শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কী করবেন, শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়, শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য বা কন্সটিপেশন দূর করার ঘরোয়া উপায়

শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়

শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য বা কন্সটিপেশন দূর করার ঘরোয়া উপায়

আসসালামু আলাইকুম আজকে আলোচনা করব শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য বা কন্সটিপেশন দূর করার ঘরোয়া উপায় । বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য এটা আসলে মারাত্মক একটি রোগ এ রোগ নিয়ে অনেক চিন্তিত এবং অনেক ভুগে থাকেন তাই শিশু বাচ্চাদের শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য বা কন্সটিপেশন দূর করার ঘরোয়া উপায় এ সম্পর্কে আলোচনা করুন। বাচ্চাদের  এই শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য বা কন্সটিপেশন দূর করার ঘরোয়া উপায় সমস্যা যদি হয়ে থাকে তাহলে বাবা মা অনেক দুশ্চিন্তা করে থাকেন । বাচ্চা বলে কথা তাই তোর চিন্তা হতে পারে এটাই স্বাভাবিক।

কেননা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে শিশুর খাবার রুটিন থেকে শেষের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্লান্তি ইত্যাদি এসকল বিষয় নিয়ে তাদের খুব বিরক্তকর মনে হয় এবং তারা প্রচুর পরিমাণে কান্নাকাটি করে থাকে এবং মা-বাবাকে তারা অনেক পরিমাণে বিরক্ত করে থাকেন যা তাদের এই রোগ  শরীরের জন্য খুবই মারাত্মক তাই কিভাবে মুক্তি পাবেন কিভাবে দূর করা যায় সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করো।

শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য বা কন্সটিপেশন দূর করার ঘরোয়া উপায়এই সমস্যা সাধারণত তিন বছর থেকে 5 বছর বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে বেশি দেখা দেয়। কিন্তু ছোট বড় এবং সবারই হতে পারে এই সমস্যা তাই একটু সর্তকতা অবলম্বন করে থাকলে এই সমস্যা থেকে দূরে থাকা যাবে।

মায়ের  বুকের দুধের পাশাপাশি  সলিড খাবার দেওয়ার টেস্ট হয় ঠিক তখনই এই সমস্যাটি বেশি দেখা দেয় বা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার অনেকেই ভেবে নেয় যে যে বাচ্চাগুলো মায়ের বুকের দুধ পান করে সে বাচ্চাদের এই সমস্যাগুলো হতে পারে কিন্তু না এটা সব বয়সী লোকেদের হতে পারে সবথেকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয় 5 থেকে 10 বছর অল্প বয়সের বাচ্চাদের।

চলুন জেনে নেই শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য বা কন্সটিপেশন দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার লক্ষণ গুলো কি কিঃ

কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ গুলো বাচ্চাদের হয়ে থাকে তাই বাবা-মায়ের খুবই সর্তকতা অবলম্বন করে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার লক্ষণ গুলো জেনে রাখতে হবে  কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার লক্ষণ গুলো কি কি সেগুলো জেনে নিন।

  • বমি হওয়া বা বমি বমি ভাব
  • পেট ফুলে যাওয়া ও পেট শক্ত হওয়া
  •  অনিয়মিত মলত্যাগ
  • মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া
  • হঠাৎ হঠাৎ করে পেটে ব্যাথা হওয়া
  • পটি করার সময় অতিরিক্ত প্রেসার দেওয়া এবং কান্নাকাটি করা

 

বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে করণীয় গুলো কি কি জেনে নিনঃ

  • অধিক পরিমাণে পানি পান করা
  •  হালকা ব্যায়াম ও শারীরিক কার্যক্রম
  •  কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করা
  •  ফলের রস খাওয়ানো
  • আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া
  •  পেট মেসেজ করা
  •  নিয়মিত মলত্যাগের অভ্যাস করানো
  • খাদ্যাভাস পরিবর্তন
  • জাঙ্ক ফুড এবং বেশি পরিমাণে মাংস জাতীয় খাবার না খাওয়ানো

 

 শারীরিক কার্যক্রম ও হালকা ব্যায়ামঃ

সার্বিক কার্যক্রম বাচ্চার পরিপাক ক্রিয়া কে গতিশীল করতে সাহায্য করে। শারীরিক কার্যক্রমের অংশগ্রহণ হিসাবে বাচ্চার নিয়মিত খেলাধুলা করা খুবই জরুরী। বাচ্চার যদি এক বছরের কম থাকে সে ক্ষেত্রে বাচ্চার খেলাধুলার জন্য বাবা-মাকে হেল্প করতে হবে।

বাচ্চার হাত পা নাড়াচাড়া করে হালকা ব্যায়াম করাতে হবে। বাচ্চা যখন শুয়ে থাকবে তখন তার পা দুটো কে ধীরেধীরে সাইকেল চালানোর মতো হালকা ব্যায়াম করা যাবে।  সারাদিনে অন্ত পক্ষে একটা বাৎসরিক কার্যক্রম করাতে হবে এবং সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

 কুসুম গরম পানিতে গোসল করানোঃ

বাচ্চাকে সবসময় গরম কুসুম গরম পানিতে গোসল করাতে হবে এর কারণ হলো বাচ্চার পেট এর বেশি রিলাক্স হবে ও পরিপাক ক্রিয়া স্বাভাবিক থাকবে এছাড়া এটি তাকে কিছুটা হলেও শান্তি রাখতে সাহায্য করবে।

 অধিক  পরিমাণে পানি পান করাতে হবেঃ

বাচ্চাকে সব সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করাতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়ানো হয় সে ক্ষেত্রে বাচ্চার মলাশয় পরিষ্কার হয়। শরীরে নতুন করে খাবার থেকে পুষ্টি গ্রহণ করতে পারবেন। ছয় মাসের পর থেকে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করানো খুবই দরকার এবং চেষ্টা করতে হবে। বাচ্চা যদি পানি খেতে না থাকায় সে ক্ষেত্রে আর কোন ফলের  জুস খাওয়াতে পারেন।

আঁশযুক্ত খাবার খাওয়াতে হবেঃ

বাচ্চার খাবার তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার রাখার চেষ্টা করুন। যেমনঃ মিষ্টি আলু, লাল শাক, কলমি শাক, পুদিনা পাতা, পুঁইশাক লাউ মিষ্টি কুমড়া কাঁচা পেঁপে পাকা পেঁপে ইত্যাদি।বাচ্চার ছয় মাস পর আস্তে আস্তে বাচ্চাকে সলিডস ফুটে অভ্যাস করতে হবে। খাদ্যের আঁশ অংশটুকু হজম না হওয়ার কারণে এগুলো পরিপাকতন্ত্রের শেষ বেশকিছু জনি অংশগ্রহণ করানো দরকার।

 পেট মেসেজ করাঃ

বাচ্চার পেটে আলতোভাবে মেসেজ করতে হবে। বাচ্চার পেটে মায়ের হাতের আঙ্গুল দিয়ে আস্তে আস্তে করে পেটে মেসেজ করতে হবে। বাচ্চার পা দুটো একসঙ্গে করে পেটের দিকে আস্তে আস্তে    দিতে হবে।এই মেসেজ করার কারণে আপনার বাচ্চার গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে।

 ফলের  জুসঃ

বাচ্চার যখন ছয় মাস বয়স তখন তাকে অল্প পরিমাণে ফলের জুস খাওয়াতে হবে।  সাধারণত আমরা বাচ্চাদের ফলের জুস বা বিভিন্ন মজাদার খাবার গুলো বাজার থেকে কিনে খাওয়ানোর চেষ্টা করি কিন্তু এটা আপনার বাচ্চার জন্য খুবই ক্ষতিকারক ।

তাই এই ফলের জুস গুলো বাজার থেকে কিনে কখনো খাওয়াবেন না। ফলের জুস খাওয়ানোর জন্য আপনি ঘরে তৈরি করে ফলের জুস খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। ফলের জুস বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

 নিয়মিত  মলত্যাগের অভ্যাসঃ

শিশুর নিয়মিত মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে তুলুন। যখন সে আপনার কথার রেসপন্স করতে শিখে যাবে বা বুঝতে শিখবে, সেই সময়ই পটি ট্রেইন করিয়ে ফেলুন। শিশু পটিতে বসতে না চাইলে তাকে বকা না দিয়ে বুঝিয়ে এবং পুরস্কার দেওয়ার মাধ্যমে তাকে উৎসাহিত করুন। শিশু যদি কোনো নির্দিষ্ট বাথরুমে যেতে পছন্দ করে, তবে তাকে সেই সুযোগ দিন।

জাঙ্ক ফুড এবং বেশি পরিমাণে মাংস জাতীয় খাবার না খাওয়ানোঃ

জাঙ্ক ফুড এবং বেশি পরিমাণে মাংস জাতীয় খাবার না খাওয়ানো । অতিরিক্ত অভ্যাস যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রধান সমস্যার কারণ হচ্ছে জাঙ্ক ফুড । যে খাবারগুলো অতিরিক্ত খাওয়ানো উচিত নয় যেমনঃ  কলিজা মাখন বিএফ ইত্যাদি।

খাদ্যাভাস পরিবর্তনঃ

মায়ের বুকের দুধের ওপর বাচ্চার যদি নির্ভরশীল হয় তাহলে অতিরিক্ত যে খাবার গুলো আমরা তৈরি করি সেই খাবারগুলো না খাওয়ালেই চলবে। মায়ের বুকের দুধের সঙ্গে সঙ্গে আপনার বাচ্চার শাকসবজি ফলমূল মাংস মাছ ইত্যাদি এসব খাওয়ার অভ্যাস করুন।   কম মশলাযুক্ত  খাবার খাওয়া অভ্যাস করুন।

উপরে উল্লেখিত বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছেন শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য বা কন্সটিপেশন দূর করার ঘরোয়া উপায়।আজকের এই নিয়মগুলো আপনারা মনোযোগ দিয়ে পোস্টটি পড়ে নিন এরপর জানতে পারবেন আপনার শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে আপনি কিভাবে মুক্তি পাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *