যে আন্তঃসম্পর্কে দুটি জীবের একটি অন্যটিকে সহায়তা করে তাকে ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া বলে। এ ক্ষেত্রে সহযোগীদ্বয়ের একটি বা উভয়ই উপকৃত হতে পারে। লাভজনক এ আন্তঃক্রিয়াকে মিউচুয়ালিজম (Mutualism) ও কমেনসেলিজম (Commensalism) নামে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

(i) মিউচুয়ালিজম (Mutualism) : সহযােগীদের উভয়ই একে অন্যের দ্বারা উপকৃত হয়। যেমন, মৌমাছি, প্রজাতি, পােকামাকড় প্রভৃতি ফুলের মধু আহরণের জন্য ফুলে ফুলে উড়ে বেড়ায় এবং বিনিময়ে ফুলের পরাগায়ন ঘটে। অনেক পাখি এবং বাদুড় ফল খেয়ে বাঁচে এবং মলত্যাগের সাথে ফলের বীজও ত্যাগ করে। এভাবে বীজের স্থানান্তর হয় এবং উদ্ভিদের বিস্তার ঘটে। এ বীজ নতুন গাছ সৃষ্টিতে সাহায্য করে। একটি শৈবাল এবং একটি ছত্রাক সহাবস্থান করে লাইকেন গঠন করে। ছত্রাক বাতাস থেকে জলীয় বাষ্প সংগ্রহ এবং উভয়ের ব্যবহারের জন্য খনিজ লবণ সংগ্রহ করে। অপরদিকে শৈবাল তার ক্লোরােফিলের মাধ্যমে নিজের জন্য এবং ছত্রাকের জন্য শর্করাজাতীয় খাদ্য প্রস্তুত করে। রাইজোবিয়াম (Rhizobium) ব্যাকটেরিয়া শিমজাতীয় উদ্ভিদের (Leguminous plant) শিকড়ে অবস্থান করে গুটি (Nodule) তৈরি করে এবং বায়বীয় নাইট্রোজেনকে সেখানে সংবন্ধন করে। ব্যাকটেরিয়া এই নাইট্রোজেন সহযােগী শিম উদ্ভিদকে সরবরাহ করে এবং বিনিময়ে সহযােগী উদ্ভিদ থেকে শর্করাজাতীয় খাদ্য পেয়ে থাকে।

(ii) কমেনসেলিজম (Commensalism) : এ ক্ষেত্রে সহযােগীদের মধ্যে একজন মাত্র উপকৃত হয়। অন্য সহযােগী সদস্য উপকৃত না হলেও কখনাে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। যেমন, রােহিণী উদ্ভিদ (apophyte) মূলের সাহায্যে নিজেকে মাটিতে আবদ্ধ করে এবং অন্য বড় উদ্ভিদকে আরােহণ করে উপরে উঠে। এরূপে অন্য বৃক্ষের উপর প্রসারিত হয়ে বেশি পরিমাণে আলাে গ্রহণ করে। কাষ্ঠল লতা খাদ্যের জন্য আশ্রয়দানকারী উদ্ভিদের উপর নির্ভর করে না এবং তার কোনাে ক্ষতিও করে। পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ (metabiont) বায়ু থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে, কিন্তু আশ্রয়দাতার কোনাে ক্ষতি করে না। শৈবাল অন্য উদ্ভিদদেহের ভিতরে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করে। কিন্তু আশ্রয়দাতার কোনাে ক্ষতি করে না।

1.5/5 - (6 votes)

By Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.