একটা পণ্যের বোতলের গায়ে শুধুমাত্র পরিমাণ নয়, আরও কয়েকটি জিনিস লেখা থাকলে, তবেই সেই মোড়কের গায়ে b লেখা যাবে। যে কয়টি জিনিস লেখা বাধ্যতামূলক –
1. উৎপাদনের তারিখ।
2. মেয়াদ শেষের তারিখ।
3. ব্যবহৃত উপাদানের নাম ও পরিমাণ।
4. প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা।
5. সর্বাধিক খুচরা মূল্য।
6. নীট পরিমাণ।
আমদানির ক্ষেত্রে আমদানীকারকের নাম ও ঠিকানা লেখা আবশ্যক।
এই সমস্ত তথ্য দেখে ভোক্তারা দাম, মেয়াদের তারিখ, পরিমাণ ইত্যাদি সম্পর্কে অবহিত হন এবং প্রয়োজনমতো ব্যবস্থাদি নিতে পারবেন।
মোড়কে লেখাগুলো সঠিক মনে হলে তবেই BSTI সেই পণ্যের উপর ছাড়পত্র দেবে। যদি তথ্য অসত্য থাকে, তাহলে উৎপাদক বা আমদানীকারকের উপর এক লক্ষ টাকা জরিমানা ও 10 বছরের কারাদণ্ড ষার্য করা হবে। এই জরিমানার পরিমাণ বাংলাদেশ সরকার 2018 সালে ধার্য করেন।
b লেখার অর্থ, উপরের ছয়টি শর্ত মানার পর সরকারী অনুমতিপ্রাপ্ত লাইসেন্স। এই b থাকার অর্থ সরকার সমস্ত পরীক্ষার পর বাজারীকরণের অনুমতি দিয়েছে।
বিস্তারিতঃ প্যাকেটজাত পণ্য বিক্রি করার সময় ছয়টি তথ্য নিশ্চিত করতে হয় উৎপাদনকারীকে। মাননিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআই থেকে নির্ধারিত মোড়কের ছাড়পত্র নিয়ে সে মোড়কে পণ্য বিক্রি করতে হয়। ছয়টি তথ্য সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করলে সে মোড়কে b মার্ক ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে বিএসটিআই। এই মার্ক দেখে ভোক্তা নিশ্চিত হতে পারেন পণ্যের প্যাকেটে লিপিবদ্ধ তথ্যের সঠিকতা সম্পর্কে।
বিএসটিআই চট্টগ্রামের পরিচালক মো. সেলিম রেজা বলেন, b মার্ক পণ্যের মোড়কিকরণ লাইসেন্সের চিহ্ন। এর দ্বারা মোড়কটি বিএসটিআইয়ের অনুমোদনপ্রাপ্ত বুঝায়। b মার্ক ব্যবহার করতে হলে মোড়কের ছয়টি নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, মোড়কিকরণ আইনটি হয়েছে কিছুদিন হয়ে গেল। আমরা এটি বাস্তবায়ন করার চেষ্টায় আছি। আইন অনুযায়ী মোড়কিকরণে পণ্যের উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ শেষের তারিখ, ব্যবহৃত উপাদানের নাম ও পরিমাণ, প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা লিখতে হবে। আমদানিকৃত পণ্য হলে আমদানিকারকের নাম ও ঠিকানা থাকতে হবে। এসব তথ্য বাংলায় থাকতে হবে।
ওজন পরিমাপক ও মোড়কিকরণ আইন পাস হওয়ার পর গতবছর থেকে আইনটি বাস্তবায়নে মাঠে নামে বিএসটিআই। প্রতিটি পণ্যের মোড়ক নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান লেভেলিং ছাড়পত্র নিয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠান ছাড়পত্র নেওয়ার অপেক্ষায় আছে। মোড়ক নিবন্ধনের সময় প্রধানত ছয়টি তথ্য নিশ্চিত করতে হয়। পণ্যের উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ শেষের তারিখ, ব্যবহৃত উপদানের নাম ও পরিমাণ, প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা লিখতে হবে। এসব তথ্য অবশ্যই বাংলায় লিখা থাকতে হবে। তবে বাংলার পাশাপাশি অন্য ভাষাও ব্যবহার করা যাবে। বিদেশি পণ্য এনে বিক্রি করার ক্ষেত্রে আমদানিকারকের নাম ও ঠিকানা লিখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পণ্যের মোড়কে এসব তথ্য স্পষ্টভাবে থাকতে হবে, যাতে ক্রেতা পণ্যের ব্যাপারে সঠিক তথ্য পান। আইন অনুযায়ী সবগুলো নিয়ম পালন করলে বিএসটিআই সে পণ্যের মোড়কে b চিহ্ন ব্যবহারের ছাড়পত্র দেয়। b চিহ্ন দ্বারা পণ্যটি সম্পর্কে ভোক্তা স্পষ্ট ধারণা পায়।
তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী, মোড়কে কি কি উপাদান আছে সেটা বাংলায় লিখতে হবে। পণ্যের উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, উপাদানের বিবরণ, প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা থাকতে হবে। বিএসটিআই থেকে ছাড়পত্র নিয়ে পণ্যের লেভেলিং করতে হবে। b মার্ক থাকা প্রতিটি মোড়কে নির্ধারিত ছয়টি তথ্য নিশ্চিত করা হয়। এই মার্ক দ্বারা পণ্যের মোড়কের তথ্যের সঠিকতা বুঝাবে।
জানা যায়, ওজন পরিমাপক ও মোড়কিকরণ আইন পাস হয় ২০০৭ সালে। তবে আইনে মোড়কিকরণ বা লেভেলিংয়ের জরিমানার কোনো বিধান ছিলো না। ২০১২ সালে একই আইনের সংশোধনী আনা হয়। তখনও মোড়কিকরণে কোনো জরিমানা আরোপ করা হয়নি। ২০১৮ সালে এসে ওজন পরিমাপ আইনে জরিমানার ধারা অর্ন্তভুক্ত করা হয়। প্যাকেটজাত পণ্যের মোড়কিকরণ করা না হলে এক লক্ষ টাকা জরিমানা ও দশ বছরের কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়। এরপর থেকে মাঠে নামে বিএসটিআই। প্যাকেটজাত পণ্যের মোড়কিকরণের জন্য ছাড়পত্র নেওয়ার বিধান আরোপ করে সংস্থাটি।
সূত্র:যুগান্তর