হৃৎপিন্ডের ডান অ্যাট্রিয়াম প্রাচীরের উপর দিকে অবস্থিত, বিশেষায়িত কার্ডিয়াক পেশিগুচ্ছে গঠিত ও স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রে নিয়ন্ত্রিত একটি ছোট অংশ যা বৈদ্যুতিক তরঙ্গ প্রবাহ ছড়িয়ে দিয়ে হৃৎস্পন্দন সৃষ্টি করে এবং স্পন্দনের ছন্দময়তা বজায় রাখে তাকে পেসমেকার বলে।
মানুষের হৃৎপিন্ডে সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড হচ্ছে পেসমেকার। এটি অকেজো বা অসুস্থ হলে হৃদস্পন্দন সৃষ্টি ও নিয়ন্ত্রণের জন্য যে কম্পিউটারাইজড বৈদ্যুতিক যন্ত্র দেহে স্থাপন করা হয় তাকেও পেসমেকার বলে। অতএব, পেসমেকার দু’ধরনের একটি হচ্ছে হৃৎপিন্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশরূপী সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড (SA নোড) যা প্রাকৃতিক পেসমেকার নামে পরিচিত; অন্যটি হচ্ছে যান্ত্রিক পেসমেকার, এটি অসুস্থ প্রাকৃতিক পেসমেকারকে নজরদারির মধ্যেও রাখে। প্রাকৃতিক পেসমেকারের কার্যক্রম চক্রের অধীনে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এখানে হৃদরোগের চিকিৎসার ধারণা ব্যাখ্যায় যান্ত্রিক পেসমেকার কার্যক্রম সমন্ধে আলোচনা করা হলো।
যান্ত্রিক পেসমেকারের কার্যক্রম
অসুস্থ ও দুর্বল হৃৎপিন্ডে বিদ্যুৎ তরঙ্গ সৃষ্টি করে স্বাভাবিক স্পন্দন হার ফিরিয়ে আনার ও নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে বুকে বা উদরে চামড়ার নিচে স্থাপিত ছোট একটি যন্ত্রকে পেসমেকার বলে। দেহে সুস্থ, সবল ও সক্রিয় রাখতে হলে হৃৎপিন্ডের সুস্থতা বজায় ও নিয়ন্ত্রণে রাখা একান্ত জরুরী। হৃৎপিন্ডের সুস্থতা পরিমাপের প্রাথমিক ধাপ হচ্ছে হৃৎস্পন্দনের পরীক্ষা-নিরিক্ষা।
হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিকের চেয়ে ধীর লয় বা দ্রুত গতি সম্পন্ন কিংবা অনিয়ত হলে অর্থাৎ অস্বাভাবিক স্পন্দন হলে তাকে অ্যারিথমিয়া বলে। এমন অবস্থায় মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়ে, ঘন ঘন শ্বাস প্রশ্বাস নেয় বা ফ্যাকাসে হয়ে যেতে পারে। প্রচন্ড অ্যারিথমিয়ায় দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে, মানুষ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে বা মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। পেসমেকার ব্যবহারে সব ধরনের অ্যারিথমিয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, বাকি জীবন সক্রিয় থাকা যায়।