়বড় করে দেয়।

ভরাডুবি এবং  যুক্তফ্রন্টের অভূতপূর্ব  বিজয় লাভ পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতার  ওকে  নড়বড় করে দেয়। 1965 সালে মৌলিক গণতন্ত্রের নামে প্রহসনের নির্বাচন দিয়ে এদেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার হরণ করে নেয়। এখান থেকে থেকেই স্বাধীকার আদায়ের আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে।

বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে 1966 সালে ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি উত্থাপন হয়। মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা 1968 সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা সাজিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে কারাগারে আটক করা হয়। কিন্তু গণআন্দোলনের মুখে তাকে আটকে রাখা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। 1966 সালে শেখমুজিবুর রহমান সহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাকে ছেড়ে দেয়া হয়। হাজার 970 সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সেরাতে তদন্ত সামরিক একনায়ক জেনারেল ইয়াহিয়া খান পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে লেলিয়ে দেয় নিরীহ বাঙালি জনগণের ওপর। রাতের আধারে নির্মম ও বর্বর গণহত্যা। সেরাতে গ্রেফতারের আগে অর্থাৎ 26 শে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। চট্টগ্রামের কালুরঘাটে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করা হয়। গোটা বাংলাদেশ জুড়ে স্বাধীনতার জন্য স্নাতকোত্তর অভ্যুত্থান ঘটে।

মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের সরকারের রাষ্ট্রপতি করা হয়। তার অবর্তমানে উপ রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা তাজউদ্দীন পালন করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব। মুক্তিযুদ্ধে মোহন সেনাপতি হল কর্নেল আতাউল গনি ওসমানী। এ সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মুক্তি সংগ্রাম।

 মুক্তিবাহিনী গঠন:

স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর নেতৃত্বে বাংলাদেশকে 11 টি সেক্টরে ভাগ করা এদেশের অগণিত ছাত্র-জনতা, পুলিশ, লিপ ইয়ার, স্বাধীনতা সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রামকে বেগবান করা মুক্তিযুদ্ধ সেনাপতি জেনারেল ওসমানী ওসমানীর নেতৃত্বে বাংলাদেশকে 11 টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। এ দেশের অগণিত ছাত্র-জনতা পুলিশ ইপিআর আনসার ও সামরিক বেসামরিক লোকদের সমন্বয়ে মুক্তিবাহিনী গঠন করা হয়।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে দেশকে মুক্ত রাখার লক্ষ্যে তারা যুদ্ধকৌশল অস্ত্রচালনা এবং বিস্ফোরক ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। যতই দিন যেতে  থাকে ততই  সু সংঘটিত হয় মুক্তিবাহিনী। মুক্তিবাহিনী গেরিলাযুদ্ধের  নীতি অবলম্বন করে। বিপর্যস্ত করে শত্রুদের।বিশাল শত্রুবাহিনী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ও প্রশিক্ষণ নিয়েও মুক্তিবাহিনীর মোকাবেলায় সক্ষম হয়েছিল।

 ভারতের সহযোগিতা ও স্বীকৃতি প্রদান:

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামে প্রতিবেশী ভারত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। ভারত ভারত-বাংলাদেশের শরণার্থী আশ্রয়, বিভিন্ন অস্ত্র, সেনাবাহিনী ও কূটনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামকে অনেক দূরে এগিয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা যুদ্ধে পরাজয় অবশ্য বুঝতে পেরে পাকিস্তানের যুদ্ধ কে পাক-ভারত যুদ্ধ আখ্যায়িত করে আন্তর্জাতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা চালায়। কিন্তু সোভিয়েত রাশিয়া ভেটো প্রয়োগ করায় জাতীয় সংঘ যুদ্ধ থামানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়।   6 ডিসেম্বর পাকিস্তান বিমান হামলা ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেন।

 চূড়ান্ত বিজয়:

ভারতীয় সেনাবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর সম্মিলিত সংগ্রাম এর 16 ই ডিসেম্বর বিকেল চারটায় 31 মিনিটে ঢাকার ঐতিহাসিকরেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান নিয়োজিতরা 90000 সৈন্যসহ বাংলাদেশের মুক্তি বাহিনী এবং ভারতীয় মিত্রবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে। বাংলাদেশের পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা এবং পাকিস্তানের পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন। ফলে দীর্ঘ 9 মাসের সংগ্রামের অবসান ঘটে এবং বিশ্বের মানচিত্রে লাল-সবুজ পতাকার স্বাধীন সার্বভৌম।

 উপসংহার:

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে মিশে আছে এদেশের ছাত্র,, শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী তথা আপামর জনতার রক্তিম স্মৃতি। লাখো শহীদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশে। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে আমাদের দেশ গঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে। তাদের স্মৃতিচারণা করে দেশাত্মবোধ এ জেগে উঠতে হবে। তবে মুক্তিযুদ্ধের সার্থকতা প্রতিফলিত হবে।

পরিশেষে বলা যায় যে আপনারা যদি মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়বেন। যদি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিযোগিতামূলক রচনায় এই মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা আসে নিজের ভাষায় লেখার জন্য তাহলে অবশ্যই আপনারা আমাদের আর্টিকেলটি পড়বেন এবং নিজের ভাষায় লেখার চেষ্টা করবেন।