কোম্পানির আর্থিক বিবরণী
১.কোম্পানি কী?
উত্তর : ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী গঠিত ও নিবন্ধিত কোন প্রতিষ্ঠানকে কোম্পানি বলে।
২.কোম্পানির আর্থিক বিবরণী কী?
উত্তর : আর্থিক বিবরণী বলতে সাধারণভাবে কারবার প্রতিষ্ঠানের নির্ভুল ফলাফল তথ্য প্রদানকারী আয়-বিবরণী (Income statement) এবং সম্পত্তি ও দায়ের সমন্বয়ে গঠিত উদ্বর্তপত্র (Balance sheet) বা আর্থিক অবস্থার বিবরণী (Statement of financial position) কে বুঝায় ।
৩.আর্থিক বিবরণীর উপাদানগুলো কী কী?
উত্তর : আন্তর্জাতিক হিসাব মান – ১ অনুযায়ী আর্থিক বিবরণীর উপাদানগুলো নিম্নরূপ :
i. উদ্বর্তপত্র/ আর্থিক অবস্থার বিবরণী (Balance sheet / ১০ statement of financial position)
ii. আয় বিবরণী / বিশদ আয় বিবরণী (Income statement/comprehensive statement)
iii. মালিকানা স্বত্বের পরিবর্তন বিবরণী (Statement of ১১. আয় changes in owners equity);
iv. নগদ প্রবাহ বিবরণী (Cash flow statement)।
৪.রক্ষিত আয় বিবরণী?
উত্তর : কোন হিসাবকালের প্রারম্ভিক রক্ষিত আয়ের (পূর্ববর্তী বছরগুলোর নীট আয়ের উদ্বৃত্ত) সাথে চলতি হিসাবকালের অর্জিত মুনাফা যোগ করে তা দেখিয়ে এবং নীট আয়ের বণ্টিত অংশ এবং অবণ্টিত উদ্বৃত্ত দেখিয়ে যে বিবরণী তৈরি করে রাখা হয় তাকে সংরক্ষিত বা রক্ষিত আয় বিবরণী বলে।
৫.IAS এর কত ধারা অনুযায়ী আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়?
উত্তর : আন্তর্জাতিক হিসাবমান (IAS)-1 অনুযায়ী আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়।
৬.IAS এর পূর্ণরূপ লিখ।
উত্তর IAS International Accounting
৭. Standards. ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের কোন ধারা অনুযায়ী কোম্পানির আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়?
উত্তর : ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের ১৮৫ ধারার তফসিল ১১ এর প্রথম খণ্ডে উদ্বর্তপত্র এবং দ্বিতীয় পতে লা লোকসান হিসাব প্রণয়নের ছক দেয়া আছে। তফসিল বর্ণিত উক্ত ছক অনুসরণ করে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়।
৮.অন্তবর্তী কালীন প্রতিবেদন কী?
উত্তর : অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের দক্ষতা মূল্যায়ন কিংবা অন্য যে কোন কারণে বার্ষিক প্রতিবেদন ছাড়াও অর্ধ-বার্ষিক অথবা ত্রৈ-মাসিক ভিত্তিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করে থাকে। মধ্যবর্তী সময়ে প্রস্তুতকৃত এ জাতীয় প্রতিবেদনকে অন্তবর্তী প্রতিবেদন বলে।
৯.প্রত্যক্ষ পদ্ধতি কাকে বলে?
উত্তর : আয়-বিবরণীতে প্রতিটি বকেয়াভিত্তিক দফাকে নগদ ভিত্তিতে সমন্বয় করে নিট নগদ প্রবাহ নির্ণয়ের পদ্ধতিকে প্রত্যক্ষ পদ্ধতি বলে।
১০. আয় বিবরণী কী?
উত্তর : কোন নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবসায়িক ফলাফল নির্ধারণের
জন্য মুনাফা জাতীয় আয় এবং মুনাফা জাতীয় ব্যয় নিয়ে যে
বিবরণী প্রস্তুত করা হয় তাকে আয় বিবরণী (Income statement) বলে ।
১১. আয় বিবরণীর উপাদানগুলো লিখ
উত্তর : আয়- বিবরণীর উপাদানসমূহ : ক. রাজস্ব আয় (Gain) খ. রাজস্ব ব্যয় (Expenses); গ. লাভ ঘ.ক্ষতি।
১২. আয় বিবরণী কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর : আয় বিবরণী ২ প্রকার। যথা : ১. একধাপ আয় বিবরণী (Single step income statement) এবং ২. বহুধাপ আয় বিবরণী (Multiple step income statement)।
১৩. বার্ষিক প্রতিবেদন কী?
উত্তর : ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সাধারণত প্রতি বছর একবার এর চূড়ান্ত আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত এবং প্রকাশ করে থাকে। প্রতি বছরের প্রকাশিত এ চূড়ান্ত আর্থিক বিবরণীকে বার্ষিক প্রতিবেদন বলা হয়।
১৪.বহু ধাপ আয় বিবরণী কী?
উত্তর । যে ক্ষেত্রে বিভিন্ন আয় এবং বিভিন্ন বায় বিন্যস্ত করে লেখা হয় এবং তার ভিত্তিতে মুনাফা নির্ণয় করা হয়, তখন তাকে বাপ আর বিবরণী বলে। এক্ষেত্রে কোম্পানির আয়-ব্যয়কে পরিচালনা ও অপরিচালনা এইভাগে ভাগ করা হয়।
১৫. পরিচালন আর কী?
উত্তর : মূল ব্যবসায়িক কার্যকলাপ থেকে উদ্ভূত আয়কে পরিচালন আয় (Operating income) বলে। যেমন- পণ্য বিক্রয়, সেবা আর ইত্যাদি ।
১৬. পরিচালন ব্যয় কী?
উত্তর : মূল ব্যবসা পরিচালনার জন্য যে ব্যয় হয় উহাকে পরিচালন ব্যয় (Operating expenses) বলে। যেমন- শে অফিস কর্মচারীর বেতন, বাড়ি ভাড়া, উপযোগ খরচ ইত্যাদি।
১৭. অপরিচালন আয় এবং অপরিচালন ব্যয় কী?
উত্তর : ব্যবসায় পরিচালনা সংক্রান্ত আয়-ব্যয় ছাড়া অন্য শে সকল আয়-ব্যয় যা নিট লাভ-ক্ষতি নির্ধারণে প্রভাবিত করে। উহাকে অপরিচালন আয় এবং অপরিচালন ব্যয় বলে।
১৮. বিক্রীত পণ্যের ব্যয় কী?
উত্তর : যে পণ্য বিক্রয় হয়েছে তার ক্রয়মূল্যের সাথে ক্রয় সংক্রান্ত খরচ এবং অন্যান্য প্রত্যক্ষ ব্যয় যোগ করলে যে ২৬. মাি ব্যয় পাওয়া যায় তাকে বিক্রীত পণ্যের ব্যয় বলে। অন্যভাবে বলা যায়, নিট বিক্রয় থেকে মোট লাভ বাদ দিলে বিক্রীত পণ্যের ব্যয় পাওয়া যায়।
১৯. বিশদ আয় বিবরণী কী?
উত্তর : নিট লাভ বা ক্ষতি এবং অনার্জিত আয়-ব্যয়ের সমন্বয়ে যে আয় বিবরণী প্রস্তুত করা হয় তাকে বিশদ আয় বিবরনী বা Comprehensive income statement বলে। অতএব আয় বিবরণী অপেক্ষা বিশদ আয় বিবরণীর গণ্ডি অধিক বিস্তৃত! শেয়ারহোল্ডারদের ইক্যুইটি মূল্যের উপর প্রভাব বিস্তারকারী উপাদান যেমন সম্পদ ও দায়ের বাজারমূল্য পরিবর্তনজনিত আয়, আয় বিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত হয় না। কিন্তু তা বিশদ আয় বিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
২০. সমন্বিত আর বিবরণী কী?
উত্তর : আয় প্রদর্শনের দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো সমন্বিত আয় বিবরণী বা সংযুক্ত বিশদ আয় বিবরণী। এক্ষেত্রে নিট আয়ের সাথে অন্যান্য বিশদ আয় বা ক্ষতি সমন্বয় করে মোট বিশদ আয় নির্ণয় করা হয়। এ পদ্ধতিটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো অন্যান্য বিশদ আয় বা ক্ষতির জন্য পৃথক কোন আয় বিবরণী তৈরি করতে হয় না।
২১. মোট লাভ কী?
উত্তর : বিক্রীত পণ্যের উপর যে লাভ যোগ করে বিক্রয়মূল৷ আর্থিক নির্ধারণ করা হয় তাকেই মোট লাভ বলে।
২২.নিট লাভ কী?
উত্তর : মোট লাভের সাথে অপরিচালন আয় যোগ করে উক্ত যোগফল থেকে সকল পরিচালন এবং আয়কর ব্যবস্থাসহ উত্তর ই অপরিচালন ব্যয় বিয়োগ করলে প্রাপ্ত ফলকে নিট লাভ মুনা বলে। কিন্তু বিয়োগফল ঋণাত্মক (Negative) হলে তাকে নিট ক্ষতি বলে ।
২৩.অবচয় কী?
উত্তর : ব্যবহার, সময় অতিবাহিত, স্থায়ীভাবে মূল্যের অবনতি, ক্ষয়, অপ্রচলন ইত্যাদি কারণে স্থায়ী সম্পত্তির ০২. তার মূল্যের যে নিয়মিত বা অবিরাম হ্রাস ঘটে তাকে অবচয় বলে। অবচয় একটি অনগদ অদৃশ্যমান লেনদেন। এর ফলে প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি পায়।
২৪. শেয়ার প্রতি আয় কী?
উত্তর : কোম্পানির কর পরবর্তী নিট আয়কে বিদ্যমান শেয়ার সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে যে ফল পাওয়া যায় তাকেই শেয়ার প্রতি আয় বা Earning per share (EPS) বলে ।
২৫. শেয়ারহোল্ডারকে মালিকানা স্বত্বের পরিবর্তন বিবরণী কী? উত্তর : বিশদ আয় প্রদর্শনের তৃতীয় পদ্ধতি হলো ৪. শেয়ারহোল্ডারদের মালিকানা স্বত্বের পরিবর্তন বিবরণী। একটি নির্দিষ্ট বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ইক্যুইটি হিসাবে যে পরিবর্তন আসে তা দেখানো হয় ।
২৬. মালিকানা স্বত্বের উপাদানগুলো লিখ?
উত্তর : মালিকানা স্বত্বের উপাদান গুলো হলো নিম্নরূপ : ১. শেয়ার মূলধন, ২. সাধারণ সঞ্চিতি, ৩. সংরক্ষিত মুনাফা, ৪. মুনাফা থেকে সৃষ্ট অন্য কোন সঞ্চিতি বা তহবিল ।
২৭. মালিকানা স্বত্ব কী?
উত্তর : কারবারের মোট সম্পত্তির উপর মালিকের দাবিকেই মালিকানা স্বত্ব বলা হয়। কারবারের নিট সম্পত্তিকেই মূলত মালিকানা স্বত্ব বলা হয়ে থাকে। কারবারের সকল সম্পত্তির বর্তমান মূল্য বা বাস্তব মূল্য থেকে এর বর্তমান সকল বহির্দায়ের সমষ্টি বাদ দিলে নিট সম্পত্তি পাওয়া যায় । সুতরাং মালিকানা স্বত্ব (Proprietorship/ Equity) Present value of total assets Present value of all liabilities.
২৮.উদ্বতপত্র বা আর্থিক অবস্থার বিবরণী কী?
উত্তর : কোন একটি তারিখে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা প্রক করাব জন্য এর সম্পত্তি ও দায়গুলোর যে তালিকা দেখা হয় তাকে উদ্ধতপত্র বা আর্থিক অবস্থার বিবরণী বলে।
২৯. আর্থিক অবস্থার বিবরণীর উপাদানগুলো কী কী?
উত্তর : আর্থিক অবস্থার বিবরণীর উপাদানসমূহ : i. সম্পদ ii. দায় ও iii. মালিকানা তহবিল ।
৩০.আর্থিক অবস্থার বিবরণীর উদ্দেশ্যে কী?
উত্তর : একটি তারিখে প্রতিষ্ঠানের সঠিক আর্থিক অবস্থা প্রকাশ করা যাতে স্বার্থ সংশিষ্ট পক্ষগণ উপকৃত হয় ।
৩১. সম্পদ কী? সম্পদ কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর : ব্যবসায়ের অতীত ব্যয় থেকে উদ্ভুত, ভবিষ্যতের মুনাফা অর্জনের কাজে ব্যবহার উপযোগী অর্থ দ্বারা পরিমাপযোগ্য বস্তু বা শেয়ার সমষ্টিকে সম্পদ বলে। সম্পদকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা : ১. চলতি সম্পত্তি (Current assets) এবং (২) অচলতি সম্পত্তি (Non-current assets) ।
৩২.তারল্য কী?
উত্তর : প্রতিষ্ঠানের চলতি সম্পত্তি দিয়ে চলতি দায় পরিশোধের ক্ষমতাকে তারল্য বলা হয়। চলতি অনুপাত, অগ্নিপরীক্ষা, অতি দ্রুত অনুপাত প্রভৃতির সাহায্যে এটি যাচাই বা পরীক্ষা করা হয়।
৩৩.পূর্ণ জামানযুক্ত পাওনাদার কী?
উত্তর : যে সব পাওনাদারের পাওনার জন্য দেনাদারে সম্পত্তি পর্যাপ্ত পরিমাণ জামানত স্বরূপ পাওনাদারে অধিকারে থাকে তাকে পূর্ণ জামানতযুক্ত পাওনাদার বলে।
৩৪.চলতি সম্পত্তি কাকে বলে?
উত্তর : যে সকল সম্পত্তি একটি পরিচালন হিসাবকাল একটি পঞ্জি হিসাবকাল ইহার মধ্যে যেটি ছোট ে সময়ের মধ্যে নগদ আকারে পরিণত হয় বা নগদে পরিণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাদেরকে চলতি সম্পত্তি বলে। সাধারণত পরিচালন কার্যক্রমের মাধ্যমে চলতি সম্পত্তি হয়ে থাকে। হাতে নগদ, ব্যাংকে জমা, অগ্রিম খরচাব মজুদ পণ্য, প্রাপ্য হিসাব, সাপাইজ মজুদ প্রভৃতি চলতি সম্পত্তির উদাহরণ।
৩৫. পাঁচটি চলতি সম্পত্তির নাম কর।
উত্তর : পাঁচটি চলতি সম্পত্তির নাম হলো : হাতে নগদ, মজুদ পণ্য, অগ্রিম খরচাবলী, প্রাপ্য হিসাব সাপাইজ।
৩৬.বাণিজ্যিক সিকিউরিটি বা বিনিয়োগ কী?
উত্তর : ভবিষ্যতে আয়ের উদ্দেশ্যে এর স্বল্প সময় ধরে রাখার জন্য ঋণপত্র বা সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ করা হলে উহারে বাণিজ্যিক সিকিউরিটি বা বিনিয়োগ বলে ।
৩৭. বিক্রয়যোগ্য সিকিউরিটি বা বিনিয়োগ কী?
উত্তর : যে সকল বিনিয়োগ বাণিজ্যিক বিনিয়োগের আওতা পড়ে না এবং এর মেয়াদ পরিপক্কতা পর্যন্ত ধরে রাখ প্রয়োজনীয়তায় পড়ে তাকে বিক্রয়যোগ্য সিকিউরিটি বিনিয়োগ বলে ।
৩৮.প্লান্ট সম্পত্তি কী? অথবা, অচলতি সম্পত্তি কী?
উত্তর : যে সকল সম্পত্তি চলতি সম্পত্তি নয় বরং ভবিষ্য একাধিক বছর যাবৎ প্রতিষ্ঠানের মুনাফা অর্জনে ব্যব করা হয়, তাদেরকে অচলতি সম্পত্তি বা পান্ট স বলে। ভূমি, দালানকোঠা, ইক্যুইপমেন্ট ইত্যাদি এর উদাহরণ ।
৩৯.দায় কী?
উত্তর সম্পদের উপর মাণিকানা স্বত্ত্ব ছাড়া বাহ্যিক পক্ষের
দাবী কে দায় বলে
৪০. চলতি দায় কী
উত্তর : যে সকল দায় এক পুঞ্জীবর্ষ এবং এক হিসাব পরিচালনা কাল এর মধ্যে যেটি কম সেই সময়ের মধ্যে পরিশোধযোগ্য উহাকে চলতি দায় বলে।
৪১. দীর্ঘমেয়াদি পায় কী?
উত্তর : প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী বা অচলতি সম্পত্তি অর্জনের লক্ষ্যে যে দায়ের সৃষ্টি হয় যা এক বছরের অধিক সময় পরে পরিশোধ্য এবং যার ব্যয় বা Cost বহন করতে হয় সে সকল দায়কে দীর্ঘমেয়াদি বা Long term liability বলে। Long term loan, Bonds payable ইত্যাদি এর উদাহরণ।
৪২. লভ্যাংশ কী?
উত্তর : মুনাফার যে অংশ কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারদের
মধ্যে বণ্টন করে তাকে লভ্যাংশ বলে।
৪৩. অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ কী?
উত্তর : চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণার পূর্বে দুটি সাধারণ সভার মধ্যবর্তী। সময়ে যে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয় ডাকে অন্তবর্তী লভ্যাংশ বলে।
৪৪. অদাবি লভ্যাংশ কী?
উত্তর : কোম্পানির ঘোষণাকৃত লভ্যাংশের যে অংশ শেয়ারহোল্ডাকাণ দাবি করেনি তাকে অ্যাবি লভ্যাংশ বা Unclaimed dividend বলে। দাবির সময় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এটি চলতি দায় স্বরূপ উদ্বর্তপত্রে দেখানো হয়।
৪৫. অস্পর্শনীয় সম্পত্তি কী?
উত্তর : যে সকল সম্পত্তির কোন বাহ্যিক অবয়ব নেই অর্থাৎ যে সকল সম্পত্তি স্পর্শ করা যায় না বা দেখা যায় না তাকে অস্পর্শনীয় সম্পত্তি বলে। সুনাম, ট্রেড মার্ক, কপিরাইট ইত্যাদি এ জাতীয় সম্পত্তির উদাহরণ।
৪৬. অবাস্তব সম্পত্তি কী?
উত্তর : যে সকল সম্পত্তির বাস্তব কোন মূল্য নেই তাকে অবাস্তব সম্পত্তি বলে। প্রাথমিক খরচাবলি শেয়ার ইস্যুজনিত বাট্টা এর উদাহরণ।
৪৭. কন্ট্রা সম্পত্তি কী?
উত্তর : কোন সম্পত্তির বিপরীতে কোন ভবিষ্যৎ ব্যবস্থা বা রিজার্ভ তহবিল থাকলে উক্ত ভবিষ্যৎ ব্যবস্থা বা রিজার্ভ তহবিলকে কন্ট্রা সম্পত্তি বলে।
৪৮. পুঞ্জীভূত অবচয় কোন ধরনের সম্পদ?
উত্তর : কন্ট্রা সম্পদ।
৪৯. সম্ভাব্য দায় কী?
উত্তর : ভবিষ্যতে কোন ঘটনা ঘটা বা না ঘটার প্রেক্ষিতে যে দায় সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে, তাকে সম্ভাবনা দায় বলে। যেমন বিল হওয়ার সম্ভাবনাজনিত কারণে উক্ত বাট্টাকৃত বিলের অর্থ একটি সম্ভাব্য দায় হিসেবে বিবেচিত হয়। ক্ষতিপূরণ বাবদ বিচারাধীন মামলার দাবি ইত্যাদি এর উদাহরণ।
৫০. প্রাথমিক খরচ বা প্রারম্ভিক ব্যয় কী?
উত্তর : কোম্পানি গঠনের শুরু থেকে কোম্পানির কার্যারম্ভ পর্যন্ত যে সকল ব্যয় হয় তাদের সমষ্টিকে প্রারম্ভিক ব্যয় বলে। এটি একটি অলীক সম্পত্তি।
৫১. সুনাম অবলোপন কী? উত্তর : সুনাম একটি অস্পর্শনীয় সম্পদ। তবে এর বাস্তব মূল্য আছে। সাধারণত এ বাস্তব মূল্য সম্পন্ন অস্পর্শনীয় সম্পত্তিটি ক্রমগতভাবে প্রতি বছর একটি অংশ আয় বিবরণীতে ব্যয় হিসেবে প্রদর্শন করা হয়। এভাবে এটি অবলোপন করা হয়।
৫২. অবলেখক কে?
উত্তর : কোম্পানির ইস্যুকৃত শেয়ার একটি নির্দিষ্ট হারে কমিশনের বিনিময়ে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে যদি কোন ব্যক্তি দায়িত্ব এবং ঝুঁকি গ্রহণ করে তবে দায়িত্ব গ্রহণকারী উক্ত ব্যক্তিকে অবলেখক বা দায়গ্রাহক বলে ।
৫৩. অবলেখকের কমিশন কী?
উত্তর : কোম্পানী শেয়ার বিক্রয়ের জন্য যে ব্যক্তি বা পক্ষ দায়িত্ব এবং ঝুঁকি নেয় তাকে যে কমিশন দেয়া হয় তাকে দায় গ্রাহকের বা অবলেখকের কমিশন বলে।
৫৪. নগদ প্রবাহ বিবরণী কী?
উত্তর : একটি প্রতিষ্ঠানের একটি নির্দিষ্ট সময়ের সকল নগদ প্রাপ্তি ও প্রদানসমূহকে প্রকৃতি অনুযায়ী পরিচালনা, বিনিয়োগ ও অর্থায়ন কার্যক্রমের ভিত্তিতে বিভাজন করে যে বিবরণী। তৈরি করা হয় তাকে নগদ প্রবাহ বিবরণী বলে।
৫৫. অর্থায়ন কার্যক্রম কী?
উত্তর : প্রতিষ্ঠান দীর্ঘমেয়াদি যে অর্থসংস্থান করে এবং তা পরিশোধ ও লভ্যাংশ প্রদান সংক্রান্ত কার্যাবলিকে অর্থায়ন কার্যক্রম বলে । স্থায়ী সম্পত্তি ক্রয়ের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঋণগ্রহণ, দীর্ঘমেয়াদি বন্ড ইস্যুকরণ এবং সাধারণ ও অগ্রাধিকার শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে অর্থের সংস্থান করা হয়। এটি অর্থায়ন কার্যক্রমের আন্তঃপ্রবাহ। অপরদিকে, ঋণের অর্থ পরিশোধ নগদ লভ্যাংশ প্রধান ইত্যাদি অর্থায়ন কার্যক্রমের বহিঃপ্রবাহ।
৫৬.অনগদ লেনদেন কি?
উওরঃ কিছু লেনদেন আছে যার জন্য নগদ প্রাপ্তি বা প্রদান ঘটে না। অর্থাৎ কোন নগদ প্রবাহ ঘটায় না। এসব লেনদেনকে অনগদ লেনদেন বলে। যেমন অবচয় , বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে মাধ্যমে সম্পত্তি ক্রয়, বোনাস শেয়ার ইস্যু।
৫৭.সম্পত্তির পুস্তক মূল্য কি?
উওরঃ কোন সম্পত্তির আদি মূল্য বা ব্যয় মূল্য থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ক্রমযোজিত অবচয় বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে তাকে সম্পত্তির প্রস্তুক মূল্য বলে ।
৫৮.নগদ প্রবাহ বিবরণীর প্রত্যক্ষ পদ্ধতি কি?
উওরঃ যে ক্ষেত্রে কার্যক্রমের প্রত্যেক উপাদানের জন্য নগদ পৃথকভাবে নির্ণয় করে তার ভিত্তিতে পরিচালন কার্যক্রমের ফলাফল পরিমাপ করা হয়, তখন উক্ত পদ্ধতিকে প্রত্যক্ষ পদ্ধতি বলে।
৫৯.অর্থনৈতিক মূল্য সংযোজন কি?
উওরঃমুনাফা পদ্ধতির একটু উন্নততর সংস্করণ হচ্ছে অর্থনৈতিক মূল্য সংযোজন পদ্ধতি। মুনাফা পদ্ধতির সাথে হিসাব বিজ্ঞানের বিকৃতি সমন্বয় করেই অর্থনৈতিক মূল্য সংযোজন করা হয়।
৬০.মুক্তনগদ প্রবাহ কি?
উওরঃ কোম্পানির অতিরিক্ত নগদপ্রবাহ সৃষ্টির ক্ষমতা পরিমাপের একটি প্রক্রিয়ার নাম মুক্ত নগদ প্রবাহ।