জৈব যৌগ কাকে বলে? জৈব যৌগের প্রধান উপাদান কি?

কার্বন ও হাইড্রোজেন দ্বারা গঠিত যৌগকে বলে হাইড্রোকার্বন এবং হাইড্রোকার্বন ও এদের থেকে উদ্ভূত যৌগসমূহকে জৈব যৌগ বলে।

জৈব যৌগের প্রধান উপাদান হলাে কার্বন (C)। কার্বনের ক্যাটিনেশন ধর্মের কারণে জৈব যৌগের এতাে বিপুল সংখ্যাধিক্য ঘটে। কোন মৌলের পরমাণুসমূহের নিজেদের মধ্যে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন আকার ও আকৃতির দীর্ঘ শিকল গঠন করার ধর্মকে ক্যাটিনেশন বলে। কার্বন ক্যাটেনেশন ধর্মের সাহায্যে নিজেদের মধ্যে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের, আকার ও আকৃতির সুস্থিত শিকলবিশিষ্ট অসংখ্য যৌগ গঠন করে। আর তাই জৈব যৌগের সংখ্যাও অস্বাভাবিকভাবে বেশি হয়। এছাড়া সংকর বন্ধন গঠন, চতুর্যোজ্যতা প্রভৃতিও কার্বনের অধিক সংখ্যক যৌগ গঠনের জন্য দায়ী।

সামাজিক ক্ষেত্রে জৈব যৌগের গুরুত্ব
সমাজ কাঠামােয় আচার অনুষ্ঠান সংক্রান্ত ব্যবস্থার গুরুত্ব বেশি। সামাজিক যােগসূত্র নিয়ন্ত্রণে বা সামাজিক বন্ধন বৃদ্ধি আচারানুষ্ঠান সাহায্য করে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মােমবাতি ও আতর বা সুগন্ধ বস্তু ছড়ানাে মানসিক প্রশান্তিদায়ক। উভয় বস্তু জৈব যৌগ। সামাজিক অনুষ্ঠানে খাওয়া-দাওয়া আনন্দের ব্যাপার। এক্ষেত্রে খাদ্যরূপে কার্বোহাইড্রেট, প্রােটিন, ফ্যাট বা তেল সব হলাে প্রাকৃতিক পলিমার বায়াে অণু। ঈদ-পুজো পার্বণে আমরা সবাইকে নতুন কাপড়ে ভূষিত দেখতে আনন্দ পাই। নতুন কাপড়টি কটন সুতার হতে পারে; যার উৎস হলাে প্রাকৃতিক সেলুলােজ। আবার সেই পােশাকটি পলিএস্টার সুতার তৈরি ডেক্রন বা টেরিলিন কাপড়ের তৈরি হতে পারে; অথবা হতে পারে সিল্ক অথবা শিফন।

যা হােক না কেন সব পােশাকের কাপড়ের সুতা প্রাকৃতিক পলিমার জৈব যৌগ। অথবা সাংশ্লেষিক পলিমার যৌগ থেকে তৈরি। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে যা দেখা যায়, এ সব বস্তুর অধিকাংশই জৈব যৌগ থেকে তৈরি। এ সব গেল সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করার আচার-অনুষ্ঠানের কথা। কিন্তু সামাজিক কিছু অনাচারও মাঝে মধ্যে দেখা যায়; যাতে জৈব যৌগ পরােক্ষ ভূমিকা রেখেছে। ঐ সব জৈব যৌগ ধূমপান, পানীয় অথবা ট্যাবলেটরূপে সেবনের ফলে মানুষের স্নায়ুতন্ত্রে অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটায়; তখন মানুষটি নেশাগ্রস্ত হয়েছে বলা হয়। নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিরা সমাজের সন্ত্রাস করে; সামাজিক শান্তি বিনষ্ট করে। এদের পরিবারে সামাজিক সুনাম নষ্ট হয়। ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে অশান্তি নামে। তাই রসায়ন বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হিসেবে নেশা সৃষ্টিকারী জৈব যৌগসমূহকে চিনে নিয়ে, এদের থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে হবে। বিজ্ঞান পড়া মানে জ্ঞানকে বিশেষিত করা, উন্নত, চিন্তাশীল মানুষ হওয়া।

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top