মানুষের জন্য কেন কম্পিউটার প্রয়োজন?
কম্পিউটারকে বলা যায় মস্তিষ্কের কাজের জন্য একটি হাতিয়ার। হাতের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতাকে খানিকটা অতিক্রম করার জন্য যেমন রয়েছে হাতুড়ি, তেমনি মস্তিষ্কের কিছু সীমাবদ্ধতাকে কাটাবার জন্য এসেছে কম্পিউটার। কম্পিউটার ব্যবহার করে যত রকম কাজ করতে পারি তার চমৎকারিত্বে আমরা মুগ্ধ হই। কিন্তু কম্পিউটার আসলে নিজে তেমন জটিল কোন কাজ করতে পারে না, শুধু খুব সহজ সাধারণ কয়েকটি মাত্র কাজই পারে, আমাদের মস্তিষ্ক যত জটিল কাজ করতে পারে সে তুলনায় কম্পিউটার নস্যি।
তাহলে কম্পিউটারের বাহাদুরিটা কোথায়? মস্তিষ্কের সীমাবদ্ধতা হচ্ছে সহজ জিনিসও সে খুব দ্রুত করতে পারেনা; অনেক বেশী সংখ্যায় এলে সহজ কাজও তাকে কাবু করে ফেলে। যেমন অনেক মানুষের নাম বা অনেক টেলিফোন নম্বর এক সঙ্গে মনে রাখতে বললে সে নাচার। অনেক স্মৃতির ভিড়ে দরকারী কথাটি চট্ করে মনে করতে গিয়ে মস্তিষ্ক প্রায়ই ব্যর্থ হয়। সহজ হিসাবের অংকও বেশী লম্বা হয়ে পড়লে মস্তিষ্ক হাল ছেড়ে দেয়। এখানেই আসে কম্পিউটার।
মানুষের মস্তিষ্কের উল্লেখিত সীমাবদ্ধতা রয়েছে বটে কিন্তু জটিল জিনিষকে জটিল রেখেই সে এটা নিয়ে কাজ করতে পারে। ওভাবেই সে তথ্যকে মাথায় খেলাতে পারে, বিবেচনা করতে পারে। দুজন মানুষ যখন কথা বলে, বা ভাব বিনিময় করে তখন একে অপরকে সব কথা সব ভাব সরল মৌলিক কথায় বা মৌলিক ভাবে ভেঙ্গে দেবার কোন প্রয়োজন হয়না।
কম্পিউটারের ক্ষেত্রে কিন্তু তার ঠিক বিপরীত। কম্পিউটারকে অনেক জটিল তথ্য দেয়া যায় বটে, কিন্তু কম্পিউটার তাকে শেষ পর্যন্ত নেয় অতি সরল অনেক তথ্যের সমাবেশ হিসাবে, তা নিয়ে কাজও করে ঐ অবস্থাতেই। আমাদেরকে ফলাফল দেবার সময় অবশ্য আবার ঐ জটিলতা আনয়ন করেই দেয়, যাতে করে আমাদের চিন্তা ব্যবস্থার সঙ্গে তা খাপ খায়। তবে ঐ যে ভেঙ্গে দেয়া সরল তথ্য সেগুলো অনেক অনেক সংখ্যায় এক সঙ্গে ধারণ করতে পারে কম্পিউটার, খুব দ্রুত ওগুলাো খেলাতেও পারে কিছু একটা করার জন্য। ওর মধ্যে কোনটি কম মনে রাখা বা কম পারার ব্যাপার কম্পিউটারে নাই, কারণ কম্পিউটার যান্ত্রিক ভাবে কাজ করে। কম্পিউটার এক সঙ্গে অনেক তথ্য মনে রাখতে পারে। ইচ্ছে করে মুছে ন দেয়া পর্যন্ত এর কোনটা থেকে সে স্মৃতিভ্রষ্ট হয় না।