কিয়ামত
এমন একদিন ছিল যখন এই নিখিল বিশ্ব এবং এর কোনো কিছুই ছিল না। আল্লাহ তায়ালা তাঁর মহান কুদরতে সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। আবার মানুষের অবাধ্যতা যখন চরমে পৌঁছাবে, আল্লাহর নাম নেওয়ার মতো একটি লোকও থাকবে না, সেদিন আল্লাহ এই বিশ্বজগৎ এবং এর সবকিছু ধ্বংস করে দেবেন। একেই বলে কিয়ামত। বিশ্বজগতের এরূপ পরিণতি বিজ্ঞানীরাও স্বীকার করেন। তাঁরা বলেন, এমন এক সময় আসবে যখন সূর্য শীতল হয়ে যাবে, চাঁদের আলো থাঁকবে না। গ্রহ-উপগ্রহের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটবে। পৃথিবী এবং এর সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।
হাশর
বিশ্বজগৎ ধ্বংস হওয়ার অনেক বছর পর আল্লাহ তায়ালা সবাইকে পাপ-পণ্যের বিচারের জন্য পুনরায় জীবিত করবেন। সবাইকে সেদিন আল্লাহর সামনে হাজির হতে হবে। একে বলা হয় হাশর। এদিন আমাদের সব কথা ও কাজের হিসাব দিতে হবে। যারা মুমিন এবং যারা পৃথিবীতে ভালো কাজ করেছে, তারা সেদিন আল্লাহর অনুগ্রহ পাবে। তারা নিরাপদে থাকবে। আর যারা ইমান আনে নি, ভালো কাজ করে নি, তারা ভীষণ বিপদের সম্মুখীন হবে। তাদের কষ্টের সীমা থাকবে না।
মিযান
আমরা যা করি, যা বলি, আল্লাহ সবই সংরক্ষণ রাখেন। আমাদের চলাফেরা, আচার-আচরণ, ভালোমন্দ, পাপ-পুণ্য সবকিছু লিখে রাখেন। একে বলা হয় আমলনামা। আল্লাহর হুকুমে একদল ফেরেশতা সবকিছু লিখে রাখেন। এই ফেরেশতাদের বলা হয় কেরামান কাতেবিন। হাশরের দিন আমাদের পাপ ও পূণ্যের আমলনামা ওজন করা হবে। যার দ্বারা ওজন করা হবে তাকে বলে মিযান। মিযান অর্থ পরিমাপযন্ত্র। ওজনে যাদের নেক কাজ বেশি হবে তারা হবে জান্নাতের অধিকারী। যাদের পাপ বেশি হবে তারা হবে জাহান্নামী।
জান্নাত ও জাহান্নাম
জান্নাত হলো চিরস্থায়ী সুখের স্থান। সেখানে কেবল শান্তি আর শান্তি। আনন্দ আর আনন্দ। পৃথিবীতে যারা ছিল ইমানদার, যারা ছিল ভালো, তারা চিরদিনের জন্য সেখানে বাস করবে। জান্নাতে আছে আরামের সব রকমের ব্যবস্থা। মন যা চাইবে সেখানে তাই পাওয়া যাবে। সেখানে আছে উত্তম খাদ্য, পানীয় এবং সুন্দর বাগান ও ফলফলাদি।
সেখানে কোনো অভাব নেই, অশান্তি নেই, কোনো দুঃখ-বেদনাও নেই।
জাহান্নাম হলো চিরস্থায়ী কষ্টের স্থান। পৃথিবীর যারা ইমান আনে নি, ভালো কাজ করে নি, তারা সেখানে চিরদিন বাস করবে।
জাহান্নামে কেবল দুঃখ আর দুঃখ। সেখানে আছে ভীষণ ও ভয়ংকর শাস্তি। যেমন- আগুনে পোড়ানো, সাপের দংশন, আরো নানা রকম শাস্তি।