গোয়েন্দা থেকে রাষ্ট্রনায়ক । ভ্লাদিমির পুতিনের জীবন কাহিনী

আমরা বিশ্বের জনপ্রিয় একজন নেতা ভ্লাদিমির পুতিন এর জীবন সম্পর্কে আলোচনা করব। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এবং ক্ষমতাধর এই নেতার জীবনের সাফল্য কাহিনী নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে। আজকে আমরা ভ্লাদিমির পুতিন এর জীবনের রাজনৈতিক, শিক্ষাজীবন, ব্যক্তিগত জীবন এর সফলতা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করব। 

ভ্লাদিমির পুতিন লেলিন ব্রাদের জন্মগ্রহণকারী রুশ প্রজাতন্ত্র বা রাশিয়ার একজন স্বনামধন্য সুপরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। যদিও সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১২ সালের ৭ মে থেকে তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে ক্ষমতাসীন রয়েছেন। এর আগে তিনি ১৯৯৯ থেকে ২০০০ এবং ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনা করার কাজটি খুব সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেন। উল্লেখযোগ্য আরেকটি বিষয় হচ্ছে ২০০৮ থেকে ১২ পর্যন্ত এই বর্ষের নেতা ইউনাইটেড রাশিয়া দলের সভাপতি এবং রাশিয়া ও বেলারুসের মন্ত্রিসভার সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছেন।  2018 সালে চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার সময়ই তিনি বিশ্বব্যাপী তার দেশকে পরাশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।  আপনারা আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি যে আমেরিকা কিংবা ইউরোপের নেতাদের হুমকি-ধামকিতে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে তিনি ইউক্রেনের উপর আক্রমণ শুরু করেন।

ভ্লাদিমির পুতিনের শিক্ষা জীবন

ভ্লাদিমির পুতিন মূলত আইন বিষয়ে ডিগ্রী অর্জন করেছেন। যদি ঘরে থেকে বলি তাহলে তিনি 1960 থেকে 68 সালের মধ্যে প্রাইমারি স্কুলে পড়াশোনা শেষ করেন। সর্বপ্রথম তিনি ১৯৬০ সালে  লেলিনগ্রাদের ১৯৩ নং স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকে অষ্টম গ্রেড সম্পূর্ণ করার পর 281 নং স্কুলে ভর্তি হন এরপর ১৯৭০ সালে পড়াশোনা শেষ করেন। ১৯৭০ এ লেলিনবাদ স্টেট ইউনিভার্সিটিতে তিনি আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৭৫ সালে সেই দিকে অর্জন করেন। এরপর এই নেতা ১৯ ৮০ সালের শুরুর দিকে কেজিবি স্কুল নং ১ এ করেন।

ভ্লাদিমির পুতিন সর্বপ্রথম রুশ প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন 1999 সালের 31 ডিসেম্বর। সেসময়কার রাষ্ট্রপতি বরিস ইয়েলৎসিন  হঠাৎ করেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং তারপরেই এই নেতা দায়িত্ব গ্রহণ করেন। 2000 সালে প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে এবং 2004 সালে দ্বিতীয় মেয়াদে পুনরায় রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন । মেয়াদ শেষে সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার কারণে তৃতীয়বারের জন্য রাষ্ট্রপতি হতে পারেননি কিন্তু পরবর্তীতে 2008 সালে তার অধীনস্থ উত্তরসূরী দিমিত্রি মেদভেদেভ রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।  দিমিত্রি মেদভেদেভ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভ্লাদিমির পুতিনকে মনোনীত করেন।

এভাবেই তিনি 2008 সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে 2001 সালে পুতিন ঘোষণা করেন যে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নতুন করে 2012 সালে রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এবং 2012 সালের তৃতীয় মেয়াদে জয়লাভ করেন।

ব্লাদমির পুতিনের জীবনের সাফল্য

ভ্লাদিমির পুতিনের জীবন সাফল্যে ভরপুর ক্ষমতায় আসার পর তিনিই প্রথম রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছেন। দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধের মাধ্যমে রাশিয়ার অঙ্গরাজ্যগুলোর অখন্ডতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি সর্বপ্রথম নয় বছরের মধ্যেই জিডিপি 72 পার্সেন্ট বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন।  রাশিয়া অর্থনীতি মজবুত হওয়ার পেছনে তার অবদান অনেক বেশি। দারিদ্রতার হার কমে আসে 50% । রাশিয়ার পর মাসিক বেতন 80 ডলার থেকে 640 ডলারে বৃদ্ধি পায়। ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি বেশকিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন ।  যেমন 13 শতাংশ আয়কর নির্ধারণের বিষয়ে আইন পাস, জ্বালা দিলিরে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা ইত্যাদি । রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়া তাদের জ্বালানি রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পর বিশ্বব্যাপী কতটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে সেটা আমরা ইতিমধ্যে গণমাধ্যমের সুবাদে জানতে পেরেছি।

যুবক বয়সে প্রোটিন বেশ কয়েকবার যুদ্ধ এবং তাপমাত্রার খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।  খেলার প্রতি তার দুর্বলতা থাকার কারণে তিনি রাশিয়াতে ক্রীড়া উন্নয়নে অবদান রাখেন । 2014 সালে অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিক আয়োজনে তার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।

ভ্লাদিমির পুতিনের ব্যক্তিগত জীবন

তুমি 28 জুলাই 1983 সালে কালিনিনগ্রাদে জন্মগ্রহণকারী ও সাবেক বিমানবালা লিদমিলা শ্রেবনেভাকে  বিয়ে করেন ।  ব্লাদে মিরপুর টিনের ঘরে মারিয়া ভোরন্তসোভা ও ক্যাটেরিনা তিখনোভা  নামে দু’জন কন্যা সন্তান রয়েছে। 1985 সাল থেকে 1990 সাল পর্যন্ত তারা জার্মানিতে বসবাস করেন। তার ব্যক্তিগত জীবনের আরেকটি ইন্টারেস্টিং ঘটনা হচ্ছে যে,  পুতিনের এক জার্মান গোয়েন্দা বন্ধু ছিল ও প্রণয় আসক্তির ফলে পুতিন তাকে পিটান। 1990 সালে যখন মেজারমেন্ট অফ ফরেন তার নামে গুজব ছড়াচ্ছে তিনি অবৈধ সন্তান কে ফেলে চলে গিয়েছেন।

লাদেনের পুতিনের ভাষার ব্যবহার

রুশ ভাষার পাশাপাশি ভ্লাদিমির পুতিন জার্মান ভাষায় কথা বলতে পারেন । পরিবারের সাথে সাধারনত জার্মান ভাষায় কথা বলে। জানা যায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি ইংরেজি ভাষা আয়ত্ত করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি সবসময় অনুবাদকের সহায়তা নেন কিন্তু অনানুষ্ঠানিকভাবে ইংরেজদের ইংরেজি ভাষায় কথা বলেন। বাকিংহাম প্রাসাদে ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মা এলিজাবেথ বোজ-লিওনের  মৃত্যুতে তিনি সর্বপ্রথম অল্প কিছু কথা ইংরেজিতে বলেন । এছাড়া 2014 সালের শীতকালীন অলিম্পিক এর অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইংরেজি ভাষায় বক্তৃতা দেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *