পড়াশোনা

পর্বত কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি? What is Mountains?

1 min read

ভূ-পৃষ্ঠের অতি উচ্চ, সুবিস্তৃত এবং খাড়া ঢালবিশিষ্ট শিলাস্তূপকে পর্বত বলে। যেমন– হিমালয়, আল্পস, রকি ইত্যাদি পর্বত।

সাধারণত ৬০০ থেকে ১,০০০ মিটার উঁচু স্বল্প বিস্তৃত শিলাস্তূপকে পাহাড় বলে। পর্বতের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কয়েক হাজার মিটার হতে পারে। পর্বতের ভূপ্রকৃতি বন্ধুর, ঢাল খুব খাড়া এবং সাধারণত চূড়াবিশিষ্ট হয়। কোনো কোনো পর্বত বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করে। যেমন– পূর্ব আফ্রিকার কিলিমাঞ্জারো। আবার কিছু পর্বত অনেকগুলো পৃথক শৃঙ্গসহ ব্যাপক এলাকা জুড়ে অবস্থান করে। যেমন– হিমালয় পর্বতমালা।

পর্বতের প্রকারভেদ (Classification of Mountains)

গঠন ও বৈশিষ্ট্য অনুসারে পর্বতকে চার শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা–

১। ভঙ্গিল পর্বত,

২। আগ্নেয় পর্বত,

৩। চ্যুতি-স্তূপ পর্বত এবং

৪। ল্যাকোলিথ পর্বত।

১. ভঙ্গিল পর্বত

প্রবল পার্শ্ব চাপের ফলে ভূপৃষ্ঠ কুঞ্চিত হয়। এভাবে ভূত্বক সংক্ষিপ্ত আকার ধারণ করার সময় এতে ঊর্ধ্বভাঁজ এবং অধঃভাঁজের উৎপত্তি হয়। সুউচ্চ ভাঁজসমূহকে ভঙ্গিল পর্বত বলে।

উদাহরণ : হিমালয়, আল্পস, ইউরাল, রকি প্রভৃতি ভঙ্গিল পর্বত।

বৈশিষ্ট্য :

১. ভঙ্গিল পর্বত পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত।

২. এ পর্বতের শিলাস্তর স্তরে স্তরে সজ্জিত।

৩. এ পর্বতের শিলার মধ্যে জীবাশ্ম দেখতে পাওয়া যায়।

৪. এ পর্বত বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।

২. আগ্নেয় পর্বত

আগ্নেয়গিরি জ্বালামুখ দিয়ে অগ্নুৎপাতের ফলে যে সব উত্তপ্ত লাভা, ভস্ম, গ্যাস ইত্যাদি নির্গত হয়, সে সব কালক্রমে শীতল ও কঠিন হয়ে ভূ-পৃষ্ঠে সঞ্চিত হতে থাকে। এভাবে বারবার অগ্নুৎপাতের ফলে জ্বালামুখের কাছে মোচাকৃতি পর্বতের সৃষ্টি হয়। একে আগ্নেয় পর্বত বলে।

উদাহরণ : জাপানের ফুজিয়ামা, হাওয়াই দ্বীপের মনালোয়া প্রভৃতি আগ্নেয়জাত পর্বত।

বৈশিষ্ট্য :

১. এ পর্বত আগ্নেয় শিলা দ্বারা গঠিত।

২. এটি মোচাকৃতির।

৩. এ পর্বতের বিস্তৃতি ও উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে পারে।

৩. চ্যুতি-স্তূপ পর্বত

ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির সময় কিংবা ভূআলোড়নের সময় ভূপৃষ্ঠের প্রবল পার্শ্ব চাপের সৃষ্টি হলে সময় সময় ভূত্বকের কোন কোন শিলাস্তর খাড়াভাবে ফেটে যায় এবং ফাটলের দুপার্শ্বের ভূখণ্ড ক্রমে স্থলিত ও স্থানচ্যুত হয়ে বসে চ্যুতির সৃষ্টি করে। এরূপ সৃষ্ট দুটি চ্যুতির মধ্যবর্তী উঁচু শিলাস্তূপকে চ্যুতি-স্তূপ পর্বত বলে।

উদাহরণঃ পাকিস্তানের লবণ পর্বত, জার্মানির ব্ল্যাক ফরেস্ট প্রভৃতি চ্যুতিস্তূপ পর্বত।

বৈশিষ্ট্যঃ

১. চ্যুতি-স্তূপ পর্বত সুউচ্চ নয়।

২. এদের চূড়াগুলো সাধারণত চ্যাপ্টা আকৃতির।

৩. এদের পার্শ্ববর্তী ঢাল খুবই খাড়া।

৪. এ পর্বত বেশি বিস্তৃত নয়।

৪. ল্যাকোলিথ পর্বত

পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে গলিত শিলা বা ম্যাগমা বিভিন্ন গ্যাসের দ্বারা স্থানান্তরিত হয়ে কখনও কখনও ভূপৃষ্ঠে বের হয়ে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু অনেক সময় এগুলো ভূপৃষ্ঠে না পৌঁছে ভূত্বকের নিচে একস্থানে জমাটবদ্ধ হয় এবং ঊর্ধ্বমুখী চাপের দ্বারা শিলাস্তর স্ফীত হয়ে ভূত্বকের অংশবিশেষ গম্বুজ আকার ধারণ করে। এভাবে সৃষ্ট পর্বতকে ল্যাকোলিথ পর্বত বলে।

উদাহরণঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের হেনরী পর্বত।

বৈশিষ্ট্যঃ

১. এ পর্বত গলিত শিলা বা ম্যাগমা দ্বারা গঠিত।

২. এর উচ্চতা খুব বেশি নয়।

৩. এটি গম্বুজ আকৃতির।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x