সিন্ধু সভ্যতা ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রোঞ্জ যুগের একটি সভ্যতা (৩৩০০ – ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ; পূর্ণবর্ধিত কাল ২৬০০ – ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)। সিন্ধু নদের তীরে গড়ে ওঠা উপমহাদেশের প্রাচীনতম সভ্যতা সিন্ধু সভ্যতা। এটা বিশ্বের নগর সভ্যতার ইতিহাসের একটি অমূল্য নিদর্শন। সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীরা উন্নত নগরকেন্দ্রিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন।
এ সভ্যতার উল্লেখযোগ্য দুটি শহর হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো। শহর দুটির নগর পরিকল্পনা ছিল অত্যন্ত উন্নত। সেখানে ছিল প্রশস্ত সোজা ও পাকা রাস্তা, সুন্দর নকশা করা দালানকোঠা, রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধ লাইটপোস্ট এবং পানিনিষ্কাশনের সুব্যবস্থা।
ভাস্কর্যশিল্পে সিন্ধু সভ্যতার অবদান
ভাস্কর্যশিল্পে সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীদের অতুলনীয় দক্ষতা ছিল। সিন্ধু সভ্যতায় পাওয়া পাথরে খোদিত ভাস্কর্যের সংখ্যা কম হলেও সেগুলোর শৈল্পিক মান ও কারিগরি দক্ষতা ছিল উল্লেখ করার মতো। এ যুগে মোট ১৩টি ভাস্কর্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১১টি শ্মশ্রুমণ্ডিত এবং আলখাল্লা ধরনের পোশাক পরা। ধারণা করা হয়, এগুলো কোনো পুরোহিত শাসকের হয়ে থাকবে। চুনাপাথরের তৈরি একটা মূর্তির মাথা পাওয়া গেছে, যাতে পাথর কেটে চমৎকার ঢেউ খেলানো চুল তৈরি করা হয়েছে। এ ভাস্কর্যের ঠোঁট আর কানের গড়ন ছিল নিখুঁত।
মহেঞ্জোদারোতে পাওয়া গেছে নৃত্যরত নারীমূর্তি, যার বাঁ হাতের পুরোটাই ছিল বালা দিয়ে ঢাকা। মূর্তিটির চোখ, নাক আর কোঁকড়ানো চুল সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এ ছাড়া মাটির তৈরি ছোট ছোট মানুষ এবং পশুমূর্তিও পাওয়া গেছে। হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম হলো বিভিন্ন ধরনের প্রায় ২৫০০ সিল।