ক্লাউড কম্পিউটিং কি? এর প্রয়োজনীয়তা, সুবিধা এবং অসুবিধা

ক্লাউড কম্পিউটিং শব্দটি শুনতে সহজ হলেও টেকনিক্যাল দিক থেকে কিন্তু এর অনেক গভীরতা রয়েছে। আমরা জেনে বা না জেনে উভয়ভাবেই কিন্তু ক্লাউড কম্পিউটিং এর সাথে জড়িত আছি। তাই অনেক ভাবুক মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে ক্লাউড কমপিউটিং সম্পর্কে জানার।

তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ক্লাউড কম্পিউটিং কি? এর প্রয়োজনীয়তা, সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।

ক্লাউড কম্পিউটিং কি?

ক্লাউড কম্পিউটিং কি? কয়েক দশক আগেও একটা সময় ছিল যখন মানুষ বাড়িতে কম্পিউটার ব্যবহার করত না। শুধু বাড়িতেই না, বিশেষ নামিদামি অফিস না হলে অফিসেও কম্পিউটারের ব্যবহার দেখা যেত না। তখন মানুষ ভাবতো বাড়িতে কম্পিউটার রাখার কোনো মানেই হয় না। কারণ তখন এর প্রয়োজনীয়তা মানুষ বুঝতো না।

সময়ের সাথে সাথে মানুষের এই ধারণায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। এখনকার মানুষ কম্পিউটার এর প্রয়োজনীয়তা বুঝতে শিখেছে। এর সুবাদে এখন প্রায় সবার ঘরেই ল্যাপটপ বা কম্পিউটার এর দেখা পাওয়া যায়।

ক্লাউড কম্পিউটিং বলতে কি বোঝায় তা জানার আগে আমাদের জানতে হবে আসলে কম্পিউটিং কি?

ধরুন আপনার একটি কম্পিউটার রয়েছে। এ কম্পিউটারে আপনাকে বিভিন্ন কাজ করতে হয়। আপনার শিক্ষক আপনাকে একটি সিভি প্রিন্ট করে নিয়ে আসতে বলল। আপনি তখন কি করবেন? আপনার কম্পিউটারে সিভি লিখবেন তারপর সেটা প্রিন্ট করে শিক্ষককে জমা দেবেন। আপনার সিভি তৈরি করতে কম্পিউটারের যে কাজগুলো করলেন এটাই হচ্ছে কমপিউটিং। আমরা দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক কাজে আমাদের কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকি।

এখন ধরুন আপনার শিক্ষক আপনাকে সিভি তৈরি করতে বলল কিন্তু আপনার কাছে কোন কম্পিউটার নেই। এবার আপনি কি করবেন? বন্ধুর বাড়ি গিয়ে তার কম্পিউটারে সিভি লিখে প্রিন্ট করে নিয়ে আসবেন? হ্যাঁ আপনি সেটা করতেই পারেন।

কিন্তু আপনার কাছে এর চেয়েও ভালো উপায় আছে। সেটিই হচ্ছে ক্লাউড কম্পিউটিং

ক্লাউড কমপিউটিং হচ্ছে এমন এক কমপিউটিং সিস্টেম যেখানে আপনার কম্পিউটার নেই অথচ আপনি কমপিউটিং করতে পারবেন। অর্থাৎ ক্লাউড কম্পিউটিং এর ক্ষেত্রে আপনার কম্পিউটারের ফিজিক্যাল মেশিনটি আপনার টেবিলে থাকবে না। সেটি দুনিয়ার অন্য যেকোন প্রান্তে থাকতে পারে। আর সেই কম্পিউটারকে আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ ও কমপিউটিং করতে পারবেন।

আমরা ক্লাউড কম্পিউটিং কি তা ইতমধ্যে জেনে ফেলেছি। তবুও পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারছেন না? চলুন কয়েকটি উদাহরণ দেই। তাহলে সহজেই বুঝে যাবেন।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর উদাহরণ

উদাহরণ-১: আপনি নিশ্চয় জিমেইল ব্যবহার করেন? আপনার জিমেইলে যদি কেউ মেসেজ পাঠায় সেটা কি সরাসরি আপনার কম্পিউটারে চলে আসে? নাকি আপনাকে ইন্টারনেট কানেকশন ব্যাবহার করে জিমেইলে লগইন করে সেই মেসেজ দেখতে হয়?

এই মেসেজগুলো তো আপনার কম্পিউটারে নেই। তাহলে আপনি কোথায় থেকে মেসেজগুলো দেখতে পান? উত্তর হচ্ছে গুগলের সার্ভার কম্পিউটার.! গুগলের সার্ভার কম্পিউটারে আপনার সকল মেসেজ সংরক্ষণ করা থাকে। আর সেগুলো আপনাকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। তারমানে আপনি ক্লাউড কমপিউটিং এর মাধ্যমে আপনার জিমেইল নিয়ন্ত্রণ করেন।

উদাহরণ-২: আপনি নিশ্চয় আপনাার মোবাইলে বা কম্পিউটারে ইউটিউব ভিডিও দেখেন? সে ভিডিও গুলো কি আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে আছে? যেহেতুুুু নেই তাহলে সেগুলো কোথায় আছে? উত্তর youtube-এর সার্ভার কম্পিউটারে। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় গুগলের সার্ভার কম্পিউটার রয়েছে। সেসব জায়গায় এসকল তথ্য সংরক্ষষণ করা থাকে। আর সেগুলো আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখতে বা ব্যবহার করতে পারি। এটি হচ্ছে ক্লাউড কমপিউটিং। যেখানে আপনার কাছে কোনো তথ্য নেই অথচ আপনি সে তথ্যগুলো ইন্টারনেট ব্যবহার করে অ্যাক্সেস করতেে পারেন।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর প্রয়োজনীয়তা

উপরের লেখাগুলো পড়ার পর আপনার কাছে মনে হতে পারে কেন এটা আমাদের জন্য এত প্রয়োজনীয়?

চলুন একটা সহজ উদাহরণের মাধ্যমে এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করার চেষ্টা করি।

ধরুন আমি আপনার ফোনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ পাঠালাম যেটি আপনার মোবাইলের লোকাল স্টোরেজে সংরক্ষণ করা থাকে। ভুলে আপনি মোবাইলটি বাসায় ফেলে অফিসে চলে আসলেন। এবার আপনি সেই মেসেজটি কিভাবে এক্সেস করবেন? অবশ্যই আপনাকে বাসায় যে ফোনটি নিয়ে আসতে হবে।

কিন্তু আমি যদি ম্যাসেজটি আপনার মেসেঞ্জারে পাঠাতাম? তাহলে কি আপনার এত কষ্ট করা লাগতো? আশেপাশের কারো ফোন নিয়ে আপনি আপনার ফেসবুক আইডি লগইন করে মেসেজটি অ্যাক্সেস করতে পারতেন।

কারণ ফেসবুকে পাঠানো মেসেজটি আপনার ডিভাইসে সেভ হয় না। সেটি সেভ হয় ফেসবুকের সার্ভার কম্পিউটারে। তাই আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করে আপনার ফেসবুকের যেকোনো তথ্য যেখানে খুশি সেখানে থেকে দেখতে পারেন।

এবার তো বুঝতে পারলেন, ক্লাউড কমপিউটিং আমাদের কতটা সুবিধা দিয়ে থাকে। আর এজন্যই ক্লাউড কমপিউটিং আমাদের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ। মূলত ক্লাউড কমপিউটিং একটি পোর্টেবল, ম্যানেজড এবং অন ডিমান্ড সিস্টেম। আপনি চাইলে আপনার কমপিউটিং করা তথ্য গুলো পাবলিক প্রাইভেট করে রাখতে পারেন.!

ক্লাউড কম্পিউটিং এর প্রকারভেদ

ভিন্ন ভিন্ন দিক বিবেচনায় ক্লাউড কমপিউটিং নানান রকমের হয়ে থাকে। তবে টেকনিক্যাল দিক থেকে ক্লাউড কমপিউটিং কে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে।

  • Infrastructure as a Service (IaaS)
  • Software as a Service (SaaS)
  • Platform as a Service (PaaS)

Infrastructure as a Service (IaaS)

এই সিস্টেমে পুরা কম্পিউটারটি আপনার তত্ত্বাবধানে থাকবে। এটা অনেকটা আপনার নিজস্ব কম্পিউটারের মতোই। আপনি যখন যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন। ইচ্ছে হলে গেম খেলতে পারবেন, বিভিন্ন সফটওয়্যার ইন্সটল করতে পারবেন। Infrastructure as a Service (IaaS) এর উদাহরণ হল: Google drive, Dropbox, bigcommerce, slap ইত্যাদি।

Software as a Service (SaaS)

এই সিস্টেমে প্রোভাইডার আপনাকে পুরো কম্পিউটার সিস্টেম দিয়ে দেবে না। বরং সেখান থেকে আপনার প্রয়োজনীয় দু’একটি সফটওয়্যার রান করানোর সুযোগ দেওয়া হবে। উদাহরণস্বরূপ: আপনি যদি জিমেইল ব্যবহার করেন, তবে গুগলের যে সার্ভারে জিমেইল সফটওয়্যার টি রয়েছে, সেই সার্ভারের কম্পিউটার পুরোটাই আপনাকে নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয় না। বরং শুধুমাত্র সার্ভারে থাকা জিমেইল অ্যাপটি ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে থাকে।

Platform as a Service (PaaS)

এই সিস্টেমে প্রোভাইডার আপনাকে হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার প্রদান করবে যে আপনাকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবহার করতে হবে। যেমন: বিভিন্ন ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস Platform as a Service (PaaS) এর অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটে ই-কমার্স ইউজ করেন সেক্ষেত্রে আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর কার্ট, চেক আউট পেমেন্ট মার্চেন্ট সার্ভার থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধা

আপনি যদি অনলাইন ভিত্তিক কোন বিজনেস রান করতে চান, তবে ক্লাউড কম্পিউটিং সিস্টেম আপনার খরচ এবং ঝামেলা উভয়ই কমিয়ে দিতে সাহায্য করবে। আপনার বিজনেস যদি ছোট হয় সে ক্ষেত্রে অনেক কম টাকায় আপনি ক্লাউড কম্পিউটার ভাড়া নিয়ে চালাতে পারবেন। উপরন্তু নিজের প্রয়োজনীয় সিস্টেম ইন্সটল করে আপনার অফিসে নিজস্ব কম্পিউটার ব্যবহার করা অনেক ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। তাই যেকোনো বিজনেসের শুরুর জন্য ক্লাউড কমপিউটিং আপনার ব্যয় অনেকটাই কমিয়ে দিতে সক্ষম।

ক্লাউড কমপিউটিং এর আরো কয়েকটি সুবিধা হল, ক্লাউড কমপিউটিং একটি পোর্টেবলম্যানেজড এবং অন ডিমান্ড সিস্টেম। আপনি চাইলে আপনার কমপিউটিং করা তথ্য গুলো পাবলিক প্রাইভেট করে রাখতে পারেন.!

ম্যানেজড

আপনি যদি আপনার পিসিতে কোন পাওয়ারফুল কাজ করতে চান তাহলে আপনার পিসি’ও পাওয়ারফুল হতে হবে। অর্থাৎ আপনি ঠিক যেমন কাজ করতে চান আপনাকে ঠিক তেমনভাবেই আপনার পিসি বিল্ড করতে হবে।

আপনি যদি আপনার পিসিতে ফটোশপ ইন্সটল করতে চান তাহলে আপনাকে এমন পিসি বিল্ড করতে হবে যাতে ফটোশপ খুব স্মুথলি রান করে। তা না হলে আপনি ভালোমতো ফটো এডিট করতে পারবেন না।

কিন্তু আপনি যদি ফটো এডিটিং সাইট fotor.com এগিয়ে ফটো এডিটিং করেন তাহলে কিন্তু আপনার ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই হচ্ছে। এখানে আপনার ফটো এডিট করার জন্য কোন ধরনের হার্ডওয়ার সফটওয়্যার কিচ্ছু লাগবেনা। প্রফেশনাল ফটো এডিট করার জন্য যে সকল হার্ডওয়ার সফটওয়্যার প্রয়োজন তার সবকিছুই fotor.com সার্ভারে ইন্সটল করা আছে।

মূলত এটি হচ্ছে ম্যানেজড সিস্টেম। আপনার প্রয়োজন মত কারো সার্ভারে কানেক্ট হোন আর প্রয়োজনীয় সুবিধা নিন।

অন ডিমান্ড (যখন যতটুকু দরকার)

ধরুন আপনার 4gb র‍্যাম এর একটি কম্পিউটার রয়েছে। সেটা দিয়ে আপনি আরামসে মুভি দেখতে পারেন, গান শুনতে পারেন। তাছাড়া ওয়েব ব্রাউজিং করতে পারেন। কিন্তু হঠাৎ যদি আপনার ভিডিও এডিটিং করার প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে আপনি কি করবেন? ভালো মানের ভিডিও এডিটিং এর জন্য 4gb RAM পর্যাপ্ত নয়। ভিডিও এডিটিং এর জন্য 8 জিবি RAM আপনার থাকায় লাগবে।

তাহলে কি আপনি দু একটা ভিডিও এডিট করার জন্য 8gb RAM লাগাবেন!

অবশ্যই এটা কোন ভাল সমাধান নয়। যেখানে আপনার 4gb দিয়ে হচ্ছে, সে অবস্থায় হঠাৎ দুই একটা কাজ করার জন্য 8gb RAM লাগানোর মানে হয় না।

ঠিক এই সমস্যার সমাধান টিও আপনি পাবেন ক্লাউড কমপিউটিং সিস্টেমে। ক্লাউড কম্পিউটার সিস্টেমে আপনি আপনার প্রয়োজন মত রিসোর্স ভাড়া নিতে পারবেন। আবার আপনি যদি অলরেডি কম মানের একটি রিসোর্স ব্যবহার করে থাকেন, তবে মাত্র কয়েকটি ক্লিকের মাধ্যমে আপনি আপনার রিসোর্স কয়েকদিনের জন্য বা কয়েক মাসের জন্য বাড়িয়ে নিতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার প্রয়োজন মত আপনি রিসোর্স বাড়িয়ে বা কমিয়ে নিতে পারবেন। আপনার খরচ অনেকটাই কমে যাবে। কারণ ক্লাউড সিস্টেম পে এজ ইউ গো সিস্টেমে (pay-as-you-go) কাজ করে।

এককথায় ক্লাউড কমপিউটিং হচ্ছে আপনার মোবাইল ফোনের বিল এর মত। ইচ্ছা হলে বেশি খরচ করবেন আর ইচ্ছা হলে কম খরচ করবেন। আপনি যখন যা খরচ করবেন আপনার তাই বিল আসবে।

প্রাইভেট/পাবলিক কম্পিউটিং

আপনার নিজের কম্পিউটার যেমন আপনি না চাইলে কেউ এক্সেস করতে পারবেনা। তেমনি ক্লাউড কমপিউটিং এর প্রাইভেট কম্পিউটিং সিস্টেমে আপনার ক্লাউড সার্ভিস গুলো আপনি না চাইলে বাইরের কেউ এক্সেস করতে পারবে না।

ক্লাউড প্রোভাইডার অ্যামাজন পাবলিক এবং প্রাইভেট দুই ধরনের ক্লাউড সিস্টেম প্রদান করে থাকে। প্রাইভেট ক্লাউড সিস্টেম পাবলিক ক্লাউড সিস্টেম এর মতই কাজ করে। শুধু পার্থক্য হচ্ছে, প্রাইভেট ক্লাউডে আপনি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট এরিয়ার আন্ডারে অ্যাক্সেস করতে পারবেন।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর অসুবিধা

ক্লাউড কম্পিউটিং এর এতসব সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। অসুবিধা গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় অসুবিধা টি হল, আপনাকে দিনের পর দিন এর বিল দিয়ে যেতে হবে। আপনি যদি কষ্ট করে একবার বেশি টাকা খরচ করে নিজের অফিসে বা প্রতিষ্ঠান একটি কম্পিউটার সার্ভার তৈরি করে ফেলেন এবং প্রয়োজনীয় সকল সফটওয়্যার ইন্সটল করে নেন তাহলে আপনার কাজ শেষ। এরপর আর তেমন কোনো খরচ করতে হবে না। অপরদিকে ক্লাউড কম্পিউটিং এর ক্ষেত্রে আপনি যদি বছরের পর বছর শেষে বা গ্রহণ করে থাকেন তাহলে আপনাকে বিল দিয়ে যেতেই হবে।

তাই আপনি যদি অনেক বেশি সময় নিয়ে কাজ করতে চান তাহলে ক্লাউড কমপিউটিং আপনার খরচ কমানোর পরিবর্তে বরং বাড়িয়ে দিবে।

আপনি ক্লাউড কমপিউটিং ব্যবহার করবেন নাকি নিজের লোকাল কম্পিউটার সিস্টেম তৈরি করে নেবেন সেটা বোঝার জন্য আপনি বাড়ি ভাড়ার দিকে চিন্তা করেন। আপনি যদি একটি জায়গায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান তবে সেখানে একটু কষ্ট হলেও আপনার বাড়ি কিনে নিয়ে ব্যবহার করা উচিত। তা না হলে আপনি কতবছর এভাবে ভাড়া দিতে থাকবেন? কয়েক বছরের ভাড়া দিয়ে আপনি একটি বাড়ি কিনে ফেলতে পারবেন।

তাই আপনার প্রতিষ্ঠান অবস্থা বুঝে আপনি সিদ্ধান্ত নিন, ক্লাউড কমপিউটিং ব্যবহার করবেন নাকি লোকাল কমপিউটিং?

ক্লাউড কম্পিউটিং এর ভবিষ্যৎ পর্যায়

বর্তমানে স্মার্টফোনের জনপ্রিয়তার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে ক্লাউড কম্পিউটিং। মোবাইল ফোন আবিষ্কার হয় 1973 সালে। কিন্তু ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল নগণ্য। এতটাই নগণ্য ছিল যে আপনি এটাকে খড়ের গাদায় সুই খোঁজার মতো বলতে পারেন। অথচ 2012 সালের পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রায় 66 শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী আসে মোবাইল ডিভাইস থেকে। আর 2014 সালে তা ডেক্সটপকে ছাড়িয়ে যায়। আর সেই সময়ই গুগল তাদের মোবাইল ফ্রেন্ডলি অ্যালগরিদম আপডেট করে।

বর্তমান বিশ্বে মানুষের চেয়ে মোবাইলের সংখ্যা বেশি! অবশ্য এর অনেকগুলো যৌক্তিক কারণও আছে। আপনি ফোনে ফটো তুলছেন, অথচ সেটা অটোমেটিক্যালি চলে যাচ্ছে আপনার ক্লাউড স্টোরেজে! শুধু ছবি না, আপনার যেকোনো প্রয়োজনীয় ফাইল আপনি আপলোড করে রাখতে পারেন আপনার ক্লাউড সার্ভারে। এর ফলে কোন কারনে যদি আপনার ফোনটি হারিয়ে ও যায়, তবুও আপনি ক্লাউড সার্ভার থেকে আপনার সকল প্রয়োজনীয় ডেটা ফিরে পেতে পারেন।

উপরে আলোচিত তিন প্রকার ক্লাউড কমপিউটিং ছাড়াও আরো কয়েক প্রকার ক্লাউড কমপিউটিং রয়েছে। যেমন: প্রাইভেট ক্লাউড, পাবলিক ক্লাউড, হাইব্রিড ক্লাউড, peer-to-peer ক্লাউড, পার্সোনাল ক্লাউড ইত্যাদি।

দিন যত যাচ্ছে আমরা তত বেশি ক্লাউড কম্পিউটিং এর উপর নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছি। সম্প্রতি গুগল নতুন এক গেমিং প্লাটফর্ম লঞ্চ করেছে যার নাম Stadia. এখানে গেম খেলার জন্য আপনার কম্পিউটার বা মোবাইলে কোন গেম ইন্সটল করা লাগবে না! সেটা থাকবে গুগলের ক্লাউড কম্পিউটার এ। আপনি শুধু নিজের ডিভাইস দিয়ে সে ক্লাউড সার্ভারটি নিয়ন্ত্রণ করবেন।

microsoft-এর এক্স ক্লাউড প্রজেক্টর অনেকটা গুগলের Stadia এর মতই।

এতে কি একটা বিষয় আন্দাজ করতে পারতেছেন? আপনি যদি হাই পারফরম্যান্স এর গেম খেলতে চান তবুও আপনার লাখ টাকার গেমিং পিসি কেনা লাগবে না। মোটামুটি রকমের একটি ভালো মোবাইল বা পিসি থাকলেই হচ্ছে! সাথে থাকতে হবে দ্রুতগতির ইন্টারনেট কানেকশন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *