ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কি? What is Indian National Congress?
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ভারতীয় উপমহাদেশ (Indian Sub-continent)-এর প্রথম রাজনৈতিক দল। ব্রিটিশদের পৃষ্ঠপোষকতায় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা হলেও, অতি অল্প সময়ের মধ্যে এ দলের মধ্যে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাবের উদ্ভব হয় এবং শেষ পর্যায়ে এ দলের নেতৃত্বে ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের অবসান হয়। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস একটি অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শ (Non-Communal Political Ideology) নিয়ে জন্ম লাভ করলেও কার্যত তা ভারতের সব ধর্মীয় সম্প্রদায় বিশেষত মুসলমানদের ব্যাপকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যর্থ হয়। এ প্রেক্ষিতে আমরা কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট, উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট (The background of the foundation of Indian National Congress)
১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় এবং ১৮৫৭ সালে মহাবিদ্রোহ বা সিপাহি বিদ্রোহ (Sepoy Mutiny)-এর ব্যর্থতার ফলে ভারতবর্ষের জনগণের ওপর ব্রিটিশ সরকারের শোষণ ও নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে উচ্চ শিক্ষিত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে ক্রমশ ইংরেজ বিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ প্রেক্ষিতে ১৮৭৩-৭৪ সালে ভারতে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হয়। ১৮৭৬ সালে সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ও আনন্দমোহনের প্রচেষ্টায় ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন (Indian Association) প্রতিষ্ঠিত হয়। সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনা সৃষ্টির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় তাঁকে ‘ভারতীয় জাতীয়তাবাদের অগ্রদূত’ বলা হয়। ১৮৭৮ সালে লর্ড লিটনের শাসনামলে দেশীয় ভাষায় প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোর কণ্ঠরোধ করার উদ্দেশ্যে Vernacular Press Act, Arms Act ও Licence Act প্রভৃতি কালাকানুন পাস হলে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। ১৮৮৩ সালে ‘ইলবার্ট বিল’ পাস হলে ব্রিটিশ শাসকদের প্রতি ভারতীয় জনগণের অসন্তোষ ও ঘৃণার মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায়। সুচতুর ব্রিটিশ সরকার দমননীতি প্রয়োগের পাশাপাশি ভারতীয় জনগণের এ গণবিক্ষোভকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে পরিচালনা ও দমনের জন্য বিকল্প পথের চিন্তাভাবনা করতে থাকেন। অ্যালান অক্টাভিয়ান হিউম (A. O. Hume) নামক একজন প্রাক্তন আই.সি.এস (I.C.S) কর্মকর্তা বড়লাট লর্ড ডাফরিনকে ভারতীয় জনগণের আসন্ন গণবিদ্রোহের সম্ভাবনা এবং তা থেকে পরিত্রাণের জন্য একটি ব্রিটিশ অনুগত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান (Political Organization) গঠনের পরামর্শ দেন। এসময় ভারতীয় শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি বিশেষ করে হিন্দু শ্রেণিও একটি রাজনৈতিক সংগঠন সৃষ্টির চেষ্টা করছিল। এভাবে হিউমের উদ্যোগে বড়লাট লর্ড ডাফরিনের সমর্থনে ১৮৮৫ সালের ডিসেম্বর মাসে মুম্বাই শহরে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (India National Congress) নামক একটি রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, দাদাভাই নওরজী ও স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জীর প্রচেষ্টায় এবং ব্রিটিশ সরকারের আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে ভারতীয় উঠতি ধনিক শ্রেণি ও ব্রিটিশ অনুগত শিক্ষিত শ্রেণির আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্র রূপে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের জন্ম হয় এবং তা ক্রমে ক্রমে বিকশিত হতে থাকে। তবে প্রথম থেকেই কংগ্রেস সরকারের সমালোচনায় নরম পন্থা অবলম্বন করেছিল। ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠালগ্নে বলা হয় যে, ইংরেজ শাসনের প্রতি অবিচল আনুগত্যই হবে এ প্রতিষ্ঠানের মূল ভিত্তি।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য (Objectives of the foundation of Indian National Congress)
১৮৮৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা ব্রিটিশ ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করে। এ সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে প্রথম অধিবেশনই এর চারটি মূল উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয়। যথা :
১। ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরত ভারতীয়দের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা।
২। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে মনের সংকীর্ণতা বিদূরিত করে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করা।
৩। বিশিষ্ট জ্ঞানী, গুণী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাথে সলা-পরামর্শ করে ভারতবর্ষের জনগণের সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে তা সমাধানের প্রচেষ্টা চালানো।
৪। আগামী এক বছরের মধ্যে রাজনৈতিক অগ্রগতির জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করা।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বিকাশধারা (Development of Indian National Congress)
কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পর থেকে উদারনৈতিক নেতৃবৃন্দ শান্তিপূর্ণ উপায়ে ব্রিটিশ সরকারের নিকট দাবি-দাওয়া উত্থাপন করতে সচেষ্ট হন। ১৮৯২ সালে হিউম ভারত ছেড়ে চলে গেলে দীর্ঘদিন কংগ্রেস ছিল অনেকটা নিষ্ক্রিয়। এসময়ে কংগ্রেস নেতা রানাডে, ফিরোজশাহ্ মেহতা, সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী, উমেশচন্দ্র ব্যানার্জী প্রমুখ মূলত আবেদন-নিবেদনের মধ্যেই কংগ্রেসের কার্যক্রম চালাতে থাকেন।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ ঘোষিত হলে কংগ্রেস নেতা সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জীর নেতৃত্বে তৎকালীন অখণ্ড বাংলার সর্বত্র বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন অতি দ্রুত ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়। শুরু হয় ইংরেজদের পণ্য বয়কট আন্দোলন যা স্বদেশী আন্দোলনে পরিণত হয়। ১৯০৫ সালে বারানসিতে কংগ্রেসের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয়তাবাদী নেতা লালা লাজপত রাই ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয় প্রতিরোধের সপক্ষে দৃঢ় মত প্রকাশ করেন। এই অধিবেশনে চরমপন্থীদের মতাদর্শেরই বিজয় ঘটে এবং স্বদেশী আন্দোলনের সমর্থনে প্রস্তাব পাশ হয়।
১৯০৬ সালে কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনে সভাপতি নির্বাচন নিয়ে নরমপন্থী ও চরমপন্থীদের মধ্যকার বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। নরমপন্থী নেতা ফিরোজ শাহ্ মেহতা কৌশলে প্রবীণ নেতা দাদাভাই নৌরোজীর নাম সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব করলে অধিকাংশ সদস্য তা সমর্থন করেন এবং কংগ্রেসের বিরোধ আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা প্রশমিত হয়। শেষ পর্যন্ত নরমপন্থীরাই সংগঠনকে নিজেদের দখলে রাখতে সমর্থ হন। ফলে চরমপন্থী নেতাগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে কংগ্রেস ত্যাগ করেন। এ সময়ে কংগ্রেসে কৃষক শ্রেণির কোনো প্রতিনিধি ছিল না। গণআন্দোলনকে এসব মডারেট কংগ্রেস নেতাগণ সযত্নে এড়িয়ে চলার নীতি গ্রহণ করেছিলেন।
১৯০৮ সালে এলাহাবাদ অধিবেশনে কংগ্রেসের ভাঙন আরও স্থায়ীরূপ লাভ করে। গোখলে এসময় ভারত সচিব লর্ড মর্লির নিকট থেকে শাসন সংস্কারের আশ্বাস পেয়ে ব্রিটিশ বিরোধী চরমপন্থী কংগ্রেস নেতাদেরকে আরও দূরে ঠেলে দেন। ব্রিটিশ সরকার সুযোগ বুঝে মডারেট নেতাদের যেমন কাছে টেনে নেন, তেমনি চরমপন্থী নেতা বালগঙ্গাধর তিলককে ৬ বছরের জেল দিয়ে মান্দালয়ে পাঠান। অরবিন্দ ঘোষ মুরারিপুকুর বোমা মামলায় অভিযুক্ত হবার পর অব্যাহতি পেয়ে পণ্ডিচেরীতে যোগ সাধনায় রত হন। বিপিনচন্দ্র পাল সক্রিয় রাজনীতি আপাতত ছেড়ে দেন। লাল লাজপত রাই লন্ডনে পাড়ি জমান। এভাবেই চরমপন্থী আন্দোলনে ভাঁটা পড়ে।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কার্যক্রম (Functions of Indian National Congress)
১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে কংগ্রেসের কার্যক্রম দুটি প্রধান নীতি অবলম্বন করে পরিচালিত হয়। একটি হচ্ছে সরকারি কর্মকাণ্ড ও নীতিমালার অত্যন্ত সংযত ভাষায় সমালোচনা করা; আর অপরটি হচ্ছে সরকারের নিকট বিভিন্ন সংস্কার দাবি বিনয়ের সাথে উত্থাপন করা। এ সংস্কার দাবিদাওয়াগুলো ছিল মূলত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক।
রাজনৈতিক দাবিগুলো ছিল নিম্নরূপ :
১। ভারত সচিবের পরামর্শ সভার বিলোপ অথবা তিন জন ভারতীয়কে পরামর্শ সভায় সদস্য হিসেবে গ্রহণ।
২। কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক শালন পরিষদে যথাক্রমে দুই জন ও একজন ভারতীয় সদস্য অন্তর্ভুক্ত।
৩। কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক শাসন পরিষদের সম্প্রসারণ এবং নির্বাচিত সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রতিষ্ঠাকরণ।
৪। সরকারি চাকরিতে ভারতীয়দের যথোপযুক্ত সংখ্যায় নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ।
৫। শুধু ইংল্যান্ডের পরিবর্তে একই সময় ভারত ও ইংল্যান্ডে সি. এস (Civil Service) পরীক্ষা গ্রহণ।
৬। আইনসভায় বাজেটে ভারতীয় সদস্যদের ভোটদান করার অধিকার প্রদান।
অর্থনৈতিক দাবিগুলো ছিল নিম্নরূপ :
১। ভারতে দারিদ্র্য ও দুর্ভিক্ষের কারণ অনুসন্ধানের জন্য তদন্তের দাবি উপস্থাপন করা হয়।
২। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রসার রোধ দাবি করা হয়। কেননা এ সময় কংগ্রেস নেতাদের অভিমত কৃষকরা তাদের জমি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হতো।
৩। ভারতীয় শিল্পকে সংরক্ষণের জন্য অবাধ বাণিজ্য নীতি রদের দাবি জানানো হয়।
৪। কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে রায়তওয়ারি এলাকায় রাজস্ব হ্রাস এবং রাজস্ব আদায়ে কঠোরতা হ্রাস করার দাবি করা হয়। এ ছাড়া কৃষকের জন্য চিরস্থায়ী কর ব্যবস্থার দাবি জানানো হয়।
৫। লবণ কর কমানোর দাবি করা হয়।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব (Importance to establish of the Indian National Congress)
নিম্নে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব আলোচনা করা হলো :
১। রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টি : কংগ্রেস ভারতীয় জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা কংগ্রেসের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো সমগ্র ভারতে রাজনৈতিক উদ্দীপনার সৃষ্টি করে এবং অনেক স্থানে রাজনৈতিক সভা-সমিতিতে এগুলো ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়।
২। দেশাত্মবোধ সৃষ্টি : ভারতীয় জনগণের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করতে কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পর সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল হিসেবে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের একই মঞ্চে সমবেত করার মাধ্যমে সকল জনগণের মধ্যে দেশাত্মবোধ সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করে।
৩। শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের ক্ষেত্রে : কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার প্রথম থেকে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ও প্রাদেশিক কাউন্সিলে নির্বাচনের মাধ্যমে ভারতীয় প্রতিনিধি গ্রহণের দাবি জানায়। তাছাড়া শাসন ক্ষেত্রে ভারতীয়দের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার জন্য আরও অনেক দাবিদাওয়া উপস্থাপন করে।
৪। অর্থনৈতিক সংস্কারের ক্ষেত্রে : অর্থনৈতিক সংস্কারের ক্ষেত্রেও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ ভারতীয় জনসাধারণের আর্থিক দুর্দশার জন্য ইংরেজ সরকারকে দায়ী করেন এবং উচ্চহারে রাজস্ব ধার্য ও রাজস্ব আদায়ে কঠোর পদ্ধতির সমালোচনা করেন। কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার দাবির পাশাপাশি ভারতকে শিল্পে উন্নত করতেও কংগ্রেস দাবি জানায় ।
৫। ভারতীয় জাতীয়তাবাদের সৃষ্টি এবং ভারত স্বাধীনতা : ১৮৮৫ সালে জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। ভারতীয়দের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ ও বিদ্রোহী মনোভাবকে নিরাপদ বহিঃপ্রকাশের পথ করে দেওয়ার জন্য কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করা হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই কংগ্রেস ভারতীয় জনগণের রাজনৈতিক আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক এবং ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান মঞ্চ হিসেবে আবির্ভূত হয়। তাই বলা হয়, কংগ্রেস ভারতের জাতীয়তাবাদী চেতনাকে সংগঠিত এবং সুসংহত করে জাতিকে স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারায় প্রবাহিত করে। অবশেষে কংগ্রেস ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটায় এবং ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
এ সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তরঃ–
প্রশ্ন-১। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কি? (What is Indian National Congress?)
উত্তর : ভারতের একটি জাতীয় রাজনৈতিক দল।
প্রশ্ন-২। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালে?
উত্তর : 1885/১৮৮৫।
প্রশ্ন-৩। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?
উত্তর : এ. ও. হিউম।
প্রশ্ন-৪। Who was the first president of the Indian National Congress?/ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর : Womesh Chunder Bonnerjee/উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রশ্ন-৫। জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মুসলিম সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর : Badruddiu Tayabji/বদরুদ্দিন তায়বজী।
প্রশ্ন-৬। জাতীয় কংগ্রেসের জনক কাকে বলা হয়?
উত্তর : অ্যালান অক্টাভিয়াম হিউম।
প্রশ্ন-৭। Who was the viceroy of india when the indian national congress was founded?/জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার সময় ভারতের ভাইসরয় কে ছিলেন?
উত্তর : Lord Dufferin/লর্ড ডাফরিন।
প্রশ্ন-৮। জাতীয় কংগ্রেস কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর : ১৮৮৫ সালের ২৮শে ডিসেম্বর।
প্রশ্ন-৯। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর : উমেশচন্দ্র ব্যানার্জী।
প্রশ্ন-১০। Who was the first woman President of the Indian National Congress?/ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর : Annie Besant/অ্যানি বেসান্ত (১৯১৭, কলকাতা অধিবেশন)।
ভারতীয় কংগ্রেসের প্রথম ভারতীয় মহিলা সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর : সরোজিনী নাইডু (১৯২৫, কানপুর অধিবেশন)
জাতীয় কংগ্রেসকে তিন দিনের তামাশা কে বলেছেন?
উত্তর : অশ্বিনীকুমার দত্ত।
When national congress declared purna swaraj as its ultimate goal?/কখন কংগ্রেসে পূর্ণ স্বরাজকে নিজেদের লক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করেছিল?
উত্তর : 26th January, 1930/২৬ জানুয়ারি, ১৯৩০।
জাতীয় কংগ্রেসের রামগড় অধিবেশন কবে হয়েছিল?
উত্তর : 1940 AD/১৯৪০ সালে।
জাতীয় কংগ্রেসের সুরাট অধিবেশন কত সালে হয়?
উত্তর : 1907 AD/১৯০৭ সালে।
সুভাষ চন্দ্র বোস (Subhash Chandra Bose) ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হয়েছিলেন প্রথমবারের জন্য কত সালে?
উত্তর : 1938/1938।
ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের কোন অধিবেশনে পূর্ণ স্বরাজের প্রস্তাব গৃহীত হয় ?
উত্তর : Lahore/লাহোর।
কে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসকে ‘অতি ক্ষুদ্র এক আণুবীক্ষণিক সংস্থা’ বলে উপহাস করেছিলেন?
উত্তর : লর্ড ডাফরিন।
ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের কোন অধিবেশনে নরমপন্থী এবং চরমপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ চরমে উঠেছিল?
উত্তর : সুরাট।
কংগ্রেসের কোন নেতা নরমপন্থীদের মধ্যে অবস্থান করেও চরমপন্থীদের সমর্থন করেছিলেন?
উত্তর : অশ্বিনীকুমার দত্ত।
Who presided over the second session of the Indian National Congress?/ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনে কে সভাপতি ছিলেন?
উত্তর : Dadabhai Naoroji/দাদাভাই নৌরজি।
কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দল কবে গঠিত হয়েছিল?
উত্তর : 1934/১৯৩৪
1940-46 সাল পর্যন্ত কংগ্রেসের সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর : মৌলানা আবুল কালাম আজাদ।
Non-Cooperation Movement was passed in which session of Indian National Congress?/ভারতের জাতীয় কংগ্রেস-এর কোন অধিবেশনে অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচী গ্রহন করা হয়?
উত্তর : Kolkata/কলকাতা।
কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনে কে অনুপস্থিত ছিলেন?
উত্তর : সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।
Who was nominated President of the Indian National Congress after the resignation of Subhash Chandra Bose?/সুভাষচন্দ্র কংগ্রেস সভাপতির পদ ত্যাগ করে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ও কংগ্রেসের সভাপতি কে হন?
উত্তর : Rajendra Prasad/রাজেন্দ্রপ্রসাদ।
কে কংগ্রেসী আন্দোলনকে অস্ত্রবিহীন গৃহযুদ্ধ বলেছিলেন?
উত্তর : থিওডোর বেক।