স্বাধীনতা দিবস রচনা

আজকের এই পোষ্ট আমরা সাজিয়েছি স্বাধীনতা দিবস রচনা সম্পর্কে। যারা স্বাধীনতা দিবস রচনা লিখে ইন্টারনেটে সার্চ করছ তারা আশা করছে একটা ভালো সমাধান পেয়েছো। স্বাধীনতা দিবস রচনা প্রত্যেক ক্লাসের ছেলেমেয়েদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই স্বাধীনতা দিবস রচনা সম্পর্কে আমরা এই পোস্টটা সাজিয়েছি। আশা করছি স্বাধীনতা দিবসে রচনাটি তোমাদের কাছে ভালো লাগবে। 

মহান স্বাধীনতা দিবস রচনা

ভূমিকা: 26 মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস । 1971 সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে । 1971 সালের 26 মার্চ তারিখে পরাধীনতার গ্লানি ফেলে দিয়ে আমাদের দেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে আত্মপ্রকাশ করে ।  সেজন্য এই দিনটি আমাদের আনন্দ ও গৌরবের ।

স্বাধীনতা ইতিহাস : 1947 সালে ব্রিটিশ এর নাগপাশ থেকে  মুক্ত ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হয় , কিন্তু দুর্ভাগ্য পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর গণতান্ত্রিক পরিহার করে দমননীতির পথ বেছে নেয় । 1952 সালের ভাষা আন্দোলনের স্বাধীনতার বীজ উত্তপ্ত হয় ,1954 সাধারণ নির্বাচন ,1966 এর ছয় দফা আন্দোলন, 1969  এর  গণঅভ্যুত্থান 1970 সাধারণ নির্বাচন , আন্দোলনের বিভিন্ন স্তর , পাকিস্তান সরকার সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে 1971 সালের 25  মার্চ মধ্যরাত্রি রক্তকে এই হত্যাকাণ্ডের সূচনা করে ।

স্বাধীনতা দিবস : 26 বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয় , কুষ্টিয়ার  মেহেরপুরে 1971 সালের 17 এপ্রিল স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয় , দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের পর 1971 সালের 16 ই ডিসেম্বর 93 হাজার পাকিস্তানি সৈন্য বাংলার মাটিতে আত্মসমর্পণ করে ।  শত্রুমুক্ত হয় আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ , 16 ই ডিসেম্বর কে ঘোষণা করা হয় বিজয় দিবস হিসেবে ।  দিনটি সহকারী ছুটির দিন ।

 

 দিবসের কর্মকাণ্ড : দিনটি শুরু হয় 21 বার টপ ধোনির মাধ্যমে , সরকারি – বেসরকারী প্রতিষ্ঠান , অফিস-আদালত , স্কুল কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় , রাস্তাঘাট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বর্ণাঢ্য সাজানো হয় , পতাকা পতাকা ফেস্টুন ব্যানার শোভিত সারাদেশ উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠে , বেতার ও টেলিভিশন এই দিনটি উপলক্ষে বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ।  খবরের কাগজ গুলো স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিশেষ সাময়িকী প্রকাশ করে , মসজিদ , মন্দির  ও নানা উপসনালয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের উদ্দেশ্যে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হয় , ঢাকার অদূরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ লাখো লাখো জনতা ফুল দিয়ে স্বাধীনতার বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অর্পণ করেন , জাতীয় গ্রাউন্ডে মুক্তিযোদ্ধা, সেনা , নৌ ও ,  বিমান , বিজিবি , পুলিশ, আনসার বাহিনীর সদস্যগণ মনোরম প্যারেডে অংশগ্রহণ করে ।  দেশের অন্যান্য স্থানে এই দিবস উপলক্ষে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ।

অন্যান্য ঘটনা : বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রাম বিশ্বের স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাসে একটি আদর্শ উজ্জ্বল   দৃষ্টান্ত , কোন জাতি জন্মভূমির জন্য এত করে এমনভাবে আত্মত্যাগ করতে হয়নি , লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল , এদেশের মানুষ নিজেদের রক্ত দিয়ে প্রাণ দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে বিশ্বের কোন দেশেই তার জন্মভূমির জন্য এসব দৃষ্টান্ত রেখে যায়নি কিন্তু আমাদের এই দেশ স্বাধীনতার জন্য যে অর্জন তা যুগ যুগ  ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে জাতি কখনোই তাদের তাদের এই মহান আত্মত্যাগের কথা ভুলে যাবেনা ।

স্বাধীনতা দিবস ও বিভিন্ন আন্দোলন : স্বাধীনতা একটি শব্দ হলেও তা কখনো কোন দিবস বা কার্যের মাধ্যমে অর্জিত হয় না ।  একে অর্জন করতে একে পেতে হলে অনেক ত্যাগ কষ্ট স্বীকার করতে হয় জাতিকে , বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দমন নিপীড়ন ও শোষণ বঞ্চনার প্রস্ফুটন আজকের স্বাধীনতা , স্বৈরাচারী , পাকিস্তান শাসকচক্র ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাঙালি  আশা আকাঙ্ক্ষা ধূলিসাৎ করেছিল , ক্ষমতায় যেতে পারিনি এদেশের মানুষ , এদেশের ঘুমন্ত নিরীহ মানুষের উপর নির্বিচারে হামলা  চালা লো, সাধারণ মানুষের উপর , বাঙালির ইতিহাসে এক ভয়াবহ ঘটনা ।  এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙ্গালীদের উপর , পৃথিবীর ইতিহাসে ভয়াবহ দৃষ্টান্ত ।  কতিপয় বিশ্বাসঘাতক আলবদর , রাজাকার , আলশামস ছাড়া গোটা জাতি মুক্তিযুদ্ধ’ ঝাঁপিয়ে পড়ে ।

 স্বাধীনতার চেতনা ও তাৎপর্য : আমাদের জাতীয় জীবনেরএদিনটি প্রধান তাৎপর্য পূর্ণ , এই দিনটি সমগ্র দেশবাসীর বহুকাল লালিত মুক্তি ও সংগ্রামের অঙ্গীকারে ভাস্কর , এই স্বাধীনতা দারিদ্র , সামাজিক অর্থনীতি বৈষম্য দূর ,  মানবাধিকার মহান আদর্শ উদ্ধত্য , স্বাধীনতা অর্জনের 48 বছর পর এখনো অসংখ্য লোক অশিক্ষিত ও দারিদ্র্য কবলিত অবস্থায় রয়েছে , জনগণের জীবন নিরাপত্তা বিপন্ন হচ্ছে , বেকারত্বের জালে আবদ্ধ যুবক বেছে নিচ্ছে নৈতিক অবক্ষয় ও সমাজ বিরোধী পথ , এখনও আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে সঠিকভাবে অর্থবহ করে তুলতে পারিনি , লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে সুখী -সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা করা।

পরিস্থিতি উত্তরণের উপায় : অজস্র রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা যাতে কারো ব্যক্তিগত বা দলগত চোরাবালিতে পথ  না হারা সেই প্রচেষ্টা আমাদের গ্রহণ করতে হবে , আমাদের কথা ভুলে গেলে চলবে না।  স্বাধীনতা অর্জন করা কঠিন, রক্ষা করা আরো কঠিন , আজ বিশ্বের দিকে উৎকর্ষ সাধনের প্রতিযোগিতা।

এক্ষেত্রে  আমাদের সৃষ্টি করতে হবে উন্নয়নের ধারা , দেশ গড়ার কাজে আজ প্রয়োজন সমগ্র জাতির নতুন করে শপথ গ্রহণ , সর্ব প্রকার স্বতন্ত্র থেকে দেশকে মুক্ত করে আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে উঠতে হবে তবে সোনার বাংলাদেশ

স্বাধীনতা বনাম অপশক্তি : যে স্বপ্ন বা আকাঙ্ক্ষা সামনে রেখে স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়েছিল , সেই স্বপ্ন নানা কারণে গত চার দশকে  সাফল্যে লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ  করতে পারেনি , স্বাধীনতার পর বার সামরিক অভ্যুত্থান, হত্যা আর রক্তপাত মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল , স্বাধীনতা চেতনা বিরোধী দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের অপতৎপরতা অর্থনৈতিক বৈষম্যের যুব সমাজের মধ্যে হতাশা , এজন্য দুর্নীতিমুক্ত কল্যাণমূলক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন স্বাধীনতার প্রকৃত গৌরবগাথা আর সত্যিকারের ইতিহাস ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা ।

স্বাধীনতা দিবসে দেশবাসী ও করণীয় : স্বাধীনতা দিবসের শপথ নিতে হবে যে, বাংলাদেশের গৌরবময় স্বাধীনতাকে জাতীয় জীবনের স্থিতিশীল করে রাখার শপথ নিয়ে দেশ ও জাতির জন্য আমরা আমাদের কাজ করে যাব , স্বাধীনতা দিবসের চেতনা কে আমাদের জাতীয় জীবনের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে; দেশে একটি শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে হবে , আমাদের জাতীয় জীবনের বিভিন্ন সমস্যা ও সংকট অভাব-অনটন অশিক্ষা দারিদ্র্য দূর করে দেশকে একটি আত্মনির্ভরশীল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে স্বাধীনতাপ্রাপ্তি সকল দিক থেকে অর্থবহ হবে ।   আমাদের মনে রাখতে যে আমাদের ভৌগলিক স্বাধীনতা এলে অর্থনৈতিক মুক্তি এখনো আসেনি , অর্থনৈতিক মুক্তি আসলে স্বাধীনতা দিবসের চেতনা বাস্তবায়ন সম্ভব  হবে ।  আমাদের সকলকে তাই অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য , জাতীয় কল্যাণ জন্য একত্রে কাজ যেতে হবে ।

 উপসংহার : স্বাধীনতা একজন মানুষের জন্মগত অধিকার।  অনেক রক্ত ত্যাগ – তিতিক্ষা বিনিময়ে  অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ । এর জন্য 30 লাখ শহীদ হতে হয়েছে। আমরা এখন স্বাধীন দেশের নাগরিক। স্বাধীনতাকে আমাদের যেকোনো মূল্যে অস্তিত্ব রাখতে হবে । স্বাধীনতার চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিতে হবে অর্থনৈতিক মুক্তির পথে । সুখী সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ হিসাবে  গড়তে পারলে স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন পূরণ হবে ।

স্বাধীনতা দিবস রচনা সম্পর্কে আমাদের আজকের এই পোস্টটি সাজানো হয়েছিল। আশা করছি যারা স্বাধীনতা দিবস রচনা অনুসন্ধান করছিলে তারা একটা সমাধান পেয়েছো। তুমি চাইলে এই স্বাধীনতা দিবস রচনাটি তোমার ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করতে পারো।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *