ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ে আয় করুন
ন্টারনেট থেকে অনলাইন আয় করতে চাইলে আপনি অনেকভাবেই করতে পারেন।তবে আজকে আমরা আপনাকে যে বিষয়ে জানাব সেটি হল ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing). ইন্টারনেটে অনেক ফ্রিল্যান্সিং সাইট আছে যেগুলো থেকে কাজ পাওয়া যায় এবং কাজ করার মাধ্যমে আয় করা যায়।
বর্তমান সময়ে অনলাইন আয়ের জন্য ফ্রিল্যান্সিং অনেক জনপ্রিয় প্লাটফর্ম হয়ে দাড়িয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং করে অনেকেই ঘরে বসে হাজার হাজার টাকা আয় করছেন।
শুধু তাই নয়, যারা পূর্ণ ডেডিকেশন দিয়ে কাজ করতে পারতেছে তারা তো মোটামুটি ফুল টাইম জব বা চাকরি থেকেও বেশি পরিমাণ টাকা আয় করে নিচ্ছে অনলাইন থেকে।
তবে এটা আমরা সবাই জানি কোন কাজই এত সহজ নয়। এসব করার জন্য দরকার অনেক ধৈর্য্যের। আর আমরা সকলেই ত জানি ধৈর্য্যের ফল সুমিষ্ট হয়। তো ধরে নিচ্ছি আপনি একজন ধৈর্য্যশীল মানুষ। চলুন শুরু করা যাক।
ফ্রিল্যান্সিং কি?
ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি মাধ্যম, যার দ্বারা আপনারা অনলাইন কাজ করবেন এবং সেই কাজের বিনিময়ে টাকা আয় করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং একটি স্বাধীন প্লাটফর্ম। এখানে আপনি যখন ইচ্ছা তখন কাজ করতে পারবেন।
একজন চাকরিজীবি প্রতিদিন সকাল ১০ থেকে ৪ টা পর্যন্ত অফিস করে। অনেকের ত সকাল ৮ টা থেকেও অফিস করতে হয়। কিন্তু ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে কিন্তু এমন ধরাবাধা কোন নিয়ম নেই।
তারা স্বাধীনভাবে কাজ করে টাকা উপার্জন করতে পারে। এজন্য ফ্রিল্যান্সিং কে মুক্তপেশা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এটাকে কিন্তু আপনি ব্যবসাও বলতে পারেন।
যারা ফ্রিল্যান্সার তারা বিভিন্ন অনলাইন সোর্স থেকে কাজ খুজে নিয়ে নিজের ইচ্ছামত কাজ করেন। যারা এভাবে স্বাধীনভাবে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করেন, তাদেরকে ফ্রিল্যান্সার বলে।
বর্তমানে ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলির মাধ্যমে, এই ফ্রিল্যান্সাররা বিভিন্ন ধরনের কাজ বা প্রজেক্ট খুঁজে এবং সেগুলি তারা তাদের ক্লায়েন্টস (clients) দের শর্ত অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কমপ্লিট করে দেন এবং এই কাজের বিনিময়ে তারা ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে টাকা নেন।
আপনি যেই প্রজেক্ট বা কাজ করবেন বলে ভাবছেন, সেটি করার জন্য কত টাকা নিতে চান, সেটা আপনি আপনার ক্লায়েন্ট (client) এর সাথে আলোচনা করে আগেই ঠিক করে নিতে পারবেন। সঠিক ভাবে কাজ শেষ হওয়ার পর, আপনার টাকা আপনার একাউন্টে জমা করে দেওয়া হয়।
ফ্রিলায়ন্সার হিসেবে কাজ করার সুবিধা অনেক। কারন এখানে আপনি নিজেই ঠিক করতে পারেন আপনি কখন কাজ করতে চান কিংবা কতটুকু কাজ করতে চান। তাছাড়া এটি আপনি ফুল টাইম করবেন নাকি পার্ট টাইম করবেন সেটাও আপনার ব্যক্তিগত ব্যপার।
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে নেয়া কাজগুলি আপনি যেহেতু ঘরে বসেই করতে পারবেন তাই এর জন্য আপনার কোনো আলাদা জায়গার প্রয়োজন পড়বেনা। কারণ, এ কাজের জন্য যা প্রয়োজব তা হল – একটি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট কানেকশন।
ফ্রিল্যান্সিং মানে হলো, যেই কাজগুলোতে আপনার বিশেষ অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা আছে, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী সেই কাজ করে করে দিয়ে তার বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া।
অর্থাৎ, অন্যরা তাদের প্রয়োজনীয় কাজ আপনাকে দিবে। সেই কাজ যদি আপনি জানেন, তবে নির্ধারিত সময়ে আপনার তাকে সেই কাজ করে দিতে হবে।
এখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবেন। যেমন, রাইটিং, ডিজাইনিং, সেলিং সার্ভিস, ডিজিটাল সার্ভিস ইত্যাদি বা যেকোনো অন্য কাজ যেটা আপনি জানেন এবং মানুষ আপনাকে দিয়ে করাতে চায়।
এই কাজগুলিকে ঘন্টায় (hourly), ডেইলি (daily), সপ্তাহিক (weekly) বা মাসিক (monthly) ভাবে হিসেবে করা যায়।
আপনাকে আমরা এই পরামর্শ দিব যে, আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতে চান এবং এখান থেকে অনলাইন টাকা আয় করতে চান, তাহলে সবার আগে আপনাকে এটা জানতে হবে যে, আপনার মধ্যে এমন কি বিশেষ ট্যালেন্ট, কোয়ালিটি এবং দক্ষতা রয়েছে যার কারনে মানুষ আপনার উপরে ভরসা করে আপনাকে কাজ দিবে।
আমরা যারা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাই তারা অনেকেই জানিনা যে কিভাবে এটি শুরু করতে হয় কিংবা কিভাবে শুরু করলে সহজ এবং ভাল হয়। তো চলুন এবার জেনে নেই ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করব।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবেন?
ইন্টারনেট এখন মানুষের হাতে হাতে চলে এসেছে। আর এতক্ষনে নিশ্চয় বুঝে গেছেন ফ্রিল্যান্সিং এর ইন্টারনেট কতটা জরুরি। নিজের জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে কাজ খোঁজা থেকে শুরু করে, কাজটি তৈরি করে আপনার ক্লায়েন্ট এর হাতে পৌছে দেওয়া পর্যন্ত পুরোটাই আপনাকে ইন্টারনেটের মাধ্যমেই করতে হবে।
এছাড়াও ফ্রিল্যান্সার হিসেবে টাকা আয় করার জন্য আপনার প্রচুর নতুন নতুন কাজ বা প্রজেক্ট এর প্রয়োজন পড়বে। আর এজন্য আপনাকে বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে আপনার দক্ষতা মানুষকে জানাতে হবে যাতে মানুষ আপনার দক্ষতা সম্পর্কে জানতে পারে এবং আপনাকে কাজ দিতে আগ্রহী হয়।
নিজের দক্ষতা বা স্কিল প্রচার করলে, লোকেরা জানতে পারবেন যে আপনি কোন কাজের এক্সপার্ট এবং কোন কাজ আপনি তাদেরকে করে দিতে পারবেন।এতে করে, ভবিষ্যতে আপনার দক্ষতার (skills) সাথে জড়িত বিভিন্ন প্রোজেক্ট বা কাজ অনলাইন পেয়ে যাওয়ার সুযোগও বাড়তে থাকবে। প্রচারেই প্রসার একথা ভুলে গেলে চলবেনা।
ধরুন আপনি ব্লগিং এবং ঙ্গোয়েবসাইট তৈরি করতে পারদর্শী। এক্ষেত্রে, আপনি যদি মানুষকে আপনার দক্ষতা সম্পর্কে না জানান তাহলে তারা জানবে কিভাবে যে আপনি তাদেরকে website এর কাজ করে দিতে পারবেন?
আশা করি বুঝতে পেরেছেন আপনার কাজের কাজের জন্য মার্কেটিং কতটা জরুরি! তাই, ফ্রিল্যান্সিং এর ক্যারিয়ার শুরু করার সাথে সাথে, নিজের কাজের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার অনলাইনে প্রচার বা মার্কেটিং করতে হবে।
এটা মাথায় রাখতে হবে, অনলাইন বা যেকোনো মাধ্যমে যখন মানুষ আপনাকে কোনো কাজ দিবে, তখন তারা আপনার উপরে অনেক ভরসা করেই সেই কাজটি দিবে।
তাই, আপনার কাজের ভালো নাম, কাজের অভিজ্ঞতা, ভালো দক্ষতা এগুলি হবে আপনার ব্র্যান্ড বা নামের পরিচয়।
আর আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে একটি ভালো ব্র্যান্ড বা নাম তৈরি করতে পারেন, তাহলে অধিকাংশ মানুষ সহজে আপনার উপর উপর ভরসা করতে পারবে আর আপনি বেশি বেশি প্রজেক্ট হাতে পাবেন।
এখানে ধাপে ধাপে একটি গাইড দেওয়া হল যাতে আপনার সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়ঃ
ধাপ-১.নিজের লক্ষ্য ঠিক করুন
শুরু করার আগেই আপনাকে আপনার লক্ষ্য সেট করে নিতে হবে। নাহলে আপনি কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেয়েও হারিয়ে ফেলতে পারেন।
লক্ষ্য সেট করার ক্ষেত্রে আপনাকে আগে ভাবতে হবে আপনি কতটুকু কাজ করতে চান বা কত সময় ধরে কাজ করতে চান?এটাও নিশ্চিত হতে হবে যে আপনি এটাকে ক্যারিয়ার হিসেবে চান নাকি পার্টটাইম হিসেবে চালিয়ে যেতে চান।
এসব কিছু আপনাকে আগে থেকেই ঠিক করে নিতে হবে। যাতে আপনি আপনার লক্ষ্যে অটল থাকতে পারেন।
ধাপ-২. যে বিষয় নিয়ে কাজ করতে চান তা বাছাই করুন
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিকটা হল আপনাকে বাছাই করতে হবে কোন টপিকে আপনার আগ্রহ বেশি এবং আপনি দক্ষ।
কারণ যে বিষয়ে আপনার দক্ষতা এবং আগ্রহ উভয়ই আছে সে বিষয় নিয়ে সহজে আপনার অধৈর্য্য আসবে না। এখন আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে আপনি কন্টেন্ট রাইটিং, ওয়েব ডিজাইনিং, কোডিং, লগো ডিজাইনিং, ভিডিও এডিটিং, মার্কেটিং ইত্যাদি কাজের মধ্যে কোনটি বা কোনগুলো শুরু করবেন।
তবে আপনি যে বিষয় নিয়েই কাজ শুরু করেন না কেন নিচের বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখবেনঃ
- আপনাকে এমন টপিক বেছে নিতে হবে যে টপিক সম্পর্কে আপনার পুরো অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং জ্ঞান রয়েছে।
- যেই কাজ করতে আপনার খুব ভাল লাগে, এবং যে বিষয়ে নতুন নতুন জিনিস শিখতে আপনি ভালো পান সেটা নিয়ে কাজ করবেন।
- আপনি যেই টপিক টার্গেট করে ফ্রিল্যান্সিং করবেন বলে ভাবতেছেন, সেই টপিকের উপর চাহিদা মার্কেটে কেমন তা ভাল করে জেনে শুরু করুন।
- এমন বিষয় বা টপিক নিয়ে কাজ করবেন যে বিষয়ে আপনার আবেগ (passion) আবেগ কাজ করে। ফলে কাজে আপনার সহজে অবসাদ আসবে না এবং আপনি বেশি সময় কাজ করে বিরক্ত অনুভব করবেন না।
তাহলে, ফ্রিল্যান্সিং বিজনেস এর জন্য আপনি যে বিষয় নিয়ে কাজ করবেন, সেটার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই উপরের বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।
কোন কোন প্লাটফর্ম বা ওয়েবসাইটে কাজ করবেন?
আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে চান সেক্ষেত্রে আপনি প্রথমে বিভিন্ন অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং সাইট কিংবা মার্কেটপ্লেস গুলিতে কাজ শুরু করতে পারেন।
এইসব সাইটগুলিতে বিভিন্ন এমপ্লয়ার বা ক্লায়েন্টরা বিভিন্ন রকমের কাজ করানোর জন্য ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে করানোর জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন এবং অপরদিকে ফ্রিল্যান্সাররা এই সাইট গুলিকে ব্যবহার করেন নতুন নতুন কাজ খোঁজার জন্য।
মনে রাখবেন, মানুষ তাদের কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য এই সাইটগুলিতে অনেক বিশ্বাসী ফ্রিল্যান্সারদের খুজ করে থাকেন। আপনি যদি সময়মত আপনার ক্লায়েন্টকে ভালো ভাবে কাজ কমপ্লিট করে দিতে পারেন, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং আপনার ক্যারিয়ারে এ অনেক ভালো প্রভাব ফেলবে।
কারন তারা একবার আপনার কাছ থেকে ভাল সার্ভিস পেলে তারা আপনার উপর ভরসা করতে শুরু করবে এবং পরে বার বার আপনাকে দিয়ে করাবে। এছাড়াও তারা অন্যান্যদের সাজেস্ট করবে যাতে তারা আপনাকে কাজ দেয়।
চলুন এবার আমরা দেখে নেই, ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আমরা কোন কোন সাইট ব্যবহার করতে পারি।
ঘরে বসে কাজ করার জন্য কিছু ফ্রিল্যান্সিং সাইট
- Freelancer – এই ফ্রিল্যান্সিং সাইট টিতে আপনি প্রায় সব রকম কাজের জন্য ক্লায়েন্ট পেয়ে যাবেন। ১৩৫০ টিরও বেশি সংখ্যক আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে এখানে মানুষজন তার কাজ খুজে নিচ্ছেন। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ক্যাটাগরি হল হলো – একাউন্টিং, ফিন্যান্স, এসইও, ফটোশপ, ইন্টারনেট মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, মোবাইল আপ ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন ইত্যাদি। এসব ছাড়াও আরো অনেক অনেক জনপ্রিয় বিষয়ের উপর এখানে কাজ পেয়ে যাবেন।
- Fiverr – Fiverr হল অনেক পুরোনো, বিশ্বাসী ওয়েবসাইট। এখানে আপনি অনেক কাজ খুজে পাবেন। প্রত্যেকটি কাজের শুরু এখানে ৫ ডলার থেকে। এখানে আপনি গ্রাফিক ডিজাইনিং থেকে শুরু করে ডিজিটাল মার্কেটিং,ভিডিও বা এনিমেশন রিলেটেড কাজ, কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করতে পারবেন।
- Upwork – Upwork অনেক নাম করা একটি ফ্রিল্যান্সিং সাইট। এই সাইটে ১২ মিলিয়নেরও বেশি ফ্রিল্যান্সার কাজ করে প্রতিনিয়ত টাকা আয় করছেন। প্রতি বছর এখানে ৩ মিলিয়নের বেশি কা্জের বিজ্ঞাপন দিয়ে পোস্ট করা হয়। এই সাইটে প্রায় প্রায় সব ধরনের কাজই পাওয়া যায়।
- Guru – Guru এমন একটি ফ্রিল্যান্সিং সাইট যেখানে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ কানেক্টেড আছে এবং এ পর্যন্ত প্রায় ১০ লক্ষাধিক কাজ এই সাইটের মাধ্যমে করান হয়েছে। এখানেও আপনারা নিজের পছন্দের প্রায় সব রকম বিষযইয়ের উপর কাজ খুঁজে নিতে পারবেন।
তাই, আপনি যদি নিজের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার কথা ভেবে থাকেন,তাহলে উপরের ওয়েবসাইটগুলিতে গিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলিতে আপনার যা করতে হবে
ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটে ঢুকার পর আপনাকে ঠিক কি কি করতে হবে তা আস্তে আস্তে বুঝিয়ে দিচ্ছি।
ওয়েবসাইটগুলিতে গিয়ে প্রথম যে কাজটি করবেন তা হল আপনার নিজের জন্য একটি প্রোফাইল বা একাউন্ট তৈরি করবেন।
এরপর নিজের প্রোফাইলে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা, আপনার সোশ্যাল প্রোফাইল, পড়াশুনা, প্রোফাইল পিকচার, দক্ষতা ইতাদি বিষয় এড করে নিবেন।
এর পাশাপাশি আপনি আপনার ক্লায়েন্টদের জন্য কিভাবে এবং কি কি কাজ করতে পারবেন তাও প্রোফাইলে যোগ করে নিন। তাছাড়া, তারা তাদের কাজের জন্য আপনাকেই কেন সিলেক্ট করবে সুন্দর করে সেই কারন টাও প্রোফাইলে যোগ করে দিন।
তাই কাজ করার আগ্রহ থাকলে আর দেরি না করে যে সাইটে কাজ করতে চান সেই সাইটে আপনার প্রোফাইল তৈরি করে ফেলুন এবং উপরের নির্দেশনা অনুসারে প্রয়োজনীয় তথ্য যোগ করে ফেলুন।
এতে করে যা হবে তা হল, ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে আপনার কাজ পাওয়ার সুযোগ বেড়ে যাবে। আর এই কাজ পাওয়ার পরিমান যত বাড়বে আপনার ইনকামও তত বাড়বে।
আপনাকে দেয়া কাজ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে করে আপনি আপনার ক্লায়েন্ট বা employer কে জমা দেয়ার পর, আপনাকে কাজটির জন্য যত টাকা দেয়ার কথা হয়েছিল, সেটা আপনাকে দিয়ে দেয়া হবে।
এভাবেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে অনলাইনে নিজের মেধা এবং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ঘরে বসেই অনেক টাকা আয় করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে কি পরিমাণ টাকা আয় করা যেতে পারে?
ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয়ের নির্দিষ্ট কোন সীমা পরিসীমা নেই। আপনি যত কাজ করবেন তত টাকা আয় করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বাধা ধরা কোন নিয়মও নেই।
আমাদের দেশে ভারতের তুলনায় ফ্রিল্যান্সার অনেক কম হওয়ায় এ খাতে আমাদের সম্ভাবনা অনেক বেশি বলে আমরা মনে করি।
PayPal এর একটি জরিপ থেকে জানা যায়, প্রায় ২৩% ভারতীয় ফ্রিল্যান্সা্র বছরে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা আয় করছে। বাকি ২৩% ফ্রিল্যান্সারেরা বছরে ২.৫ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মত আয় করছেন। তাছাড়া, বাকি ৫৪ % ফ্রিল্যান্সাররা ২.৫ লক্ষেরে কম টাকা আয় করছেন।
সুতরাং, ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারলে যথেস্ট লাভ আছে এবং এটি করে আপনি লক্ষ লক্ষ টাকা ঘরে বসেই আয় করতে পারবেন। তবে কি পরিমাণ ক্লায়েন্ট আপনাকে ভরসা করে, আর কি পরিমান কাজ তারা আপনাকে দিচ্ছে এবং কতগুলো কাজ আপনি কমপ্লিট করে তাদের কাছে দিতে পারছেন এসব বিষয়ের উপর আপনার আয় নির্ভর করবে।
আস্তে আস্তে কাজ করে দিন দিন আপনার আপনার ডিমান্ড যত বাড়বে, তত বেশি টাকা আপনি আপনার প্রতিটি কাজের জন্য চার্জ করতে পারবেন। কারন আমরা সকলেই জানি যে জিনিস যেটা ভাল দাম তার একটু বেশিই।
ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য কি কোন কোর্স করতে হবে?
সত্যি কথা বলতে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য বা শেখার জন্য কোনো কোর্স করার প্রয়োজন প্রয়োজন পড়েনা।
তবে কিছু সাধারণ জ্ঞান থাকলে ভাল। যেমন, কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন, কোন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কাজ খুঁজবেন এবং প্রথমে আপনার কি কি করতে হবে, এগুলো সম্পর্কে ভাল করে জেনে নিতে হবে। আর এসকল বিষয় আমি উপরে বিস্তারিত সব বলেছি। এখন শুধু আপনার কাজ শুরু করার পালা।
ফ্রিল্যান্সিং কোর্স বলতে আসলে কিছু নেই। তবে ফ্রিল্যান্সিং শুরুর ক্ষেত্রে আপনি নিচের দুই একটা টপিক সম্পর্কে চাইলে ভাল ধারনা নিতে পারেন।
এসব বিষয়ে জানার জন্য আপনাকে কোন কোর্স করার প্রয়োজন নেই।
ইউটিউবে প্রচুর পরিমাণ ফ্রি ভিডিও টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন যেখান থেকে সব শিখে নিতে পারবেন।
আপনি চাইলে নিচের টপিকগুলোর মধ্যে যেগুলো আপনার ভাল লাগে বা কিছুটা জানা আছে সেগুলো দিয়ে শুরু করতে পারেন।
- আর্টিকেল লিখনঃ আপনি যদি লেখালেখিতে পারদর্শী হোন কিংবা লেখালেখিতে আপনার খুব আগ্রহ থেকে থাকে তবে আপনি আর্টিকেল লেখার উপর কোর্স করে এটি আয়ত্ব করতে পারেন এবং ঘরে বসে মোতা অঙ্কের টাকা কামাতে পারেন।
- ওয়েবসাইট ডিজাইনিংঃ ওয়েবসাইট ডিজাইনিং নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। কারণ, আমরা মোটামুটি সকলেই ওয়েবসাইট ডিজাইনারদের ডিমান্ড এখন কতটা বেশি!
- গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ লোগো মেকিং কিংবা মার্কেটিং এমন অনেক ধরনের কাজেই এখন গ্রাফিক্স ডিজাইনার প্রয়োজন। তাই এই কোর্স করতে পারলে অবশ্যই লাভবান হবেন বলে আমরা মনে করি।
- ভিডিও এডিটিং : বিভিন্ন কোম্পানি বা অনলাইন মার্কেটারদের তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ড এর জন্য ভিডিও এডিটিং করার প্রয়োজন পড়ে। তাই, এই কোর্স করলে আপনি হাতে অনেক কাজ পেতে পারেন।
- কোডিং (PHP/Java/Css) : বর্তমানে ভাল মানের ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কিংবা মোবাইল বা কম্পিউটার সফটওয়ার তৈরির ক্ষেত্রে কোডিং ভাষা জানা খুব জরুরি। আর আপনি যদি এসব ভাষা যেনে থাকেন তাহলে সহজেই এই বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়ে ফেলতে পারবেন।
শুধু এগুলোই নয়। এগুলো ছাড়া আরো অনেক অনেক কোর্স আছে যেগুলা আপনি করতে পারেন। আর যদি এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং এ আপনাকে স্বাগতম।