লোহা একটি রাসায়নিক মৌলিক পদার্থ। এটি সাধারণত রুপালি ধূসর রঙের হয়ে থাকে। এটি চুম্বক গুণ সম্পন্ন। স্বাভাবিক অবস্থায় লোহা বেশ কঠিন তবে আঘাতের ধারা বা চাপ প্রয়োগ করে একে বিভিন্ন আকার প্রধান করা যায়।
লোহাকে প্রকৃতিতে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না। আকরিক থেকে একে নিষ্কাশন করা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর লোহার আকরিক পাওয়া যায়। ভূত্বকে লোহার পরিমাণ ৪.১২%। লোহার প্রধান আকরিক গুলি হলো –
- হেমাটাইট
- ম্যাগনেটাইট
- আয়রন পাইরাইটিস
- সিডারাট
লোহার বৈশিষ্ট্য
রাসায়নিক সংকেত বা প্রতীক | Fe |
সাধারণ রং | রুপালি ধূসর |
ইলেক্ট্রন বিন্যাস | ২,৮,১৪,২ |
পারমাণবিক সংখ্যা | ২৬ |
পারমাণবিক ভর | ৫৫.৮৫ |
স্ফুটনাঙ্ক | ২৮৬২° C |
গলনাঙ্ক | ১৫৩৮° C |
ঘনত্ব | ৭.৮৫ গ্রাম/সিসি |
লোহার রাসায়নিক ধর্ম
বায়ুর সাথে বিক্রিয়া
শুষ্ক বায়ুর সাথে লোহা বিক্রিয়া করে না। তবে আর্দ্র বায়ুর মধ্যে লোহা রাখলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই লোহার উপরে হলুদ রঙের আস্তরণ পড়ে, একে মরিচা বলা হয়। মরিচা হলো পানিযুক্ত ফেরিক অক্সাইড,2Fe2O3, 3H2O. লোহার সাথে বায়ুর অক্সিজেন এবং জলীয় বাষ্পের বিক্রিয়ার ফলে মরিচা উৎপন্ন হয়। তাদের বিশুদ্ধ লোহায় মরিচা পড়ে না। এছাড়া অথবা অক্সিজেনের উপস্থিতিতে লোহাকে তীব্রভাবে উত্তপ্ত করলে জ্বলে ওঠে এবং ফেরোসোফেরিক অক্সাইড উৎপন্ন হয়। অর্থাৎ, 3Fe + 2O2 = Fe3O4
পানির সাথে বিক্রিয়া
সাধারণ তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ লোহার সাথে পানির বিক্রিয়া হয় না। লোহিত তপ্ত লোহার উপর দিয়ে স্টিম চালনা করলে ফেরোসোফেরিক অক্সাইড এবং হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়।যেমন – 3Fe + 4H2O = Fe3O4 + 4H2↑
ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া
স্বাভাবিক অবস্থায় ক্ষারের সাথে লোহার বিক্রিয়া হয় না। তবে গাঢ় সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড এর সাথে লোহা বিক্রিয়া করে সোডিয়াম ফেরাইট এবং হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে। যেমন – 2Fe + 2NaOH + 2H2O = 2NaFeO2 + 3H2↑
লোহার ব্যবহার
নানা কাজে লোহার ব্যবহার করা হয়। তবে বিভিন্ন ধরনের ঢালাই কাজের জন্য এবং ঢালাই কারখানা বিভিন্ন কাজের জন্য লোহা ব্যবহার করা হয়।শিকল, তার, তারজালি, বৈদ্যুতিক চুম্বক, পিয়ানোর তার ইত্যাদি তৈরিতেও লোহা ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ট্রেন, রেলের চাকা, লাইন, ইঞ্জিন, জাহাজ, পুল, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে সুঁচ পর্যন্ত তৈরিতে লোহা ব্যবহার করা হয়। এককথায় এর ব্যবহার প্রচুর।