বাঁচতে দাও কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)
বাঁচতে দাও কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : প্রকৃতি ও পরিবেশ মানুষের বেঁচে থাকার প্রধান আশ্রয়। কিন্তু মানুষের হাতেই দিন দিন এগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কবি শামসুর রাহমান ‘বাঁচতে দাও’ কবিতায় প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রাণিজগতের সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশের কথা বলেছেন। একটি শিশুর বিকাশের সাথে তার চারপাশের সুস্থ পরিবেশের সম্পর্ক রয়েছে। যদি পৃথিবীতে ফুল না থাকে, পাখি না থাকে, সবুজ ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। কবিতায় এইসব প্রতিকূলতাকে জয় করার কথাই সুন্দর করে তুলে ধরা হয়েছে।
বাঁচতে দাও কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : খাল-বিল, নদী-নালা আর পুকুরে ভরা এই দেশ। ছোটবেলায় গ্রামের খাল-বিল-পুকুরেই সাঁতার কাটা শিখেছিলেন নাজির সাহেব। সন্তানদের নিয়ে তিনি এখন শহরে বাস করেন। গ্রামের বাড়িতেও আগের সেই খাল-বিল-পুকুর নেই। সন্তানদের সাঁতার কাটা শেখাতে পারছেন না। নাজির সাহেব আক্ষেপ করে বলেন, এভাবে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটলে আমাদের আগেকার জীবনযাত্রা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে কেবল কাগজে কলমেই বেঁচে থাকবে।
ক. প্রতিদিন কে আলোর খেলা খেলছে?
খ. কাজল বিলে পানকৌড়িকে নাইতে দেওয়ার আহ্বান দ্বারা কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের সাঁতার কাটার সঙ্গে ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার শিশুর কাজটির সাদৃশ্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের নাজির সাহেবের আক্ষেপের মধ্যে ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার মূলসুরটি ফুটে উঠেছে— মন্তব্যটি প্রমাণ করো।
প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রতিদিন জোনাক পোকা আলোর খেলা খেলছে।
খ. কাজল বিলে পানকৌড়িকে নাইতে দেওয়ার আহ্বানের মাধ্যমে কবি পানকৌড়িকে তার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বোঝাতে চেয়েছেন। প্রকৃতির প্রতি বিরূপ আচরণের ফলে পরিবেশের বিপর্যয় নেমে এসেছে। খাল-বিল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে পানকৌড়ি তার বিচরণের স্বাভাবিক পরিবেশ পাচ্ছে না। তাই উক্ত চরণের মাধ্যমে কবি পানকৌড়িকে তার আপন পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
গ. মনের আনন্দে কিছু করার দিক থেকে উদ্দীপকের নাজির সাহবের সাঁতার কাটার সাথে ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার শিশুর কাজটির সাদৃশ্য রয়েছে। আলোচ্য কবিতায় এক শিশু বালির ওপর অনেক কিছু আঁকছে। কবি সেই শিশুকে বাধা না দিয়ে আঁকতে দিতে বলেছেন। কেননা এতে তার মানসিক বিকাশ ঘটবে।
উদ্দীপকের নাজির সাহেব গ্রামের পুকুরে সাঁতার শিখেছেন। কিন্তু জলাশয়ের অভাবে তার সন্তানেরা সাঁতার শিখতে পারছে না। দিন দিন মানুষের কর্মকাণ্ডের জন্যই প্রকৃতি বিরূপ হচ্ছে। ফলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে ব্যাঘাত ঘটছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের সাঁতার শেখার আগ্রহের সঙ্গে ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার শিশুর আঁকাআঁকির সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. “উদ্দীপকের নাজির সাহেবের পরিবেশ বিপর্যয় হওয়ার আক্ষেপের মধ্যে ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার মূলসুরটি ফুটে উঠেছে”— মন্তব্যটি যথাযথ পৃথিবীতে মানুষ তার চারপাশের প্রকৃতি ও পরিবেশকে আশ্রয় করেই বেঁচে থাকে। কিন্তু মানুষ নিজেই দিন দিন প্রকৃতিকে নষ্ট করে স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার পরিবেশ নষ্ট করেছে। ‘বাঁচতে দাও’ কবিতায় তাই প্রকৃতি ও মানুষের স্বাভাবিক বিকাশকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে, মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। ময়লা-আবর্জনায় দিন দিন পরিপূর্ণ হচ্ছে নদী-নালা, খাল-বিল। গ্রাম বা শহরের প্রকৃতি আজ হুমকিস্বরূপ। মানুষ প্রকৃতির হাতে গড়া সন্তানের মতো। কিন্তু তারাই আবার প্রকৃতিকে ধ্বংসের মুখোমুখি করে দিচ্ছে, যা কখনোই মানবজাতির জন্যে সুখকর নয়। আর এ কারণে উদ্দীপকের নাজির সাহেব আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন।
‘বাঁচতে দাও’ কবিতায় প্রকৃতি পরিবেশ ও প্রাণিজগতের সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশের কথা বলা হয়েছে। যদি পৃথিবীতে ফুল না থাকে, সবুজ ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে সকল জীবের স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের নাজির সাহেবের আক্ষেপের মধ্যে ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার মূলসুর বিদ্যমান।
নিজে অনুশীলন করো
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : রফিক অতি দরিদ্র ঘরের সন্তান। পাখির বাসার মতো ছোট ঘরে সে বাস করে। খেতে না পেয়ে তার বুকের হাড় বেরিয়ে গেছে। শত তালি দেওয়া কাপড় পরিধান করে সে। তার বাড়ির পুকুরধারে ব্যাঙের ছানা, শ্যাওলা-পানা কিলবিল করে। ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী দূষিত পানিতে চলে তাদের রান্নাবান্না। মাঝে মাঝেই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিন্তু ডাক্তার দেখানোর মতো অর্থ তার নেই।
ক. শামসুর রাহমান পেশায় কী ছিলেন?
খ. সোনালি চিল ও জোনাকি পোকাকে কবি কীরূপে দেখতে চেয়েছেন?
গ. ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার সাথে উদ্দীপকের বৈসাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. শিশুর যথার্থ বিকাশে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে বলে তুমি মনে কর— উদ্দীপক ও ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : সুমিতা কয়েক বছর আগে গ্রামের বাড়িতে যে বড় বড় গাছগুলো দেখেছিল এবার গিয়ে দেখল গাছগুলো আর নেই। সেখানে গড়ে উঠেছে দোকান আর বাসগৃহ। সন্ধ্যায় গাছের ডালে পাখির কিচির-মিচির শব্দের যে ভিডিও গতবার করেছিল সেটা তার কাছে এখনো আছে। কিন্তু সেই গাছ নেই এখন। কয়েকটি গাছের সাথে সে সৌন্দর্যের অবসান হয়েছে। সুমিতা চিন্তা করে দেখল, পরিবেশের সৌন্দর্য রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।
ক. সুজন মাঝি কোথায় নৌকা বাইছে?
খ. সবাইকে আজ বাঁচতে দাও কথাটি কবি কেন বলেছেন?
গ. সুমিতার দেখা বড় গাছগুলো কেটে ফেলাতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয়ে থাকলে তা ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার আলোকে লিপিবদ্ধ করো।
ঘ. উদ্দীপকের বক্তব্যে ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার মূলভাব ফুটে উঠেছে— মন্তব্যটি প্রমাণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : বহুদিন বিদেশে থেকে সুমন ঢাকায় এসেছে। নতুন নতুন বাড়িঘর আকাশের দিকে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। যানবাহন আগের তুলনায় অনেক বেশি। রাস্তাঘাট তৈরি হচ্ছে। বিল ও জলাভূমি যা ছিল ভরাট হয়ে গেছে। চেনাই যায় না বিশ বছর আগের আর আজকের ঢাকা। জনসংখ্যা বেড়েছে, বেড়েছে গাড়ির কালো ধোঁয়া। প্রাকৃতিক সম্পদ কমেছে অনেক। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কী হবে এ ভাবনাই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
ক. নীল আকাশে কে পাখা মেলেছে?
খ. ‘সবাইকে আজ বাঁচতে দাও’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের পরিবেশ পরিবর্তিত হওয়ার বিপক্ষে ‘বাঁচতে দাও’ কবিতা অবস্থান ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য এক কল্যাণকর পৃথিবী রেখে যাবার বাসনাই উদ্দীপক ও ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার অভিন্ন সুর”— এ উক্তির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : ফটিক খুব ডানপিটে ছেলে। সারাদিন খেলাধুলা ও দুষ্টুমি করাতেই তার আনন্দ। গ্রামের ছেলে ফটিক তার মামার সাথে ঢাকায় আসে পড়াশুনার জন্য। কিন্তু ক’দিন যেতে না যেতেই ফটিক ঢাকা শহরের যান্ত্রিক জীবনে হাঁপিয়ে ওঠে। সে বারবার ফিরে যেতে চায় গ্রামের সেই শান্ত নিবিড় পরিবেশে। কিন্তু মামার জন্য সে গ্রামে ফিরতেও পারে না।
ক. পানকৌড়ি কোথায় নাইছে?
খ. ‘খেলতে দাও, আঁকতে দাও’ কথাটির দ্বারা কবি কী বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের ফটিকের সাথে ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার শিশুটির অমিল তুলে ধরো।
ঘ. ‘যান্ত্রিকতা নয় বরং প্রকৃতির মাঝেই রয়েছে শিশুর পূর্ণ বিকাশ’ – ‘বাঁচতে দাও’ কবিতা ও উদ্দীপক অবলম্বনে বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : স্কুল ছুটির পর বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে সুমি বাসায় গেল। মা সুমিকে বকা দিলেন বৃষ্টিতে ভেজার জন্য, বললেন জ্বর আসতে পারে। সুমির বাবা বিকেলে অফিস থেকে ফিরলে মা তার কাছে নালিশ দিলেন। কিন্তু সুমির বাবা বললেন, ছোট বয়সে বৃষ্টিতে ভিজে স্কুল থেকে ফেরার মধ্যে আনন্দ আছে। তুমি, আমি সবাই এ কাজ করেছি। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম।
ক. শ্যামা পাখি কোথায় নাচ জুড়েছে?
খ. শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে কেন?
গ. উদ্দীপকের সুমির বাবার সাথে ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার কী কী সাদৃশ্য রয়েছে?
ঘ. উদ্দীপকের মূলভাবটি ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ : বাইরে কালবৈশাখীর ঝড় বইছে, তার সাথে বৃষ্টি। নোমান দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। বৃষ্টিতে ভিজে আম কুড়ানো তার শখ। তার মা তাকে বারণ করে বলে, ‘বৃষ্টিতে ভিজলে অসুখ করবে, আর ঝড়ের মধ্যে আম কুড়ানো বিপজ্জনক।’ তার বাবা বলেন, ‘যাক না, আমরা ওদের বয়সে যে দৌড়-ঝাঁপ করেছি ওরা তার অর্ধেক সুযোগও পায় না।’
ক. ঘুঘু পাখি কোথায় ডাকছে?
খ. কবি গোলাপ ফুল আর বালককে কীরূপ স্বাধীনতা দেওয়ার কথা বলেছেন?
গ. উদ্দীপকের নোমানের আচরণ ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার কোন দিকটির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “নোমানের বাবার কথা আর ‘বাঁচতে দাও’ কবিতায় কবির আহ্বান একই সূত্রে গাঁথা”— এ উক্তির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উপরে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও।