ফরমালিন টেস্ট করার উপায়
সাধারণত মাছ, মাংস, দুধ, মিষ্টি, আম, আপেল ইত্যাদির মাঝে ফরমালিন মেশানো হয়। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাৎক্ষণিক ফরমালিন টেস্টের জন্য মাছ আমদানি পয়েন্টে সাময়িক সময়ের জন্য ল্যাবরেটরি স্থাপন করে। তবে গ্রামে, হাটে,বাজারে,মাছে তুচ্ছভাবে যে ফরমালিন প্রয়োগ হচ্ছে সে ব্যাপারে কিছুই করা যাচ্ছে না।
এটা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার, এজন্য কয়েক হাজার ল্যাবরেটরি দরকার। যাতে করে ক্রেতারা নিজেরায় ফরমালিন টেস্ট করতে পারে এবং ফরমালিন দেওয়া জিনিস কেনা থেকে বিরত থাকেন।
ফরমালিনের প্রধান কাজ হলো পচন রোধ করা। সাধারণত ৩৭-৫০% ফরমালডিহাইডের সাথে ১৫% মিথাইল অ্যালকোহল মেশালে ফরমালিন তৈরি হয়। তাই ফরমালডিহাইডের উপস্থিতিই ফরমালিনের অস্তিত্ব প্রমাণ করে । আর এর পরীক্ষার জন্য কিছু কমপ্লেক্স ক্যামিকেলের প্রয়োজন হয়। এগুলো হলো –
- ফরমালডিহাইডের দ্রবণের সাথে ২ সিসি ফিনাইল হাইড্রোজাইন হাইড্রোক্লোরাইড (১%) এবং ১ সিসি ৫% পটাশিয়াম ফেরিসায়ানাড দিয়ে তারপর আবার ৫ সিসি ঘনীভূত হাইড্রোক্লোরিক এসিড মেশালে সম্পূর্ণ দ্রবণ গাঢ় গোলাপি রং হয়ে থাকে। একে সেরিভারস টেস্ট বলা হয়।
- ফরমালডিহাইডের হালকা দ্রবণ যেমন মাছে ফরমালিন দেওয়া থাকলে তা ধুয়ে তার পানওতে ১ সিসি সোডিয়াম নাইট্রোপ্রোসাইড মেশালে গাঢ় সবুজ নীল রং ধারণ করে। এতে ফরমালিনের অস্তিত্ব প্রমাণ করে। এসকল ক্যামিকেল পাওয়া অনেক কঠিন এবং দামও অনেক।
তাই সহজ একটি পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিন। সন্দেহযুক্ত ফরমালিন মাছ ধুয়ে পানিতে ৩% হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড মেশালে ফরমালডিহাইড অক্সিডাইজড হয়ে ফরমিক এসিডে রূপান্তরিত হয়। ফরমিক এসিডের প্রমাণের জন্য সে পানিতে অল্প মারকিউরিক ক্লোরাইড মেশালে সাদা রঙের তলানি পড়বে। এতেই ফরমালিন প্রমাণিত হবে।
মাছ থেকে ফরমালিন দূর করার উপায়
- পানিতে প্রায় ১ ঘন্টা মাছ ভিজিয়ে রাখলে ফর্মালিনের মাত্রা ৬১% কমে যায়।
- লবণাক্ত পানিতে ফর্মালিনযুক্ত মাছ ১ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখলে ৯০% ফর্মালিন কমে যায়।
- চাউল ধোয়া পানিতে প্রথমে এবং পরে সাধারণ পানিতে ফর্মালিনযুক্ত মাছ ধুলে ৭০% ফর্মালিন কমে যায়।
- তবে সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো ভিনেগার ও পানির মিশ্রণে মাছ ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে ১০০% ফর্মালিনই দূর হয়ে যায়।
ফল ও সবজি থেকে ফর্মালিন দূর করার উপায়
ফল খাওয়ার আগে সামান্য গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে ফল ও সবজি ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে ফর্মালিন দূর হয়ে যায়।