স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা বাড়ানোর উপায়

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের ভালোবাসা যদি আল্লাহর জন্য হয় আবার ঘৃনা করাও যদি তার জন্য হয় তবে তারা আরশের ছায়ায় স্থান পাওয়া 7 শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হবে। সুতরাং দাম্পত্য জীবন দ্বীনদারী ইবাদত-বন্দেগী সততা নৈতিকতা সচ্চরিত্র সদাচার ইত্যাদি ক্ষেত্রে ভালোবাসা এবং ঘৃণা হবে আল্লাহর জন্য।

স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসায় যেসব কাজে সওয়াব হয়

স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক ভালোবাসা ও মায়া মমতায় উপর প্রতিষ্ঠিত দাম্পত্য জীবন। মহান আল্লাহ তা’আলা ভালোবাসা ও শান্তিময় সুখ-শান্তি মনের কথা  তুলে ধরেছেন কুরআনে। আল্লাহ তা’আলা বলেন-

তার নির্দেশনা বালির মধ্যে এক নিদর্শন এই যে তিনি মাটি থেকে আমাদের সৃষ্টি করেছেন। এখন তোমরা মানুষ পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে। আরেক নিদর্শন এই যে তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন। যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাকো এবং তিনি তোমাদের পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দোয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্য নির্দেশনা রয়েছে।

সংসার জীবনে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক ও ভালোবাসার মর্যাদা ব্যাপক। ও হাদিস হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে। দাম্পত্য জীবনে সাধারন আচার-আচারণও ভালোবাসার হাতছানি ্যাহার তো হতে পারে এ দুনিয়ার সব মানুষের জন্য গ্রহণীয় ও অনুকরণীয় আদর্শ।তাহলো পারস্পারিক ভালোবাসা।

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর স্ত্রীগণ তাকে জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন। আর প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম অন্যতম সুন্নত বা আদর্শ হচ্ছে স্ত্রীকে ভালোবাসা। হাদীসে এসেছে-

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন আমার কাছে তোমাদের পার্থিব সামগ্রীর মধ্যে থেকে প্রিয় করে দেয়া হয়েছে স্ত্রী ও সুগন্ধি কে। আর নামাজ আমার জন্য বানানো হয়েছে চক্ষু শীতলকারী।

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা বৃদ্ধির উপায়

স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের ভালোবাসা যদি আল্লাহর জন্য হয় আবার ঘেন্না করো যদি তার জন্যে হয় তবে তার আরশের ছায়ায় স্থান পাওয়া সাত শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হবে। সুতরাং দাম্পত্যজীবনের দিন তাঁর ইবাদত বন্দেগী সততা নৈতিকতা ইত্যাদির ক্ষেত্রে ভালোবাসা এবং ঘৃণা হবে আল্লাহর জন্য।

কত জীবনে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পর যদি একে অপরে আল্লাহর জন্য ভালোবাসা এবং নিজের জন্য যা পছন্দ করে তার সঙ্গীর জন্য তাই পছন্দ করে তবে তার উভয়ের ঈমানের প্রাকৃতিক স্বাদ আস্বাদন করবে। হাদীসে এসেছে-

হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেছেন যার মধ্যে তিনটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে সেই ঈমানের প্রাকৃতিক স্বাদ অনুভব করবেন অন্য সবার তুলনায় যার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক প্রিয়। যে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তার বাবাকে ভালবাসি। আর যাকে আল্লাহ উপর থেকে মুক্তি দিয়েছেন তার সেক উপরের দিকে ফিরে যাওয়াকে এমন অপছন্দ করে যেমন আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াতে অপছন্দ করে।

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা পারস্পারিক কথাবার্তা

দাম্পত্য জীবনে স্বামী স্ত্রী একে অপরের সঙ্গে সুন্দর ভাষায় কথা বলে তবে হাদিসের পরিভাষায় তাদের জন্য রয়েছে সদকা করার সওয়াব। হাদিসে এসেছে রাসুল সাঃ বলেছেন একটি ভালো কথা হলো সদকা।

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা হাসিমুখে কথা বলা

দাম্পত্য জীবনে স্বামী স্ত্রী একে অপরের সঙ্গে কথা বলে তবে হাদিসের পরিভাষায় তাদের জন্য তাতেও রয়েছে সদকাপড়ার সওয়াব। হাদীসে এসেছে- রাসুল বলেছে তোমার ভাইয়ের মুচকি হাসা সদকা।

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা পারস্পারিক আনন্দ

দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর একে অপরকে খুশি করার আল্লাহর কাছে নেক আমল হিসেবে বিবেচিত। হাদীসে এসেছে-

রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেছেন আল্লাহর কাছে পছন্দ কোন মুসলিম আনন্দ প্রবেশ করা। আর স্বামী স্ত্রী একে অপরের প্রতি ভালোবেসে আনন্দ প্রকাশ করে এতে অস্কার পাওয়া যায়। এবং একে অপরের আনন্দ যদি পরস্পরের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওয়া যায় তাতেও আনন্দ পাওয়া যায় স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা এমনই হওয়া উচিত যে পরস্পরের দুঃখ-কষ্ট আনন্দ বেদনা সব একে অপরের ভাগাভাগি করে নেয়া।

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা পরস্পরের উপকার

দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর যদি একে অপরের কোন উপকার করে বা ভাল কাজ করে তবে এর বিনিময়ে সদকার সওয়াব লাভ করবে।। আর একজন অপরজনের উপকার করাই আল্লাহর কাছে শ্রেষ্ঠ প্রিয় মানুষ হওয়ার মর্যাদা লাভ করবে তারা। একাধিক হাদীসে এসেছে-

রাসুল সাঃ বলেছেন প্রতিটি ভালো কাজ সদকা। তোমার তোমাদের ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করাটাও একটি ভালো কাজ। যে ব্যক্তি মানুষের বেশি উপকার করে সেই ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ মানুষ। কাছে সেই ব্যক্তি সবার থেকে শ্রেষ্ঠ যে অন্যের উপকার করে বেশি।

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসায় পরস্পরের খরচ

দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক খরচ বহন ও একে অপরের মুখে খাবার তুলে দেয়া রয়েছে শ্রেষ্ঠ সওয়াব পাওয়া ঘোষণা। হাদীসে এসেছে-

প্রিয় নবী সাঃ বলেছেন একজন মানুষ তার স্ত্রীর মুখে এক লোকমা খাবার তুলে দেবে। শুধু তাই নয় অন্য হাদিসে স্ত্রীর পরিবারের জন্য খরচ করা কেউ তার সব বলা হয়েছে যদি সৎ নিয়তে খরচ করা হয়।

দাম্পত্য জীবনে আল্লাহর বিধিনিষেধ মেনে চলায় রয়েছে বিশেষ ছোঁয়াবো উপকারিতা। স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করে তাতে তারা সৎকার সব পাবে। হাদীসে এসেছে- সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজ হতে বিরত রাখা একটি   সাদকা।

 স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা মনে রাখতে হবে

দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক স্বাভাবিক কথাবার্তা শুধু ছবি নয় বরং পারিবারিকভাবে তা আরে পরস্পরের দাওয়াতি কাজের অংশ।  উভয়ই হতে পারে স্বাতন্ত্র্য দাও। রাসুল সাঃ এর জীবনী ও এর শুভ সূচনা হয়েছিল। তিনি সর্বপ্রথম মিস্ত্রি হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহুর নবুয়তের দাওয়াত দিয়েছিলেন। তার কথা ও কাজের সুন্দর প্রকাশ ও বাস্তাবায়ন হয়েছিল আম্মাজান হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহু মাঝে। সর্বকালের সর্বযুগের বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পারিবারিক জীবন অনুপ্রেরণা ও কল্যাণ লাভের একমাত্র উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দাম্পত্যজীবনে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের পরিপূর্ণ করে দিন। হাদিসের আলোকে শান্তিপূর্ণ হিসেবে কবুল করুন। আমিন

স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসায় স্বামীর দায়িত্ব

দ্বীনদার স্ত্রী গ্রহণ করা –

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেনঃ যে বিবাহ করা ইচ্ছে করে  সে যেন দিনকে প্রধান দেয়। অন্য হাদীসে এসেছে চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদের বিয়ে করা হয় সম্পদ বংশমর্যাদা সৌন্দর্য ও দ্বীনদারী। সুতরাং ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

মনের ভালোবাসা মুখে প্রকাশ করা

হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু সম্পর্কে রাসুল সালাম বলেছেন আল্লাহর প্রতি ভালবাসার ঢেলে দেওয়া হয়েছে। হযরত কে বলেছে আয়েশা আমার যেমন সব শাড়ি আরবের বিশেষ এক ধরনের খাবারের নাম  সারিদ। স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার কথা মুখে প্রকাশ করুন পুরুষরা তাদের সঙ্গিনীকে সুন্দর ভাবে দেখতে পছন্দ করে ঠিক একই ভাবে তারা তাদের সঙ্গেও সুন্দরভাবে দেখতে পছন্দ করে। রাসুল সালাম বলেন আমি আমার স্ত্রীর জন্য এমনই পরিপাটি থাকা পছন্দ করি যেমন আমি তাদের ক্ষেত্রে সাজগোজ করে থাকতে পছন্দ করি।

স্ত্রীর প্রতি সবসময় আন্তরিক থাকা

স্ত্রীর সঙ্গে সবসময় আন্তরিক আচরণ করতে হবে। হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু কখনো আমার নাম হুমায়রা লালগোলা বলে ডাকতেন। তিনি আরো বললেন পাত্রের যে অংশে আমি মুখ রেখে পানি পান করতেন তিনি সেখানেই মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে পছন্দ করতেন।

স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করা

স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করা পারিবারিক সুখের অন্যতম চাবিকাঠি। তার পাওনা পরিপূর্ণভাবে আদায় করতে হবে। তার অধিকার বুঝিয়ে দিতে হবে। তার নিত্যদিনের শারীরিক ও মানসিক চাহিদা পূরণ করতে হবে। রাসুল সালাম বলেন তোমাদের মধ্যে সেই ভালো যে তার পরিবারের কাছে ভালো। আর আমি আমার পরিবারের কাছে তোমাদের চেয়ে উত্তম।

 স্ত্রীর মনোরঞ্জন

পারিবারিক শান্তির জন্য অপরিহার্য। রাসুলের স্ত্রীদের সঙ্গে বিনোদন মূলক আচরণ করতেন। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু এর সঙ্গে ছিলেন। আমি তার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করে তার আগে চলে গেলাম। তারপর আমি মোটা হয়ে যাওয়ার পর অন্য আরেক সফরে তার সঙ্গে আবারও দৌড় প্রতিযোগিতা করলাম এবার তিনি রাসূল সাল্লাহু সালাম আমাকে পেছনে ফেলে দিয়ে বিজয়ী হলেন। তিনি বললেন এ বিজয় সেই বিজয়ের বদলা।

পরিশেষে বলা যায় যে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম তিনি তার সঙ্গে এমন আচরণ করতেন যাতে তাদের পরিবারের সুখ ছিল এবং তিনি আমাদের নির্দেশ করেন যে আমরা যেন আমাদের স্ত্রীর সঙ্গে ভালো আচরণ করি এবং সব সময় তাদের আনুগত্য মেনে চলি এবং মহান আল্লাহতালা এটি পছন্দ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *