হাইড্রোজেন বা উদজান বা Hydrogen সবচেয়ে হালকা মৌলিক পদার্থ। এটি পর্যায় সারণীর প্রথম রাসায়নিক মৌল। এর পারমাণবিক সংখ্যা ১ ও প্রতীক H।
প্রতীক | H |
---|---|
পারমাণবিক সংখ্যা | 1 |
পারমাণবিক ওজন | 1 |
পর্যায় সারণিতে গ্রুপ | 1 |
স্ফুটনাঙ্ক | −423.17 ° F ((252.87 ° C) |
গলনাঙ্ক | −434.45 ° F (− 259.14 ° C) |
আপেক্ষিক গুরুত্ব | 0.08988 |
খ্রিষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে প্যারেসলাস বলেছিলেন যে, ধাতুর সাথে এ্যাসিডের বিক্রিয়ার ফলে একটি গ্যাস উৎপন্ন হয়। ১৭৫৩ খ্রিষ্টাব্দে হেনরী ক্যাভেণ্ডিস গ্যাসটি নিয়ে সর্বপ্রথম পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেন যে, আগুনের সংস্পর্শে আসলে গ্যাসটি জ্বলে ওঠে। এজন্য তিনি গ্যাসটির নাম দেন – দাহ্য বায়ু (Inflammable Air)।
১৭৮৮ খ্রিষ্টাব্দে ল্যাভয়সিয়ে (Lavoisier) প্রমাণ করেন যে, হাইড্রোজেন একটি মৌলিক পদার্থ। এই গ্যাসটি বাতাসে জ্বলার কারণে পানি উৎপন্ন করে। এই কারণে তিনি এর নাম দেন পানি উৎপাদক বা হাইড্রোজেন।
বায়ুমণ্ডলে এই গ্যাস মৌলিক ও যৌগিক উভয় রূপেই পাওয়া যায়। সাধারণভাবে বায়ুমণ্ডলের ওজনের শতকরা ১ ভাগ হাইড্রোজেন আছে। সৌরমণ্ডলে, আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত গ্যাসে, অন্যান্য প্রাকৃতিক গ্যাসের খনিতে আবদ্ধ অবস্থায় এবং বায়ুতে মৌলিক হাইড্রোজেনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। প্রকৃতিতে যৌগাবস্থায় পানি, এসিড, ক্ষার, পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য জৈব পদার্থে পাওয়া যায়। সাধারণ হাইড্রোজেন, দুই ধরনের হাইড্রোজেনের সংমিশ্রণে গঠিত হয়। এদের একটি হল অর্থো- হাইড্রোজেন, অপরটি প্যারা- হাইড্রোজেন। অর্থো এবং প্যারা কি সেটা আপনারা উপরের কাছে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আমরা এখানে বুঝার সুবিধার্থে সঙ্গাটা জানিয়ে দিচ্ছি।
অর্থো ও প্যারা হাইড্রোজেন কি?
কোনো হাইড্রোজেনের অণুতে অবস্থিত প্রোটনদ্বয়ের ঘূর্ণন যদি একই দিকে হয়, তবে তখন তাকে অর্থো-হাইড্রোজেন বলে।
অপরদিকে কোনো হাইড্রোজেনের অণুতে অবস্থিত প্রোটনদ্বয়ের ঘূর্ণন যদি পরস্পরের বিপরীত দিকে হয়, তখন তাকে প্যারা- হাইড্রোজেন বলে।
তবে, এই হাইড্রোজেন দুইটির রাসানিক ধর্ম একই হলেও এদের ভৌত ধর্মে কিছু কিছু পার্থক্য দেখা যায়। সাধারণত প্যারা হাইড্রোজেনের তুলনায় অর্থো-হাইড্রোজেনের আণবিক শক্তি বেশি। যে কারণে ২৫% তাপমাত্রার বৃদ্ধির ফলে প্যারা-হাইড্রোজেন ভেঙে যায়। কিন্তু অর্থো-হাইড্রোজেন ভাঙার জন্য ৭৫% তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রয়োজন হয়।
হাইড্রোজেন উৎপাদন পদ্ধতি
হাইড্রোজেন উৎপাদনের অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত পদ্ধতি হল হাইড্রোজেনের জলীয় বিশ্লেষণ।