প্রমান সহ কোটিপতি হওয়ার ‌৪টি ব্যবসা আইডিয়া

অনেকেই কোটিপতি হতে চায় কিন্তু অনেকেরই সেই স্বপ্ন কোনদিন পূরণ হয় না। কেউ আবার অল্প বয়সেই কোটি টাকার মালিক হয়েছেন কিছু ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ গ্রহণ করার কারণে। সাথে সাথে মেধা পরিশ্রম এবং আন্তরিকতার সাথে লেগে থাকার কারণেও অনেক সময় সফলরা সফলতার চূড়ায় পৌঁছে যায়। আবার কেউ সারা জীবন কষ্ট করেও সুখে স্বাচ্ছন্দে জীবন পাড়ি দিতে পারে না। আজকে আমরা এমন কয়েকটি বিজনেস সম্পর্কে কথা বলবো যে ব্যবসার মাধ্যমে অতীতে অনেকেই কোটিপতি হয়েছেন এবং বর্তমানে এটা সম্ভব না বিরাজমান রয়েছে।
প্রমান সহ কোটিপতি হওয়ার ‌৪টি ব্যবসা আইডিয়া
কোটিপতি হওয়ার জন্য অনেক ব্যবসা রয়েছে কিন্তু কোন ব্যবসা করলে খুব তাড়াতাড়ি সফলতা পাওয়া যায় এবং অল্প পরিশ্রমে বেশি অর্থের মালিক হওয়া যায় সেই দিকে নজর দেওয়া দরকার। কেননা এখন এই প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার জন্য এমনই ব্যবসা বেছে নিতে হবে যেগুলো বর্তমান যুগের সাথে খাপ খেয়ে যায় একই সাথে অল্প সময়ে বেশি মুনাফা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
মূল আলোচনায় যাবার আগে কয়েকটি কথা বলে নিচ্ছি যেগুলো আমাদের জীবনে অনেক বেশি কাজে আসবে। আমি যদি বলি আমি কোটিপতি হতে চাই কিন্তু সেই অনুযায়ী কাজ না করি তাহলে কিন্তু আমার সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। কেউ আছে জর্দা বিক্রি করে কোটিপতি হচ্ছে আবার কেউ আছে লাখ টাকা বিনিয়োগ করেও ব্যবসায়ী লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছে না। আপনি যে ব্যবসায় করুন না কেন সেখানে আপনার বিশ্বাস থাকতে হবে যে আপনি এটার মাধ্যমেই নিজেকে সবার মাঝে মেলে ধরবেন। আপনি যেটাই করছেন সেটা তো আপনি আত্মবিশ্বাসের সাথে অটল থাকবেন। যদি আমার বা আপনার বিশ্বাসের জায়গাটা আগে তৈরি হয় যে আমি পারবো তবেই আপনার ব্যবসাকে সেই পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তাই তো সব সময় পজিটিভ চিন্তা করতে হবে যে, দিয়েই হবে অন্যরা পারলে আমি কেন পারবো না।
চলুন আমরা এবার মুল আলোচনায় চলে যাই। আজকের এই অনুচ্ছেদে আমরা চারটি ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব যেটার মাধ্যমে অলরেডি অনেকেই কোটিপতি হয়েছেন।

তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত ব্যবসা

আমরা যদি পৃথিবীর সেরা 10 জন ধনকুবেরের নামের তালিকা খুঁজে বের করি তবে তাদের মধ্যে তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে যারা ব্যবসা করেছেন তারাই এগিয়ে রয়েছেন। এখন আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আমি কাদের কথা বলছি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যবসা করে সফলতা পেয়েছেন এমন কয়েকজনের নাম বলতে বললে আপনি খুব সহজেই বলতে পারবেন তাদের নাম। সবার প্রথম আপনার মনে হবে বিল গেটস এর কথা পরক্ষনেই মনে হবে মার্ক জাকারবার্গ জেনে ফেসবুকের মালিক ঠিক তারপরেই মনে হবে আমাজন ডট কমের সি ই ও জেফ বেজোস এর নাম।
জেফ বেজোস এর মোট সম্পদের পরিমাণ 153.70 বিলিয়ন ডলার এরপর বিল গেটস এর মোট সম্পদের পরিমাণ 102.1 বিলিয়ন ডলার মার্ক জাকারবার্গ এর মোট সম্পদের পরিমাণ 67 দশমিক 4 বিলিয়ন ডলার।
তাহলে এখাতে আপনি কিভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যবসা করার জন্য অনেকগুলো উপায় রয়েছে যেমন ই-কমার্স বিজনেস, তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে বিভিন্ন সার্ভিস প্রদানের মাধ্যমে ব্যবসা, ছোটখাটো আইটি প্রতিষ্ঠান চালু করা অথবা ব্যক্তিগতভাবেও চালু করা যেতে পারে ।
অথবা আজকাল অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং অথবা মুক্ত পেশাজীবীর কাজ করেও ভালো মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করছে যেখানে আমাদের বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই।

রিয়েল এস্টেট অথবা গৃহায়ন ব্যবসা

দিন যত সামনে যাচ্ছে ততই পৃথিবীতে সম্পদের পরিমাণ কমে আসছে আর এই সম্পদের পরিমাণ কমে আসে না ফলে গৃহায়ন বা রিয়েল এস্টেট ব্যবসার পরিধি দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।রিয়েল এস্টেট ব্যবসা অথবা গৃহায়ন ব্যবসা অতীতে যেমন জনপ্রিয় ছিল তেমনি বর্তমানে এদেশের জনপ্রিয়তা অব্যাহত রয়েছে। তবে এই ব্যবসা মূলত আগে থেকে মোটামুটি সম্পদের মালিক এর আয় করে থাকে কারণ এখানে বেশ মোটা অংকের অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়। অনেক সময় এই ব্যবসা পরিচালনার জন্য ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নিতে হয় আর তার জন্য আপনাকে মোটামুটি ভাবে সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য হতে হবে।
রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করে সফল হয়েছেন এমন লোকদের তালিকা বের করতে বললে বা গুগোল এ সার্চ দিলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম চলে আসবে। যার মোট সম্পদের পরিমাণ 3.7 মিলিয়ন ডলার। এছাড়াও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী সারা পৃথিবীতে আমেরিকান টাওয়ার কর্পোরেশন নামক প্রতিষ্ঠানটির নাম সকলেই জানে যাদের মোট সম্পদের পরিমাণ হচ্ছে 72 দশমিক 5 বিলিয়ন ডলার।

ফ্যাশন এবং খুচরা পণ্যের ব্যবসা

মানুষ যতদিন বেঁচে আছে ততদিন তার পোশাকের প্রয়োজন হয় এজন্যই পোশাক এবং ফ্যাশন সংক্রান্ত পণ্যের ব্যবসা চাহিদা অতীতে যেমন ছিল বর্তমানে রয়েছে এবং ভবিষ্যতে চাহিদা কম হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। সারা পৃথিবীতে অনেক বড় বড় বাবাকে প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা ফ্যাশন পোশাকের ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। পোশাকের ব্যবসা করে ধনী হওয়া উদাহরণ দেখতে চাইলে অন্য কোন দেশের ব্যক্তিদেরকে দেখার প্রয়োজন নেই কারণ আমাদের বাংলাদেশ পোশাক শিল্পের উন্নতির কারনেই এখন লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। অনেক বড় বড় শিল্পপতি রয়েছেন আমাদের বাংলাদেশের তারা কোটি টাকার মালিক।
যেহেতু আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ এই পোশাক শিল্প ব্যবসার সাথে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তাই পোশাক খাতে ব্যবসা করা আমাদের দেশের সকলের জন্য মোটামুটি সহজ একটি প্রক্রিয়া। গার্মেন্টস ব্যবসা করার জন্য আমাদের দেশে বেশি একটা পুঁজির প্রয়োজন হয় না। চাইলে ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু করে আস্তে আস্তে এসে ব্যবসাকে বড় করা যেতে পারে।

স্টক বিজনেস বা বিনিয়োগ ও ফাইন্যান্স ব্যবসা

রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার জন্য যৌথ ব্যবসার রয়েছে তার মধ্যে স্টক বিজনেস বা শেয়ার মার্কেট বিজনেস সারাবিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয়। একজন সাধারণ মানুষ ও জানে যে শেয়ার মার্কেট এর বিজনেস এর মাধ্যমে খুব সহজে কোটি টাকার মালিক হওয়া যায়। অভিজ্ঞতা এবং কিছু কৌশল জানা থাকলে এ ব্যবসায় অল্প সময়ে সফলতা পাওয়া যায়।
স্টক মার্কেট বা শেয়ার মার্কেটে রাজকীয় মুকুট এর মালিক যিনি তিনি হচ্ছেন ওয়ারেন বাফেট। তিনি আসলে কিশোর বেলা থেকেই বিনিয়োগ করতে পছন্দ করতেন। বিশ্বের সেরা 5 জন ধনীর তালিকা বের করলে ওয়ারেন বাফেট এর নাম চলে আসে। বর্তমানে তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ 62 বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ থেকে যদি আপনি এই ব্যবসা করতে চান তবে এ বিষয়ের উপর আগে পড়াশোনা করে নিতে হবে। এ বিষয়ে আপনি চাইলে ইউটিউব থেকে মোটামুটি ধারণা নিতে পারেন অথবা বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান অনেক সময় ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে সেখান থেকে আপনি ট্রেনিং নিয়ে নিতে পারেন। একটা ট্রেনিং এর মাধ্যমে আপনি শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা পেয়ে যাবেন এবং আস্তে আস্তে অল্প অল্প করে বিনিয়োগ করতে থাকবেন একটা সময় আপনি এই মার্কেটে অভিজ্ঞ ব্যক্তি হবেন এবং মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *