আসসালামু আলাইকুম আজকে আলোচনা করব নারীর পর্দা নিয়ে উক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন। সকল মুসলিমদের পর্দা করা সুন্নত। মহান আল্লাহ সমস্ত মুসলিমগণ কে পর্দার বিধান করে রেখেছেন। মহিলাদের পর্দা করা একটি সৌন্দর্য।
এবং বদ নজর থেকে আপনি রক্ষা পেতে পারবেন পদ্দা করার কারণে। কিছু কিছু বকাটে ছেলে রয়েছে যারা বেপর্দা হয়ে যদি আপনি চলাফেরা করেন সেক্ষেত্রে তারা খুব খারাপ নজরে থাকায়। তাদের থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনি পর্দা করুন এবং পর্দা করা খুবই সুন্দর। বর্তমান যুগে পর্দা করা অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে। বর্তমান যুগে নারীরা পর্দা কি এখন মডেম হিসেবে ব্যবহার করে ।
তাই তারা এখন পর্দা করে চলাফেরা করেন। কিছু কিছু নারী রয়েছেন যারা পর্দা করতে একদমই পছন্দ করেন না এখন করতে চেষ্টাও করেন না। কিন্তু আসলে এটা ঠিক না আপনি নারী আপনাকে অবশ্যই পর্দা করে চলতে হবে। পর্দা মহিলাদের সৌন্দর্য।
সকল মুসলিম মহিলারা পর্দা করার চেষ্টা করুন। যে মহিলারা সমাজে পর্দা হয়ে চলাফেরা করেন তাদের বিপদ অনেক কি কম। আপনি যদি সমাজে পর্দা হয়ে চলাফেরা করেন আপনার সম্মান টা অন্যরকম হবে তাই অবশ্যই চেষ্টা করুন পর্দা করার জন্য।
যারা পর্দা করতে একদমই পছন্দ করেন না তাদেরকে আমি বলব আপনারা যত দ্রুত পারেন পর্দা করার চেষ্টা করুন। পর্দা মুসলমান নারীদের সৌন্দর্য তাই পর্দা করা উত্তম।
সমাজে কিছু কিছু মহিলার রয়েছেন যারা পর্দা করা কি খুব এড়িয়ে চলেন তাদেরকে আমি বলব এসব থেকে আপনি বের হয়ে পর্দা করার চেষ্টা করো। বর্তমান যুগে বেশিরভাগ লোক মহিলারা পর্দা করে চলাফেরা করে থাকেন। তারা জানতে চায় পর্দা করার উক্তি সম্পর্কে এবং পর্দা করার স্ট্যাটাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব সকলে মনোযোগ দিয়ে আমাদের পোস্ট দেখে নিন।
পর্দা করার জন্য কিছু ছবি নিচে উল্লেখ করা হবে সেগুলো দেখে নিন এবং পর্দা করার চেষ্টা কর।
পর্দা করা নিয়ে ইসলামের কবর বা মহাদেশ রয়েছে। প্রত্যেক মুসলমান নারীদেরকে বেপর্দা করা আবশ্যক। আজকে আলোচনা করব নারীর পর্দা নিয়ে উক্তি। আপনি যদি পর্দা না করতে চান তবে আপনার অনেক বড় বিপদ হতে পারে। হাদিস রয়েছে পর পুরুষের সামনে বেপর্দা হয়ে চলাফেরা করা একদমই উচিত না। যা তারা বদনজরের দেখতে থাকে এজন্য অবশ্যই মুসলিম নারীদেরকে পর্দা করা বিধান করা হয়েছে।
পর্দা হলো মহিলাদের ব্যক্তিগত পছন্দ। আজকের আলোচনাটি জেনে নিন নারীর পর্দা নিয়ে উক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব নিচে উল্লেখিত বিষয়গুলো হতে।
বোরকা নিয়ে উক্তিঃ
যারা বোরকা পড়ে থাকেন তারা কখনো বাহিরে সৌন্দর্যকে প্রকাশ করে না। তার চেষ্টা করে থাকেন ঘরে সুন্দর করে সাজুগুজু করতে এবং সৌন্দর্য দেখাতে।
বাহিরে গেলে তারা কখনও সাজুগুজু করে থাকেন না তারা সব সময় বোরকা পরে থাকেন। বোরকা আমাদের শরীরকে হেফাজতে রাখে এবং বোরকা পরলে দেখতে সুন্দর লাগে। বোরকা পরা সুন্নত। আমাদের অবশ্য বোরকা পরতে হবে।
বাজেট ছেলেদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাহিরে বের হলে বোরকা পরে বের হওয়া দরকার।
বোরকা হিজাব মহিলাদের সৌন্দর্য। তাই আপনারা সবসময় চেষ্টা করুন বোরকা পরার জন্য।
কিছু কিছু মহিলার রয়েছেন যারা গরমকালে বোরকা একদমই পড়তে চান না কিন্তু এটা আসলে উচিত না।
আর যারা গরমে হিজাব বোরকা পড়ে থাকেন মহান আল্লাহতালা তাদের প্রতি অনেক খুশি হন। যেদিন তারা ব্যতীত অন্য কোন ছায়া থাকবে না।
আবিদা
ঈমানদার নারীদেরকে অবশ্যই বোরকা হিজাব পড়া দরকার। সকল নারীদেরকে বোরকা পরতে হবে।
পর্দা নিয়ে ইসলামিক উক্তিঃ
হিজাব আমার পরিচয়
আমার প্রথম পছন্দ
আমার কাছে হিজাব ই সব
যখনই আমি হিজাব পরিধান করি
আমি আখিরাতের জন্য সুসজ্জিত হলাম
পর্দা নিয়ে ইসলামিক বানীঃ
সেই মহিলা সবচেয়ে উত্তম যে তার জীবনের সমস্ত ভালবাসা আমানত রাখে তার স্বামীর জন্য। প্রত্যেক নারীদের উচিত যৌনাঙ্গের ধরে রাখা সুন্নত। একমাত্র স্বামী যৌন অধিকার কেউ হতে পারেন না। এজন্য আপনাকে খুব সতর্কতার ভাবে থাকতে হবে।
- পর্দা আসলে মানুষকে দেখানোর জন্য না নিজেকে পর্দার আড়ালে রাখার জন্য।
- পর্দা হলো কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত পছন্দ
- পর্দা ফ্যাশনের জন্য না বরঞ্চ আপনাকে হেফাজতের রাখার জন্য
পর্দা নিয়ে ইসলামিক ছন্দঃ
পর্দার সাথে নারীর সাথে পুরুষ
এটাই পছন্দ সবচেয়ে ভালো
আমি আমার শালীনতা পবিত্র বজায় রাখার জন্য
বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার পর্দা করি
একটু সাহস করে আপনিও এগিয়ে আসুন
চেষ্টা করুন আপনি পর্দা করার জন্য
পর্দা নিয়ে ইসলামিক স্ট্যাটাসঃ
প্রত্যেকটি মুসলমান মেয়েদের পর্দা করা ফরজঃ
- মহান আল্লাহতালা সকল মুসলমান মহিলাদের পর্দা করার তৌফিক দান করুন ইনশাআল্লাহ।
- পর্দা হল মহিলাদের ইবাদত তাই অবশ্যই পর্দা করতে হবে।
পর্দা নিয়ে ইসলামিক কবিতাঃ
আমার সোনার বাংলার বোনেরা পর্দা করে চলো
নারী হয়ে জন্মেছো পর্দা তোমার প্রয়োজন
পর্দার বিধান পালন করার চেষ্টা করো
পর্দা ছাড়া চলেনা রে কোন মূল্য নেই
মেয়েরা মায়ের জাতি কত যে সম্মান
পর্দা ছাড়া নারী আজ হচ্ছে অপমান
শতশত পত্রিকায় খুলে পাতায় দেখা যায় এসিড ধ্বংসের খবর
পর্দা করে চলো নারী পর্দা করে চলো
সমাজে পাবে সম্মান আখিরাতে সম্মান
শয়তানের পোশাক ভালো পোশাক পরার চেষ্টা করো
পদ্মা করো পর্দা করো পদ্মা
পর্দা হচ্ছে মহিলাদের অহংকার
সূর্য যখন মেঘে ঢাকা থাকে তখন তার সৌন্দর্য কখনো হারায় না
তেমন একজন নারী যদি পর্দা করে তাহলে তার সৌন্দর্য কখনো হারায় না
পর্দা নিয়ে ইসলামিক
পর্দা নিয়ে ইসলামিক ক্যাপশনঃ
পদ্দা করার চেষ্টা করুন বকাটে ছেলে এবং পর পুরুষের সামনে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। পর্দা করতে আপনার যদি লজ্জা লাগে তবে পুরুষদের খারাপ ওর লোলুপ দৃষ্টির যখন আপনার দেহের সমস্ত সমস্ত পড়বে তখন আপনার অনেক গুনা হবে। আপনার সুন্দর্য ঢেকে রাখার জন্য এবং আপনার লজ্জা রাখার জন্য আপনি অবশ্যই পদ্দা করার চেষ্টা করুন।
কিছু কিছু মহিলার রয়েছেন যারা নিজেকে পরিপাটি করে সুন্দর করে সেজে তারা বাহিরে বের হতে পছন্দ করেন কিন্তু এই কাজগুলো একদমই উচিত না। মহান আল্লাহতালা বলেছেন নারীদের পর্দা করার জন্য। নারীরা যেন সবসময় সর্বস্ব শরীর ঢেকে তারপর চলাফেরা।
আপনি যদি পর্দা করে চলাফেরা করতে পারেন সমাজে অনেক সম্মান পাবেন। আমি বলব প্রত্যেক নারীরা পর্দা করার চেষ্টা করুন পদ্মা আপনার জন্য বিধান করা হয়েছে। আপনাকে বুঝতে হবে আপনার সৌন্দর্য হচ্ছে পর্দা। তাই অবশ্যই পর্দা করার চেষ্টা করুন।
পর্দা লঙ্ঘনের ক্ষতিঃ
মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিধান অমান্য করা একদমই উচিত না। পর্দা করা ফরজ তাই তাদের কথা অনুযায়ী পর্দা করা দরকার। যে, ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশনা বিরুদ্ধতা করবে তার মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। হাদিস থেকে এসেছে,
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আমার উম্মতরা সবাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। রাসুল সাল্লাম আরও বলেন যে এমন কোন লোক যেন আসে যারা জাহান্নামে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম জাহান্নামীদেরকে অস্বীকার করেন। সাহাবা একরাম প্রশ্ন করেছেন, কে অস্বীকার তিনি বলেছেন যে, আমার সুন্নাতের আনুগত্য করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে আমার নাফরমানি করবে সে জাহান্নামী হবে। সকল মুসলিম নারীদেরকে পর্দা করা বিধান করা হয়েছে।
পর্দাহীনতা অভিশাপঃ
বর্তমান যুগে এমন কিছু পোষাক বের হয়েছে যে পোশাকগুলো ব্যবহার করা একদম উচিত না। কিন্তু সমাজের সঙ্গে মিশিয়ে তারা এসব পোশাক পড়ে থাকেন।
এই পোশাক পরার কারনে আপনার আপনি জাহান্নামে যেতে পারেন।মেয়েদেরকে বলবো কখনো ছোট ছোট পোশাক পরবেন না এবং খাটো খাটো পোশাক পরবেন না টাইট পোশাক পরবেন না যে পোশাক পড়লে শরীরের অঙ্গ দেখা যায় সে পোশাক গুলো এড়িয়ে চলুন।
এই পোশাকগুলোর কারণে এবং বেপর্দায় চলাফেরার কারণে সেই সে ব্যক্তি বান্দাদের জাহান্নামের স্বীকার করেছেন। হাদিসে পরিভাষায় তা অভিশাপ হিসেবে স্বীকৃতি করেন। নবীজির সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন।
শেষ যুগে উজিরের আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু মহিলা হবে যারা কাপড় পরেও উলঙ্গ রয়েছে। সেই মহিলাদের মাথা হবে উটের নেয়। তাদেরকে অভিশাপ করেন কারণ তারা অভিশপ্ত।
পর্দাহীনরাই জাহান্নামিঃ
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, জাহান্নামীদের দুইদলের রয়েছে। যাদেরকে আমিও নবীজি সাল্লালাহ সালাম কখনো দেখি নাই ।
একদল এমন লোক রয়েছে যাদের হাতে গরুর লেজের মত লাঠির থাকবে যা দিয়ে তারা লোকদের আঘাত করবে। আর অন্য একটি দল হবে এমন নারী যারা পোশাক পরেও উলঙ্গ রয়েছে। মুসলিম
পর্দাহীনতা শয়তানের কাজঃ
পর্দাহীনতার শয়তানের মূল লক্ষ্য। হযরত আদম ও হাওয়া আলাই সাল্লাম এর ঐতিহাসিক সে ঘটনায় শয়তানের মূল্য কে স্মরণ করে। শয়তানের কুপ্ররোচনায় তাদের লজ্জা স্থান প্রকাশ ও পর্দা উন্মোচন হয়েছিল। আল্লাহ বলেন-
হে আদম সন্তান, শয়তান যেন তোমাদের বিরুদ্ধে করতে না পারে। সে যেন তোমাদের আরবি বাবা মাকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছে এমত অবস্থায় তাদের থেকে তাদের পোশাক খুলে দিয়েছেন। যার কারণে তাদের লজ্জাস্থান প্রকাশ হয়ে যায়। সূরা আরাফ আয়াত 27
পর্দাহীনতা চরিত্র ধ্বংসের মাধ্যমেঃ
পর্দাহীনতার চরিত্র ধ্বংসের অন্যতম মাধ্যম। কারণ মহিলারা যখন বেপর্দাভাবে চলাফেরা করেন পুরুষদের দৃষ্টি আকর্ষণ বেড়ে যায়। একজন মহিলার জন্য একজন পুরুষ চরিত্রহীন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। এজন্য আপনি আপনাকে পর্দা রাখুন এবং অন্য পুরুষদেরকে পদ্মা রাখার চেষ্টা করুন। পর্দাহীনতার মারাত্মক ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যারা পর্দা করে না তাদের মনের দূরত্ব চিন্তা চলে আসে। হাদীসে রয়েছে,
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, কোন জাতির মধ্যে যতই অশ্লীলতা প্রকাশ ঘটে ততই তাদের মধ্যে মহামারী দুর্ভিক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় ।
চোখের ব্যভিচার ঘটে বেপর্দায়ঃ
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, চোখের ব্যভিচার হচ্ছে দৃষ্টিপাত করা। পর্দাহীনতার মানুষের চরিত্র ক্ষতি করতে সাহায্য করে। চোখের যিনা হয়ে যায় নারী এবং পুরুষের মধ্যে।
নিঃসন্দেহে দৃষ্টি অবনত রাখার আনুগত্যকে লংঘন করার কারণে পৃথিবীতে এক্ষেত্রে ফাসাদের সূত্রপাত রয়েছে। মানুষের চরিত্র কে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। মহান আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, যখন আমি কোন জনপদ কে ধ্বংস করার ইচ্ছা করি তখন তার অবস্থা সম্পন্ন লোকদেরকে উদ্বুদ্ধ করে থাকি। তারপর তারা পাপাচারে মেতে ওঠে। যার ফলে তাদের ওপর দক্ষ অবধারিত হয়ে পরে। তখন আমি তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে থাকি। সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত 16
পর্দাহীনতা অজ্ঞতার রীতিঃ
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও বিষয়টি সুস্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন। তিনি জাহেলি যুগের সবধরনের রীতি-নীতিকে পদদলিত করেছেন। হাদিসে এসেছে- ‘জাহেলি যুগের সব বিষয় আমার দু পায়ের নীচে।’ (বুখারি)
পর্দাহীনতাকে ঘৃণিত জাহেলি রীতির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। পর্দাহীনতা অন্ধকার যুগের বর্বরদের রীতি হিসেবে পরিচিত। আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে বিষয়টি এভাবে তুলে ধরেছেন- ‘তোমরা ঘরের ভেতরে অবস্থান করবে; জাহেলি (অজ্ঞতার) যুগের অনুরূপ (পর্দাহীন হয়ে) নিজেদের প্রদর্শন করবে না।’ (সুরা আহজাব : আয়ত ৩৩)
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, (হে নবী) মু’মিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করে। আর তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে তবে যা সাধারণত (অনিচ্ছা সত্ত্বে) প্রকাশিত হয়ে যায় তা ভিন্ন।
তারা যেন ওড়না দিয়ে তাদের বক্ষকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাসী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ এবং
নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া অন্য কারো কাছে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন তাদের গোপন সাজ্জসজ্জা প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফল হতে পার। (সূরা নূর: ৩১)
এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হয় যে, নারীরা মাহরাম পুরুষ অর্থাৎ এমন পুরুষ যাদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম বা নিষিদ্ধ, তারা ব্যতীত অন্য কোনো পুরুষের সামনে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করতে পারবে না। এতে পর্দার অপরিহার্যতা প্রমাণিত হয়।
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা নারীদের নিকট যাওয়া থেকে বিরত থাক। তখন এক আনসার সাহাবী বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! দেবরের ব্যাপারে আপনার অভিমত কি ? তিনি বললেন, দেবর হচ্ছে মৃত্যুতুল্য।
(বুখারী: ৫২৩২) আলোচ্য হাদীসে ব্যবহৃত ‘হামউ’ শব্দের প্রকৃত অর্থ হচ্ছে স্বামীর নিকটাত্মীয়। শব্দটির উদ্দেশ্য ব্যাপক। শব্দটি দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, স্বামীর যেকোনো দিকের ভাই, চাচা, মামা, খালু, ফুফা এবং তাদের প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে সন্তান।
যেমন: দেবর, ভাসুর, চাচা শ্বশুর, মামা শ্বশুর, তাদের প্রত্যেকের ছেলে সন্তান ইত্যাদি। ইমাম তিরমিযী, লাইস ইবনু সা’দ, আল্লামা কাযী ইয়ায ও তাবারী সহ বহু আলেম অনুরূপ ব্যাখ্যা করেছেন। অর্থাৎ নারীর জন্য তার দেবর, ভাসুর, চাচা শ্বশুর, মামা শ্বশুর ও তাদের ছেলেদের সামনে নিজেকে প্রদর্শন করা থেকে দূরে থাকতে হবে যেভাবে মৃত্যু থেকে দূরে থাকতে চায়।
আর এ ব্যাপারে সর্বোপরি কথা হলো, নারীরা তাদের গৃহে অবস্থানকালীন মুহুর্তে মাহরাম নয় এমন সকল পুরুষ থেকে পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে চলবে। অর্থাৎ নারীরা এমনভাবে গৃহে অবস্থান করবে যাতে নিকটাত্মীয় বা দূরাত্মীয় কোনো গায়রে মাহরাম বা বেগানা পুরুষের নজরে সে না পড়ে।
গৃহে অবস্থানকালীন মুহুর্তে এভাবে পর্দাবৃত থাকা নারীর জন্য অপরিহার্য। বাইরে গমনকালীন পর্দা: বলা বাহুল্য যে, নারীদের জন্য গৃহের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী।
এজন্য ইসলাম প্রয়োজনে নারীকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, পর্দার বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সা.) তার স্ত্রী হযরত সাওদা (রা.) কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, প্রয়োজনে তোমাদেরকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। (বুখারী: ৪৭৯৫)
মূলত ইসলাম একটি সর্বাঙ্গীন ও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। তাই মানব প্রয়োজনের সকল দিকই ইসলামে বিবেচিত হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে পর্দাবৃত হয়েই বাইরে বের হতে হবে।
কিছুতেই পর্দাহীনভাবে বের হওয়া যাবে না। এ প্রসঙ্গে বিশ্বনবী (সা.) বলেন, নারী পর্দাবৃত থাকার বস্তু, যখনই সে পর্দাহীনভাবে বের হয় তখন শয়তান তার দিকে উঁকি মেরে তাকায়। (তিরমিযী: ১১৭৩)
আর পবিত্র কোরআনে নারীদেরকে বাইরে গমনকালীন মুহুর্তে পূর্ণ পর্দা পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালার সুস্পষ্ট নির্দেশ, ‘হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রী, কন্যা এবং মু’মিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন (প্রয়োজনে বাইরে যাওয়ার সময়) তাদের (পরিহিত) জিলবাবের একাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়।
এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সূরা আহযাব: ৫৯)
এ আয়াতে নারীদেরকে বাইরে গমনের সময় তাদের পরিহিত জিলবাবের একাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইমাম কুরতুবী রহ. বলেন, জিলবাব হলো নারীর এমন পোশাক যা দিয়ে তারা পুরো দেহ ঢেকে রাখে। অর্থাৎ বাইরে গমনের সময় দেহের সাধারণ পোশাক- জামা, পাজামা, ওড়না ইত্যাদির উপর আলাদা যে পোশাক পরিধান করার মাধ্যমে নারীর আপাদমস্তক আবৃত করা যায় তাকে জিলবাব বলা হয়।
আমাদের দেশে যা বোরকা নামে পরিচিত। এ থেকে বুঝা যায় যে, বাইরে গমনের সময় বোরকা পরিধান করে আপাদমস্তক আবৃত করে বের হওয়া আবশ্যক। আর আয়াতে জিলবাবের একাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়ার যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে নেয়া। যা সাহাবী, তাবেয়ী ও নির্ভরযোগ্য মুফাসসিরদের তাফসীর থেকে প্রতিভাত হয়।
এ প্রসঙ্গে আলোচ্য আয়াতের ব্যাখ্যায় প্রখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আল্লাহ তায়ালা (এ আয়াতে) মুমিন নারীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রয়োজনে তারা যখন বাইরে যাবে তখন তারা যেন জিলবাব দিয়ে (পুরো দেহ আবৃত করার পর) তাদের মাথার উপর দিক থেকে তাদের মুখমণ্ডলও আবৃত করে নেয়।
তবে তারা (চলাফেরার সুবিধার্থে) একটি চোখ খোলা রাখবে। (ইবনে কাসীর: ৬/৪৮২)
প্রখ্যাত তাবেয়ী মুহাম্মদ ইবনে সিরীন (রহ.) বলেন, আমি আবীদাহ সালামানীহকে এ আয়াতের ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম তখন তিনি তার মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে নিলেন। অর্থাৎ তিনি বুঝিয়েছেন যে, এ আয়াতে (পুরো দেহ আবৃত করার পর) মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। (ইবনে কাসীর: ৬/৪৮২)
সাহাবী ও তাবেয়ীগণের পরবর্তী মুফাসসিরদের ব্যাখ্যার দিকে তাকালেও দেখা যায় যে, ইবনে জারীর তাবারী, ইবনে কাসীর, বায়যাবী, বাগভী, নাসাফী, সুয়ূতি, আবু বকর জাসসাস, মুফতি মুহাম্মদ শফিসহ সব তাফসীরকারকগণ এ আয়াতের অনুরূপ ব্যাখ্যাই করেছেন। অর্থাৎ সকলে একমত পোষণ করেছেন যে, এ আয়াতে নারীদেরকে তাদের চেহারাসহ আপাদমস্তক আবৃত করে বের হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এতে বাইরে গমনকালীন পর্দার অপরিহার্যতা প্রমাণিত হয়। আর এ ব্যাপারে সর্বোপরি কথা হলো, কোনো প্রয়োজনে নারীকে বাইরে যেতে হলে তখন তার জন্য আবশ্যক হচ্ছে চেহারাসহ গোটা দেহ আবৃত করে পূর্ণ পর্দার সঙ্গে বের হওয়া। যা সর্বসম্মতিক্রমে ফরয। এক্ষেত্রে জিলবাব বা বোরকা পরিধানের মাধ্যমে আপাদমস্তক আবৃত করে নিবে।
প্রয়োজনে চেহারা বা মুখমণ্ডলের জন্য আলাদা নিকাব ব্যবহার করবে। আর হাতের কব্জি ও পায়ের গোড়ালীর জন্য মোজা পরিধান করবে। তবে চলাফেরার সুবিধার্থে রাস্তা-ঘাট দেখার জন্য শুধু চোখ খোলা রাখবে। বৃদ্ধা অবস্থায় পর্দা: বয়স্ক নারীদের জন্য পর্দা পালনের ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা গ্রহণেন অবকাশ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অতিশয় বৃদ্ধা নারী, যারা বিবাহের আশা রাখে না, তাদের জন্য অপরাধ নেই, যদি তারা তাদের সৌর্ন্দয প্রদর্শন না করে তাদের অতিরিক্ত বস্ত্র খুলে রাখে। তবে এ থেকে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’ (সূরা নূর: ৬০)
আয়াতের নির্দেশনা হল, যে বৃদ্ধা নারীর প্রতি কেউ আকর্ষণ বোধ করে না এবং সে বিবাহেরও যোগ্য নয় তার জন্য পর্দার বিধান শিথিল করা হয়েছে। গায়রে মাহরাম ব্যক্তিও তার কাছে মাহরামমের ন্যায় হয়ে যায়। মাহরামদের কাছে যেসব অঙ্গ আবৃত করা জরুরী নয়।
বৃদ্ধা নারীদের জন্য গায়রে মাহরাম পুরুষদের কাছেও সেগুলো আবৃত করা জরুরী নয়। এরূপ বৃদ্ধা নারীর জন্য বলা হয়েছে, মাহরাম পুরুষদের সামনে যেসব অঙ্গ খুলতে পারবে, গায়রে মাহরাম পুরুষদের সামনেও সেগুলো খুলতে পারবে। (তাফসীরে মা’আরেফুল কুরআন: ৬/৪৩৯)
পর্দা করার জন্য কিছু বিধি-বিধান নিয়ম কারণ রয়েছে সেগুলো জেনে নিনঃ
বোরকা হিজাব পড়লে কিন্তু পর্দা হওয়া যায় না। বোরকা সঙ্গে পর্দা করার অনেক নিয়ম রয়েছে সেগুলো জেনে নিন। এমন কিছু পোষাক পড়তে হবে যে পোশাক আপনার অঙ্গ পতঙ্গ দেখা যাবে না। অতিরিক্ত টাইট পোশাক পরা থেকে বিরত থাকুন।
পাতলা পোশাক পরা থেকে বিরত থাকবেন। খাটো খাটো পোশাক করা থেকে বিরত থাকুন। ঢোলা ঢোলা পোশাক পড়ার অভ্যাস করুন।পর্দা শুধু উপরকার হিসেবে নয় আপনি আপনাকে সর্ব শরীর ঢেকে রাখার চেষ্টা করুন সবসময়ের জন্য।
ইসলামে বলা হয়েছে নারীরা হচ্ছে গোপন বিষয়। এ জন্য মহিলাদেরকে গোপন রাখতে হবে পুরুষদের। মহিলারা হলো গোপন বিষয় তাই মহিলাকে গোপন রাখার চেষ্টা করুন ইসলামের দাবি। কোন মহিলাকে বাহিরে কখনো একা বের হতে দেবেন না। বাহিরে বের হতে হলে পুরুষের সঙ্গে বের হতে হবে।
নিজেদেরকে কাপড়ে আবৃত করে পর্দা করার চেষ্টা করুন। হিজাব বোরকা পড়ে এবং সর্ব শরীর ঢেকে নারী-পুরুষ উভয় অসংখ্যা ক্ষতি ও উপকারিতা থেকে মুক্তি পান। আর যারা বেপর্দা চলাফেরা করে তাদের জন্যে রয়েছে উল্লেখিত সব উপকারিতা ও ক্ষতি।
উপরে উল্লেখ বিষয়গুলো পড়ে তারপর জেনে নিন পর্দা করার বিধান সম্পর্কে। যারা বেপর্দা ভাবে চলাফেরা করেন আমাদের এই পোষ্টের সঙ্গে থেকে ভালো করে পড়ে তারপর পর্দা করার চেষ্টা করুন। মুসলিম নারীদেরকে পর্দা করা ইসলামের বিধান করা হয়েছে এ জন্য সকলকে পর্দা করা ফরজ পর্দা করার চেষ্টা করুন। বেপর্দাভাবে চলাফেরা করা থেকে বিরত থাকুন।
হে নারীরা আপনারা যদি আপনাদেরকে পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখতে পারেন তাহলে আপনি অনেক বিপদ থেকে মুক্তি পেতে পারবেন। নিজে মুক্তি রাখার জন্য এবং নিরাপদ রাখার জন্য পর্দা করার অভ্যাস করুন।
মহান আল্লাহতালা সমস্ত মুসলমান নারীদের পর্দা পড়ার তৌফিক দান করুন। মহিলাদের বাহিরে বের হওয়ার সময় নিজেকে ঢেকে পর্দা করে তারপর বের হওয়ার তৌফিক দান করুন। বেপর্দা মহিলা কে হেফাজত করার তৌফিক দান করুন। নারী-পুরুষ উভয়ের পর্দা করা ফরজ।