শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কেন পালন করা হয়
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কেন পালন করা হয়
আজ 14 ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। 1971 সালের এই দিনে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় সহযোগীরা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের একটি বড় অংশকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। এই তারিখে 9 ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে বিজয়ের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা এই হত্যাকাণ্ড চালায়।এর আগে মার্চ মাসের মুক্তিযুদ্ধের সূচনা মুহূর্তেও ঘাতক বাহিনী অনেক বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। নির্মমভাবে তাদের হত্যাকাণ্ড তারা দিনে-রাতে চালিয়ে থাকে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
আজ 14 ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস । মুক্তিযুদ্ধের শেষ মুহূর্তে যখন তার পাকিস্তানি বাহিনী বুঝতে পারে যে তাদের পরাজয় অনিবার্য তখন তারা তালিকা করে জাতির বরেন্দ্র সন্তানদের হত্যা ঘাতক বাহিনী আলবদর আলশামস লেলিয়ে দেয়। পরাজয়ের আগ মুহূর্তে তারা চূড়ান্ত আঘাত হানে স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার অভিপ্রায়। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম থেকে আজ মুহূর্ত পর্যন্ত যেসব বরেন্দ্র মুক্তিকে আমরা হারিয়েছি তাদের মধ্যে আসেন অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র, মুনীর চৌধুরী, জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, ডক্টর মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, রাশিদুল হাসান, ডক্টর আব্দুল খায়ের, ডঃ আনোয়ার পাশা, সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, আলতাফ মাহমুদ, নিজাম উদ্দিন আহমেদ আরো অনেকে যাদের নাম এখনো অজানা।
পাকিস্তানি দুঃশাসনের দিনগুলো আমাদের লেখক সাংবাদিক শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীরা বিবেকের কণ্ঠস্বর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। নিজেদের জ্ঞান মনীষা ও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে জাতিকে পথ দেখিয়েছেন। তাদের পথ আলোকিত করেছেন। এসব কারণে তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের সিংহ শিকার হয়েছেন। এসব কম সময়ে এত বেশিসংখ্যক বুদ্ধিজীবী নিধনের উদাহরণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছাড়া আর কখনো ঘটেনি।
1971 সালে বুদ্ধিজীবি হত্যা ছিল মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত কয়েকজন শীর্ষ অপরাধের বিচার ও শাস্তি কার্যকর হয়েছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে। এটি জাতির জন্য স্বস্তিকার। কিন্তু দুটি কারণে এই বিচার অসমাপ্ত রয়ে গেছে। প্রথমত সব বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচার হয়নি। আবার যেসব হত্যার বিচার হয়েছে দণ্ডিত সব অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করা হয়নি। বিশেষ করে আদালতের রায়ের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রাপ্ত আলবদর কমান্ডার চৌধুরী মাঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান যথাক্রমে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের পলাতক। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করা প্রয়োজন।
বুদ্ধিজীবীদের শরণার্থী
আজকের এই দিনে আমরা জাতির এই মহান সন্তানদের শ্রদ্ধা বৃত্তের স্মরণ করি। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কেন পালন করা হয় বলতে গেলে অনেক কিছুই বলা যায় তবে যারা নিজেদের জ্ঞান ও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে জাতিকে পথ দেখিয়েছেন, তাদের বছরের একটি দীন স্মরণ’ করাই যথেষ্ট নয়। আমাদের অনুধাবন করতে হবে কেন এই মহৎ প্রাণ মানুষগুলো জীবন দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার 50 বছর পর গণমাধ্যমে যখন কোন শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের দুর্দশার খবর আসে তখন একথা বলা হবে না। যে রাষ্ট্র তাদের যথাযথ সম্মান দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার দায়ে জাতি আর কতকাল বহন করবে।
বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে আজ যে দিবস পালিত হচ্ছে, তার সার্থক হবে, যদি আমরা তাদের উদারতা মানবিক চিন্তা ও আদর্শকে ধারণ করতে পারি। তারা যে উন্নত দেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন সেই পথ ধরেই বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তাদের আদর্শ হোক আমাদের পথে।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ইতিহাস
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয় প্রত্যেক ডিসেম্বর মাসের 14 তারিখে। অর্থাৎ আমরা প্রত্যেক 14 ই ডিসেম্বর জাতীয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করে থাকি। তবে 20 21 এর শেষে এসে অনেকে জানেনা এই দিনটির তাৎপর্য কতটা বা তারা জানে না আসলে এই দিনটির পিছনের মূল কাহিনী কি। কেন দেশে প্রতি ডিসেম্বরের 14 তারিখে এতটা শ্রদ্ধার সহিত এই দিনটি পালন করা হয়।
এখনও পর্যন্ত আপনি এই দিনটির তাৎপর্য না জানেন তাহলে আপনি অনেক বিজি আছেন। একজন বাঙালি বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার সুবাদে আপনার অবশ্যই 14 ই ডিসেম্বর এর ঘটনা সম্পর্কে জানা দরকার। আজকের আর্টিকেলে আমি যতটা সহজ করে হোক আপনাদের এই দিনটি পুরো গল্পটা বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করব। আর্টিকেলটা পুরো পড়লে আশা করছি আপনারা কেউ এই দিনটির বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে অন্তত কয়েক লাইন বলতে পারবেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস মানে কি
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি বিশেষ দিন। বাংলাদেশের প্রতি বছরের ডিসেম্বরের 14 তারিখে দিনটিকে বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। 1971 সালের 10 ডিসেম্বর থেকে 14 ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে সময়টাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর সকল বুদ্ধিজীবীকে নির্বিচারে হত্যা করে। আর এই কাজে বাংলাদেশীদের মধ্যে রাজাকার আলবদর আলশামস বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সাহায্য করেছিল।
বুদ্ধিজীবী কারা
2021 সালে 10 ফেব্রুয়ারি বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে চূড়ান্ত করা হয়। সেই সংজ্ঞা অনুসারে বলা হয় বুদ্ধিজীবী কারা সেটা। বলা হয়েছিল যারা 1971 সালের 25 মার্চ থেকে 31 শে জানুয়ারি 1972 পর্যন্ত সময়ে বাঙালি সাহিত্যিক কবি বিজ্ঞানী দার্শনিক শিল্পী শিক্ষক সাংবাদিক গবেষক চিকিৎসক প্রকৌশলী ও সরকারি এবং বেসরকারি কর্মচারী কিংবা রাজনৈতিক সমাজসেবী সাংস্কৃতিক চলচ্চিত্র নাটক এবং সংগীতের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা উদ্যোগ ভিত্তিক কর্মকান্ডের সাথে বাংলাদেশের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল এবং এর ফলে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী কিংবা তাদের সহযোগীদের হাতে শহীদ হয়েছিল তারা অথবা ওই সময় যারা সবসময় এর জন্য নিখোঁজ হয়েছিল তাদের কে শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে গণ্য করা হবে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কেন পালন করা হয় বলতে গেলে তাদের স্মরণে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়।
বাংলাদেশের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের মূল কাহিনী কি ছিল
এতক্ষণ আমরা জানলাম শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস মূলত কি এবং কারা এই বুদ্ধিজীবী। তবে এই গল্পটা এখন জানবো আমরা। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে যখন পাকিস্তানি বাহিনী ধরে নিয়েছিল যে তাদের আত্মসমর্পণ করতেই হবে তাদের হার নিশ্চিত তখনই ঠিক তার দুদিন আগে অর্থাৎ 14 ই ডিসেম্বর রাতে আঁধারে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের তারা নির্বিচারে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের পর হত্যা করেছিল।
হোয়াইট হাউস থেকে ফাঁস হওয়া বিভিন্ন এবং ডকুমেন্ট এর মাধ্যমে দেখা যায় হেনরি কিসিঞ্জার এর খুবই অদ্ভুত পদক্ষেপের কারণে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের কার্যক্রমটি দেরি করা হয়। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ডিসেম্বরে বুদ্ধিজীবীদের এত বড় ধরনের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করা সম্ভব হয়েছিল।
মূল ঘটনা হচ্ছে ডিসেম্বরের 9 তারিখে জেনারেল ইয়াহিয়া খানের যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নিতে বলে এবং এর পর থেকে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি নিতে থাকে। কিন্তু 11 তারিখে হঠাৎ ইয়াহিয়া খানের আরো একটি টেলিগ্রাম আসে যে টিকিট কেমন ছিল।
do not, repeat
try not make any move on my last massage to you.vital political and military moves are occurring by our friends.
নয় থেকে এগারো তারিখের মধ্যে যা হয়েছিল সেটি হল ম্যানহাটন নিউ ইয়র্ক এর পূর্ব দিকে একটা সেফ হাউসে হেনরি কিসিঞ্জার এবং সনাতন কালীন জাতীয় সংঘের পার্মানেন্ট রিপ্রেজেন্টিভ হুয়া হুয়া এরমধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তাদের ফাঁস হওয়া কনফারেন্স এর মধ্যে দেখা যায় হেনরি কিসিঞ্জার মরিয়া হয়ে চীনকে এটা বলে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করতাছে যে তারা যাতে ইন্ডিয়ার বর্ডারে আক্রমণ চালায় এতে বাংলাদেশ এক পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধটি এটা আঞ্চলিক যুদ্ধ থেকে বিশ্ব যুদ্ধে পরিণত হবে। এতে পাকিস্তানি এর পরাজয় তাড়াতাড়ি ঠিকানা যাবে। শুধুমাত্র এমন এক ধরনের ম্যাসেজ এর কারণে পাকিস্তান আর্মির যে আর্তসমাপন সেটি পিছিয়ে যায় অর্থাৎ দেরি করা হয়। আর এই পরিপ্রেক্ষিতে 14 ডিসেম্বরের ঘৃণ্য কর্মকান্ডের পাকিস্তান করতে সক্ষম হয়।
শেষ পর্যন্ত দেখা যায় ইন্ডিয়া বর্ডারের চায়না কোন আক্রমণ করেনি। কিন্তু 16 ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল যেটা তারা আরো আগেও চাইলে করতে পারত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কেন পালন করা হয় এটি আমরা কিছুটা হলেও জানতে পেরেছি।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য কি
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে তো অনেক কিছুই জানলাম। কিন্তু এই দিনটি আমরা কেন এত শ্রদ্ধাভরে পালন করি তা আছে সবার জানা। বলতে পারেন আমাদের এই স্বাধীন দেশে স্বাধীন পতাকা উড়ানোর পেছনে তাদের অবদান আছে। বর্তমান দিনে দেশ কিভাবে স্বাধীন হয় মুক্তিযুদ্ধের আসল কাহিনী কি এসব বিষয়ে শুনলে কতজনকেই বা আগ্রহী হয়।
তবে তাদের মৃত্যুর উপহার হিসেবে আমরা এই দেশে আর শান্তিতে বাস করছে তারাই হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা বুদ্ধিজীবীরা। নানাভাবে যুদ্ধ না করলেও মুক্তিযোদ্ধাদের তারা সাহায্য করতে গিয়েছো। মেধা পরিশ্রম সবকিছু দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পেছন থেকে যুদ্ধ করার শক্তি যুগিয়েছেন তারা।
যারা দেশ স্বাধীন করার জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত বিলিয়ে দিয়েছেন তারা সারাজীবন চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে আমাদের জীবনে। বুদ্ধিজীবীর আওতায় সারাজীবন চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে সকলের জীবনে। কারণ চিন্তা অর্থ মেধা শ্রম বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধের অনুপ্রেরণা জাগিয়েছেন।
বাংলাদেশের মতো দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও যাতে তাদের মেধা এবং শ্রম খেতে না পারে তাই তাদের নির্বিচারে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে হাত-পা বেঁধে হত্যা করা হয়। তাই 14 ই ডিসেম্বর এর এই দিনে গভীর শ্রদ্ধা সাহিত্য এ দেশের জন্য প্রাণ দেওয়ার সকল বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করা হয়। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং সম্মান বিনোদন করা। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কেন পালন করা হয় এর কারণ তাদেরকে শ্রদ্ধা জানানো এবং সম্মান জানানোর জন্য।