পানি দূষণ কি বা কাকে বলে? পানি দূষণের কারণ ও রোধের উপায়
জীবের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো পানি। পানির অপর নাম জীবন। তবে দূষিত পানি প্রাণহানীর কারণ হতে পারে। সাধারণত পানিতে বিষাক্ত দ্রব্য বা দূষিত বর্জ্য পদার্থ মিশলে তা মানব ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকেই পানি দূষণ বলে।
পানি দূষণ মূলত জলাশয়ের (যেমন – উদ্যান, নদী, মহাসাগর,ভূগর্ভস্থ পানি ইত্যাদি) দূষণ। পরিবেশের কোন অপ্রয়োজনীয় পদার্থ পানির সাথে মিশে পানির ভৌত, রাসায়নিক ও জৈবিক বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন হয় এবং তার থেকে উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানুষের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে পানির সে আশঙ্কাকে পানি দূষণ বলে।
পানি দূষণের কারণ
- শিল্প কারখানার দূষিত রসায়ন পদার্থ যেমন – অ্যামোনিয়া, ক্লোরাইড,সায়ানাইড এবং বিভিন্ন ধাতুর জিঙ্ক, পারদ, সীসা ইত্যাদি পানির সাথে মিশে পানি দূষিত করে।
- গৃহস্থালির আবর্জনা নদীনালা, খালবিল, হ্রদ, সমুদ্র ইত্যাদির পানির সাথে মিশে পানি দূষণ করে।
- নদীনালা, পুকুরে গোসল করলে, গরু গোসল করালে, কাপড় চোপড় ধুলে পানি দূষিত হয়।
- জমিতে রাসায়নিক সার, কীটনাশক ইত্যাদি দেওয়ার ফলে সেগুলো বৃষ্টির সাথে মিশে নদীনালা, পুকুরে পড়ে পানিকে দূষিত করে।
- পারমাণবিক চুল্লি কেন্দ্রে, বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলো সমুদ্র বা পানিতে ফেলা হয় যার ফলে পানি দূষণ ঘটে।
- মাটির নিচের স্তর থেকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে অতিরিক্ত পানি তুলে নেওয়ার ফলে মাটির নিচে ফাঁকা জায়গায় আর্সেনিক বাতাসের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ধাতব যৌগ তৈরি করে পানিকে দূষিত করে।
পানি দূষণ রোধের উপায়
শিল্পায়ন, নগরায়ন ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে আর পানির বিরামহীন অপচয় দূষণমুক্ত পানির সীমিত ভান্ডার দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। এমতাবস্থায় পানির সঠিক ব্যবহার, সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি। নিম্নলিখিত উপায়গুলো অনুসরণ করলে তা সম্ভব হবে –
- পানি প্রতিরোধ ও দূষণ আইন ১৯৭৪-১৯৯৮ (সংশোধিত) ও পানি প্রতিরোধ ও দূষণ ১৯৭৭-১৯৯১ (সংশোধিত) পানি দূষণ আইন প্রয়োগ করে, দূষণকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিলে পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
- উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে দূষিত পানি পরিশোধন করতে হবে।
- পানির সঠিক ব্যবহার করতে হবে।
- পানির অপচয় করা যাবে না ইত্যাদি।