মিশরীয় সভ্যতা উত্তর আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলের একটি প্রাচীন সভ্যতা। এটি নীল নদের অববাহিকায় গড়ে ওঠে। খ্রিষ্টপূর্ব ৩২০০ অব্দ থেকে প্রথম রাজবংশের শাসন আমলে মিশরে ঐতিহাসিক যুগের সূচনা হয়। এ সময় মেনেসের নেতৃত্বে এ সভ্যতার গোড়াপত্তন হয়, যা প্রায় ২৫০০ বছরের বেশি সময়ব্যাপী স্থায়ী হয়েছিল। ফারাওদের অধীনে মিশর প্রাচীন বিশ্বসভ্যতার অগ্রগতিতে একের পর সাফল্য লাভ করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি বিষয় হচ্ছে তাদের পিরামিড ও মমি। মৃতদেহকে টিকিয়ে রাখার জন্য তারা মমি করে রাখত এবং এ মমিগুলো রক্ষার জন্য তারা পিরামিড তৈরি করেছিল।
মিশরীয় সভ্যতার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল লিপি বা অক্ষর আবিষ্কার। মিশরীয় লিখনপদ্ধতির উদ্ভব নগর সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গেই ঘটে। প্রথম দিকে মিশরীয়রা ছবি এঁকে মনের ভাব প্রকাশ করত, যার নাম ছিল চিত্রলিপি। প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে সর্বপ্রথম মিশরীয়রাই ২৪টি ব্যঞ্জনবর্ণের বর্ণমালা আবিষ্কার করে। মিশরীয় চিত্রলিপিকে বলা হতো হায়ারোগ্লিফিক বা পবিত্র অক্ষর, যা ব্যবহার হতো ধর্মীয় বাণী এবং রাজার আদেশ প্রচারের জন্য। মিশরীয়রা লিখনপদ্ধতি আবিষ্কারের পাশাপাশি নলখাগড়া জাতীয় গাছের কাণ্ড থেকে কাগজ বানাতে শেখে। এ কাগজের ওপর তারা লিখত। গ্রিকরা এই কাগজের নাম দেয় প্যাপিরাস, যা থেকে ইংরেজি পেপার শব্দের উৎপত্তি।