শিক্ষিকাকে অপহরণের চেষ্টা, ধাওয়া খেয়ে পালালেন সাবেক স্বামী
পটুয়াখালীর দুমকিতে ফিল্মি স্ট্যাইলে কলেজ শিক্ষিকা অপহরণের আধ ঘণ্টার মধ্যে স্থানীয় জনতা ওই চক্রকে ধাওয়া করে অপহৃতাকে উদ্ধার করেছে। গতকাল শনিবার (১২ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২টায় লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের কলেজ গেইট এলাকায় প্রকাশ্যে এ অপহরণচেষ্টার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় দুমকির এল.এ.এম ইউনাইটেড মহিলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক তাহেরা আলী বাদি হয়ে অভিযুক্ত সাবেক স্বামী সাইফুল্লাহ জাহান মানিকসহ ৭-৮ জন দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে দুমকি থানায় একটি অপহরণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেছে।
মামলার এজাহারে কলেজ শিক্ষিকা তাহেরা আলী রূমা অভিযোগ করেন, কলেজের রুটিন ক্লাশ শেষে বেলা সোয়া ১২টায় বাসার উদ্দেশ্যে কলেজ গেটে যাচ্ছিলেন।
এসময় আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা তার সাবেক স্বামী সাইফুল্লাহ জাহান মানিক ও তার সহদর আরিফের নেতৃত্বে ৭-৮জনের অপহরণকারী চক্র হঠাৎকরে তাকে টেনে হিচড়ে মাহিন্দ্রায় তুলে নিয়ে লেবুখালীর যাওয়া শুরু করে।
এসময় তার ডাক চিৎকার শুনে উপজেলার থানা ব্রিজ এলাকার লোকজন ধাওয়া করে। এরপর প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরত্বে লালখা ব্রিজ এলাকায় অপহরণকারীদের মাহিন্দ্রা আটকে দিলে ধরা খাওয়ার আশঙ্কায় কলেজ শিক্ষিকাকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চক্রটি পালিয়ে যায়।
স্থানীয় শ্রীরামপুর ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে কয়েকজন অটো-মোটরসাইকেল চালক ধাওয়া দিলে ভিকটিমকে রেখে রাস্তায় ফেলে অপহরণকারী দল দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. আল-ইমরানের কাছে অভিযোগ জানিয়ে দুমকি থানায় অপহরণ চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়।
ভিকটিম তাহেরা আলী রুমা জানায়, ইউনিয়নের আঠারগাছিয়া গ্রামের মৃত শাহজাহান বিডিআরের ছেলে যৌতুকলোভী সাইফুল্লাহ জাহান মানিক ও তার পরিবারের সদস্যদের অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে দাম্পত্য কলহের জেরে তিন বছর আগে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তিনি দুমকিতে ভাড়া বাসায় থেকে কলেজে শিক্ষকতা করছেন। বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকেই তার সাবেক স্বামী সাইফুল্লাহ মানিক নানাভাবে তাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। এ ব্যাপারে দুমকি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা আছে। থানায় অভিযোগ করার পর থেকেই এ চক্র তার জীবননাশের অপচেষ্টা করে আসছে। বর্তমানে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতা ভুগছেন বলে জানান তাহেরা আলী।
প্রকাশ্য দিবালোকে এমন অপহরণ চেষ্টার ঘটনায় হতবাক এল.এ.এম কলেজের অধ্যক্ষসহ সব সহকর্মী শিক্ষক-কর্মচারীরা তাৎক্ষণিক থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযুক্তের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুস সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিৎ করে বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।