রচনা

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা (PDF)

1 min read
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা সম্পর্কে আজকের আয়োজন। যে সকল ছাত্র-ছাত্রী বন্ধুরা অনলাইনে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা অনুসন্ধান করছে তাদের জন্য আমাদের এই আয়োজন। প্রাথমিক বিদ্যালয় অথবা হাই স্কুলের শিক্ষার্থী বন্ধুরা প্রত্যেকেই তোমরা এই বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা টি অনুশীলন করতে পারো। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা টি প্রত্যেক শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রচনা।আশা করছি আমাদের আয়োজিত বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা টি তোমাদের কাছে ভালো লাগবে।সাবলীল এবং সহজ ভাষায় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা লেখার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের ব্লগে আরো গুরুত্বপূর্ণ রচনার ভান্ডার রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা  

ভূমিকা :  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির জনক । তার নেতৃত্বে ১৯৭১  সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয় । হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ এ বাঙালি আমাদের গর্ব আমাদের অহংকার আমাদের আবেগের নাম আমাদের ভালবাসার নাম ।

জন্ম ও পরিচয়ঃ  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে ১৯২০  সালে ১৭ মার্চ এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । তার পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান মায়ের নাম সায়রা খাতুন তিনি পিতা-মাতা  জ্যেষ্ঠ সন্তান ।

 শিক্ষাজীবনঃ তিনি ১৯৪১ সালে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন । এরপর কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৪ সালে   আই এ  এবং ১৯৪৭  সালে  বিএ পাস করেন ।

রাজনৈতিক জীবনঃ  ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধু ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন । শিক্ষাজীবন শেষ করে তিনি প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যোগ দেন । ১৯৪৭ এর দেশবিভাগের পর তিনি পাকিস্তানি অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন- সংগ্রাম শুরু করেন ।১৯৫২  সালে ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি কারারুদ্ধ হন । ১৯৫৩সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন ।১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদে যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের মূলে তার যথেষ্ট ভূমিকা ছিল ।১৯৬৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন  এবং পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসন এর জন্য ঐতিহাসিক 6 দফা কর্মসূচি পেশ করেন । এ কারণে পাকিস্তানি শাসকরা তাকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা জড়িয়ে কারারুদ্ধ করেন ।১৯৬৯ সালের দুর্বার গণ আন্দোলনের ফলে পাকিস্তানি  সাসক চক্র তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় ।

১৯৭০  সালের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে তার দল আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে । কিন্তু পাকিস্তানি শাসক চক্র  তাকে সরকার গঠন করতে না দিয়ে তালবাহানা করতে থাকে । বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে অসহযোগ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন ডাক ।১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে ঘুমন্ত বাঙ্গালীদের উপর নির্মম হত্যাযঙ্গ চালাই । কখন থেকে শুরু হয় সশস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধ ।১৯৭১  সালের 17 এপ্রিল কুষ্টিয়ার বৈদ্যনাথ বর্তমান মুজিবনগরে গঠিত স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম রাষ্ট্রপতি তিনি । দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিশ্ব জনমতের চাপে পাকিস্তানীরা তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় । তিনি ১৯৭২  সালের 10 জানুয়ারি প্রিয় মাতৃভূমি  স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশের রাখেন এবং রাষ্ট্রপতির পদ অলংকৃত করেন ।

জাতি  গঠনে অন্যতম  অবদানঃ  যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের দায়িত্ব ভার গ্রহণের পর বঙ্গবন্ধুর সামনে জাতি গঠনের আরেক যুদ্ধ এসে দাঁড়ায় । তিনি ১৬৫০০  হাজার প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি সরকারিকরণ করেন । এছাড়া তিনি প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য  চাল ,  ডাল ,  রেশনের ব্যবস্থা করেন , মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্নবাসনের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেন । ২৫ বিঘা জমির খাজনা মওকুফ করেন । সমস্ত বিধ্বস্ত কল কারখানা , ব্রিজ  রাস্তা ইত্যাদি পুননির্মাণ ও মেরামত করেন । শিল্পকলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেন। কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে এসে তার চিকিৎসার জন্য  বাংলাদেশ নিয়ে আসেন । পবিত্র ইসলাম ধর্মের যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন ।

মুক্তিযুদ্ধঃ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ পেলেও পাকিস্তান সরকার নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে নানা তালবাহানা শুরু করেন  এর ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান 7 ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জনসভায় দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেন  “”

    “ এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম  এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম  এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম  জয় বাংলা ।

২০২২  তার এই 18 মিনিটের ভাষণকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের সংস্কৃতি হিসেবে স্বীকৃতি দেয় । এরই ধারাবাহিকতায় 25 শে মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীরা অপারেশন সার্চলাইট গণহত্যা  নামে সকলের কাছে পরিচিতি। এই রাতে তারা বাঙ্গালীদের  কাছে ঝাঁপিয়ে পড়ে  ।  এমত অবস্থায় ২৬  মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন । এরপর তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় । শুরু হয় মুক্তির সংগ্রাম । দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর ১৬  ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা । পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করে দেশে পাঠিয়ে দেয় ।

পাক   রাজনৈতিক জীবনঃ   বিশ্ব রাজনীতি অবিসংবাদিত নেতা বাংলা ও বাঙালি  জাতির  জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতিক জীবন শুরু করার আগেই থেকে গ্রামের মানুষের দুঃখ দেখে নিজের ভেতর  এক প্রকার কষ্ট অনুভব করতেন ।  ক্ষুধার্তদের মুখে নিজের খাবার তুলে দিয়েছেন ।  শীত আসলেই শীতার্থদের নিজে চাদর দিয়ে সাহায্য করতেন । তখন থেকেই তিনি    ন্যায়ে  কথা বলতেন। অন্যায় বা অন্যায় কারী যত শক্তিশালী হোক না কেন তার প্রতিবাদ করতে তিনি বিন্দুমাত্র ভয় পেতেন  না । একটা স্বপ্ন ছিল বাঙালি জাতিকে মুক্তি করা ।

গণঅভ্যুত্থানঃ  ১৯৬৯ সালে ৫   জানুয়ারি ৬ দপা ১১  দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় । পরিষদ আগরতলা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলে । এ পর্যায়ে আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানের নিলে ২২ ফেব্রুয়ারি সরকার আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে বিনা শর্তে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় । পরের দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম  পরিষদের  আয়োজিত সংবর্ধনা   বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয় ।

নির্বাচনী বিজয়ঃ ১৯৭০  সালে নির্বাচন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পূর্ববাংলার জাতীয় পরিষদের ১৬২ টি আসনের মধ্যে ১৬০  টি এবং প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০ টি আসনের মধ্যে ২৮৮ টি আসনে জয়লাভ করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ।

ভাষা আন্দোলনঃ  ১৯৪৮  সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন আইন পরিষদ এ পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে    নিবে  বলে ঘোষণা দিলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘোষণার প্রতিবাদ করেন  এবং ২ রা মার্চ ফজলুল হক মুসলিম হলে এক বৈঠকে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলেন ।১১ মার্চ হরতাল চলাকালে তিনি গ্রেফতার হন ।১৯৫২ সালে ছাব্বিশে জানুয়ারি খাজা নাজিমুদ্দিন আবার ঘোষণা করেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উদ্যোগ । বন্দী থাকা অবস্থায় এই ঘোষণার প্রতিবাদ করেন এবং ২১ ফেব্রুয়ারি রাজবন্দিদের মুক্তি এবং বাংলা কি রাষ্ট্রভাষা করার দাবি দিবস হিসেবে পালন করার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান ১৪৪ ধারা  ভেঙ্গে  ঢাকার রাজপথে ২১ ফেব্রুয়ারি মিছিল বিয়ের করলে ওই মিছিলে পুলিশের গুলিতে অনেকে শহীদ হন । এরপর তিনি 26 শে ফেব্রুয়ারি জেলখানা থেকে মুক্তি লাভ করেন

ইতিহাসে জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডঃ 15 ই আগস্ট  সেই ভয়াবহ কাল রাত । পবিত্র শুক্রবার । রাতের নিস্তব্ধ নীরবতা ভেঙ্গে মসজিদে মসজিদে ফজরের আজান ধ্বনিত হচ্ছে । দেশীয় আন্তর্জাতিক চক্রান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কিছু বিপথগামী সেনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৩২ নং বাড়িতে আক্রমণ চালিয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডটি ঘটায় ১৯৭৫ সালের 15 ই আগস্ট ইতিহাসের এক কলঙ্কময় অধ্যায়  স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতির হত্যাকাণ্ড ।

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা (PDF DOWNLOAD)

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা উপসংহারঃ  বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি । তাকে ছাড়া বাংলাদেশের কথা কল্পনা করা যায় না । যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, যতদিন  বাঙালি জাতি থাকবে , মানুষ থাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে ।  জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিদ্রোহী আত্মার  প্রতি আমাদের অঙ্গীকার হচ্ছে ,

 

 সোনার বাংলা গড়বো পিতা

পিতা কথা দিলাম তোমায় ,

চেতনা থেকে  বিচ্যত  হবোনা

গ্রেনেড  তবা  বোমাই ।

 

আজকের আয়োজনে আমরা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশাকরছি শিক্ষার্থী বন্ধুদের কাছে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা টি ভালো লেগেছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ রচনা টি ভালো লাগলে অবশ্যই এই রচনাটি তোমার ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করে দেবে।
Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x