কোষ কি বা কোষ কাকে বলে? কোষের প্রকারভেদ

কোষ কি / কোষ কাকে বলে?

কোষ এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে সেল (Cell)। এটি লাতিন শব্দ সেলুনা থেকে এসেছে। যার অর্থ একটি ছোট কক্ষ। বিজ্ঞানী রবার্ট হুক প্রথম এ নামটি ব্যবহার করেন।

বৈষম্যভেদ্য পর্দা দ্বারা আবৃত এবং জীবজ ক্রিয়াকলাপের একক, যা অন্য সজীব মাধ্যম ছাড়াই নিজের প্রতিরূপ তৈরি করতে সক্ষম তাকে কোষ বলে।

কোষের প্রকারভেদ

সব ধরনের জীব কোষ একরকম নয়। এদের মধ্যে যেমন গঠনগত পার্থক্য রয়েছে , তেমনি রয়েছে আকৃতি ও কাজের পার্থক্য। নিউক্লিয়াসের গঠন এর ভিত্তিতে কোষ দুই প্রকার। যথা:

  • আদি কোষ বা প্রাককেন্দ্রিক কোষ
  • প্রকৃত কোষ বা সুকেন্দ্রিক কোষ

আদি কোষ বা প্রাককেন্দ্রিক কোষ

যে কোষে কোন সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না তাকে আদি কোষ বা প্রাককেন্দ্রিক কোষ বলে। এদেরকে আদি নিউক্লিয়াসযুক্ত কোষ ও বলা হয়। যেমন- ব্যাকটেরিয়া ও সায়ানোব্যাকটেরিয়ার কোষ।

এসব কোষের নিউক্লিয়াস কোন পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে না। এ কারণে নিউক্লিয় বস্তু সাইটোপ্লাজমে ছড়ানো থাকে। এছাড়াও এসব কোষে মাইট্রোকন্ডিয়া, প্লাস্টিড, এন্ডোপ্লাজমিক ,রেটিকুলাম ইত্যাদি অঙ্গানু থাকে না কিন্তু রাইবোজোম থাকে। ক্রোমোজোমের শুধুমাত্র ডিএনএ থাকে। নীলাভ সবুজ শৈবাল বা ব্যাকটেরিয়া এ ধরনের কোষ পাওয়া যায়।

প্রকৃত কোষ বা সুকেন্দ্রিক কোষ

যে কোষের নিউক্লিয়াস সুগঠিত অর্থাৎ নিউক্লিয়ার দিল্লি দিয়ে নিউক্লিয় বস্তু পরিবেষ্টিত ও সুগঠিত তাকে প্রকৃত কোষ বা সুকেন্দ্রিক কোষ বলে। যেমন – সকল উদ্ভিদ ও প্রাণীর কোষ।

এ কোষে রাইবোজোম সহ সকল অঙ্গাণু উপস্থিত থাকে। ক্রোমোজোমের ডিএনএ ,প্রোটিন ,হিস্টোন এবং অন্যান্য উপাদান থাকে। অধিকাংশ জীবকোষ এ ধরনের হয়।

কাজের ভিত্তিতে প্রকৃত কোষ দুই ধরনের। যথা:

  • দেহ কোষ
  • জনন কোষ

দেহ কোষ

যেসব কোষ কোন জীবের দেহ গঠন করে তাদেরকে দেহ কোষ বলে। বহুকোষী জীবের দেহ গঠনে এসব কোষ অংশগ্রহণ করে।

মাইটোসিস পদ্ধতিতে বিভাজন এর মাধ্যমে দেহ কোষ বিভাজিত হয় এবং এভাবে দেহের বৃদ্ধি ঘটে।বিভিন্ন তন্ত্র ও অঙ্গ পতঙ্গ গঠনে দেহ কোষ অংশ নেয়।

জনন কোষ

যেসব কোষ জীবের প্রজননে অংশগ্রহণ করে তাদেরকে ,জনন কোষ বলে। যৌন প্রজনন ও জনঃক্রম দেখা যায় এমন জীবে জনন কোষ উৎপন্ন হয়। মিয়োসিস পদ্ধতিতে জনন মাতৃকোষ এর বিভাজন ঘটে এবং জনন কোষ উৎপন্ন হয়।

জনন কোষ আবার দুই প্রকার যথা:

  • পুং জনন কোষ বা পুং গ্যামেট বা শুক্রাণু
  • স্ত্রী জনন কোষ বা স্ত্রী গ্যামেট বা ডিম্বাণু

ক্রোমোসোমের ভিত্তিতে কোষ দুই প্রকার ।

  • হ্যাপ্লয়েড কোষ
  • ডিপ্লয়েড কোষ

হ্যাপ্লয়েড কোষ

যে কোষের নিউক্লিয়াসে এক সেট ক্রোমোসোম থাকে তাকে হ্যাপ্লয়েড কোষ বলে। যেমন-পুং জনন কোষ বা শুক্রাণু।

পুরুষের শুক্রানুতে এক সেট অর্থাৎ ২৩ টি ক্রোমোসোম থাকে

এবং স্ত্রী জনন কোষ বা ডিম্বানুতে এক সেট ২৩ টি ক্রোমোসোম থাকে।

ডিপ্লয়েড কোষ

যে কোষের নিউক্লিয়াসে 2 সেট ক্রোমোসোম থাকে তাকে ডিপ্লয়েড কোষ বলে। যেমন – জাইগোট‌, আমাদের সকল দেহ কোষ। আমাদের জায়গাটার এবং প্রতিটি দেহকোষে ২ সেট অর্থাৎ ৪৬ টি ক্রোমোসোম থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *