রক্তরস বা প্লাজমা কি? এর কাজ কি? (Blood plasma in Bangla)
রক্তরস (বা প্লাজমা) হচ্ছে রক্তের হালকা হলুদ বর্ণের তরল অংশ। এতে পানির পরিমাণ ৯০-৯২% এবং দ্রবীভূত কঠিন পদার্থের পরিমাণ ৮-১০%। রক্তরসের কঠিন পদার্থ বিভিন্ন জৈব (৭-৮%) ও অজৈব (০.৯%) উপাদান নিয়ে গঠিত। তাছাড়া, কয়েক ধরনের গ্যাসও রক্তরসে পাওয়া যায়।
রক্তরসের উপাদানগুলো হচ্ছে– (i) খাদ্যসার (গ্লুকোজ, অ্যামিনো এসিড, স্নেহপদার্থ, লবণ, ভিটামিন ইত্যাদি); (ii) গ্যাসীয় পদার্থ (O2, CO2, N2 প্রভৃতি); (iii) রেচন পদার্থ (ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ক্রিয়েটিনিন ইত্যাদি); (iv) বিভিন্ন ধরনের আয়ন (Na+, K+, Ca++, Cl–, HCO3–, HPO4– ইত্যাদি); (v) রক্ত আমিষ (ফাইব্রিনোজেন, প্রোথ্রম্বিন, অ্যালবুমিন ও গ্লোবিউলিন); (vi) প্রতিরক্ষামূলক দ্রব্য (অ্যান্টিটক্সিন, অ্যাগ্লুটিনিন প্রভৃতি); (vii) অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি নিঃসৃত বিভিন্ন হরমোন; এবং (viii) কোলেস্টেরল, লেসিথিন, বিলিরুবিন, বিলিভারডিন ইত্যাদি নানা ধরনের যৌগ।
রক্তরসের কাজ
পরিপাকের পর খাদ্যসার রক্তরসে দ্রবীভূত হয়ে দেহের বিভিন্ন টিস্যু ও অঙ্গে বাহিত হয়। টিস্যু থেকে যে সব বর্জ্য পদার্থ বের হয় তা রেচনের জন্য বৃক্কে নিয়ে যায়। টিস্যুর অধিকাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড রক্তরসে বাইকার্বনেটরূপে দ্রবীভূত থাকে। খুব কম পরিমাণ অক্সিজেন এতে বাহিত হয়। লোহিত কণিকায় সংবদ্ধ হওয়ার আগে অক্সিজেন প্রথমে রক্তরসেই দ্রবীভূত হয়। রক্তরসের মাধ্যমে হরমোন, এনজাইম, লিপিড প্রভৃতি বিভিন্ন অঙ্গে বাহিত হয়। রক্তরস রক্তের অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করে।