আজ আমরা কাজের ব্যপারে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। আজকের টপিকে যা যা থাকছে তা হলঃ কাজ কি বা কাকে বলে? এর একক ও মাত্রা এবং এর সাধারণ ধর্ম।
কাজ কি? কাকে বলে?
সাধারণত কোন কিছু করাকেই কাজ বলে। যেমন – লেখাপড়া করা, মোটরসাইকেল চালানো ইত্যাদি। তবে পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় কাজের সঙ্গাটা একটু ভিন্ন। পদার্থের ভাষায়, কোন বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করলে যদি বস্তুটির সরণ ঘটে কেবলমাত্র তখনই কাজ করা হয়। তবে বল প্রয়োগ করার ফলে সরণ না ঘটলে কাজ হয় না।
এককথায়, কোন বস্তুর উপর বল প্রয়োগে যদি তার সরণে ঘটে তবে তাকে কাজ বলে। অর্থাৎ, বল ও বলের দিকে সরণের গুণফলকে কাজ বলে।
কাজ = বল × সরণ অর্থাৎ, W = FS এখানে S = সরণ, F = আকর্ষণ বল।
কাজের একক
বল × সরণের গুণফলই হলো কাজের একক। বলের একক হলো নিউটন (N) এবং সরণের একক মিটার (m). অর্থাৎ , কাজের একক হলো নিউটন-মিটার (N-m). এর অপর নাম জুল (J).
নোটঃ 1 জুল = 1 নিউটন × 1 মিটার
মাত্রা
কাজের মাত্রাঃ কাজ [W] = [F][s]
=ML^2T^-2
1 জুল
কোন বস্তুর ওপর 1 নিউটন বল প্রয়োগের ফলে যদি বলের দিকে দিকে বলের প্রয়োগ বিন্দুর 1 মিটার সরণ ঘটে তবে সম্পন্ন কাজের পরিমাণকে 1 জুল বলে।
বিভিন্ন ধরণের কাজ
বল দ্বারা / ধনাত্মক কাজঃ বল প্রয়োগের ফলে যদি বলের প্রয়োগ বিন্দু বলের দিকে সরে যায় বা বলের দিকে স্মরণের উপাংশ থাকে তাহলে সেই বল এবং বলের দিকে সরণের উপাংশের গুণফলকে ধনাত্মক / বল দ্বারা কাজ বলে।
বলের বিরুদ্ধে / ঋণাত্মক কাজঃ যদি বল প্রয়োগের ফলে বল প্রয়োগ বিন্দুরল বলের বিপরীত দিকে সরে যায় বা বলের বিপরীত দিকে সরে যায় বা বলের বিপরীত দিকে সরণের উপাংশ থাকে তাহলে সেই বল এবং বলের বিপরীত দিকে সরণের উপাংশের গুণফলকে বলের বিরুদ্ধে / ঋণাত্মক কাজ বলে।
শুন্যকাজ
বল প্রয়োগে যদি কোন বস্তুর সরণ বলের লম্ব বরাবর হয়, তবে সেই বলের দ্বারা কোন কাজই হয় না। একেই শূন্যকাজ বলা হয়।
কাজের সাধারণ ধর্ম
দৈনন্দিন জীবনের কাজের সাথে পদার্থবিজ্ঞানের ধারণার অনেক ব্যবধান রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ – কোন বস্তুকে দুহাতে আঁকড়ে উপরে তুলে আবার যেখান থেকে তোলা হলো সেখানে নামিয়ে রাখলে পদার্থবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে কাজের পরিমাণ হবে শূন্য।
অথচ আমাদের ধারণা অনুযায়ী আমরা এটাকে কাজই বলব। কারণ এর মাধ্যমে উত্তোলনকারী ক্লান্ত ও ঘর্মাক্ত হতে পারে। পদার্থের ভাষায়, বল ও বলের দিকে সরণের উপাংশের গুণফলই কাজ।