শিক্ষকের ভুল ধরায় টিসি দিয়ে স্কুলছাড়া করা হলো ফার্স্ট বয়কে

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকের ভুল ধরায় নবম শ্রেণির ফার্স্ট বয়কে টিসি দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বান্ধাবাড়ি জেবিপি উচ্চবিদ্যালয়ে। গত ৩০ মার্চের ঘটনার পর এলাকায় বইছে সমলোচনার ঝড়। সহপাঠীরা তাকে বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে। একাধিক শিক্ষক বলছেন, অন্যায় করা হয়েছে তার সঙ্গে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নবম শ্রেণির আইসিটির নির্ধারিত শিক্ষক না থাকায় ক্লাস নিতে যান সহগ্রন্থাগারিক জ্যোতির্ময় অধিকারী। এ সময় ক্লাসে ভুল তথ্য উপস্থাপন করলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কানাঘুষা শুরু হয়। এতে রেগে গিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। তখন ক্লাসের ফার্স্ট বয় শেখ মোহেবুল্লাহ মাহি বিষয়টি বোঝাতে গেলে তাকে মারধর করে বের করে দেন। পরে প্রধান শিক্ষকসহ আরও কয়েকজন তাকে বাধ্যতামূলক ছাড়পত্র বা টিসি দিয়ে দেন।

ওই দিন শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত একাধিক শিক্ষার্থী জানান, সহগ্রন্থাগারিক জ্যোতির্ময় অধিকারী ভুল তথ্য উপস্থাপন করলে শ্রেণিকক্ষে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। তখন মাহি শান্ত করতে গেলে তাকে মারধর করতে করতে বের করে দেন ক্লাস থেকে। সেদিনই টিসি দেওয়া হয় তাকে। মাহির সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে দাবি করে তাকে ফিরিয়ে আনার দাবি সহপাঠীদের।

মাহির ভাষ্য, ‘সহগ্রন্থাগারিক জ্যোতির্ময় অধিকারী ক্লাসে তথ্য ভুলভাবে উপস্থাপন করছিলেন। বিষয়টি তাকে বোঝাতে গেলে উল্টো তাকে মারধর করেছেন। পরে অন্য শিক্ষকরা তাকে টিসি দিয়ে বের করে দিয়েছেন বিদ্যালয় থেকে।’এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘মাহি মেধাবী ছাত্র। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার সঙ্গে যা করা হয়েছে, সেটি কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।’ তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি সহগ্রন্থাগারিক জ্যোতির্ময় অধিকারী। প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমাদের কাছে টিসি চেয়েছে মাহির মা-বাবা। সে কারণে তাকে টিসি দেওয়া হয়েছে।’

তবে মাহির মা শিরিন আক্তার বলেন, ‘মাহিকে টিসি দিতে বলা হয়নি। অন্যায়ভাবে আমার ছেলেকে টিসি দেওয়া হয়েছে।’

জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি। ওই ছাত্রের টিসি যাতে প্রত্যাহার করা হয়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *