ভাষা আন্দোলনে গ্রেফতার হওয়া প্রথম রাজনৈতিক নেতা বঙ্গবন্ধু : হানিফ
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন , একদিন মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জাতির পিতা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন; আজ তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ১৯৯৯ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে মর্যাদার সঙ্গে পালিত হচ্ছে। একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির আত্মপরিচয়ের দিন হিসেবে চিহ্নিত।
মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ছিল ভাষা আন্দোলনের জন্য অনন্য, অবিস্মরণীয় দিন। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে এদিন প্রথম হরতাল পালিত হয়। সেই হরতালে নেতৃত্ব দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশী নির্যাতনের শিকার হন এবং গ্রেফতার হন। ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়ে এটিই ছিল কোনো রাজনৈতিক নেতা গ্রেফতারের প্রথম ঘটনা।
তিনি বলেন, ৪৮’র ১১ মার্চ যারা মাতৃভাষার দাবিতে রাজপথে সংগ্রাম করে কারাবরণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং জনাব শামসুল হক ছিলেন তাদের অন্যতম। মার্চের ১১ থেকে ১৫-এ পাঁচদিন কারারুদ্ধ ছিলেন নেতৃবৃন্দ। পাঁচ দিনের কারাজীবনের স্মৃতিতর্পণ করে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘দেয়ালের বাইরেই মুসলিম গার্লস স্কুল। যে পাঁচ দিন আমরা জেলে ছিলাম সকাল দশটায় মেয়েরা স্কুলের ছাদে উঠে স্লোগান দিতে শুরু করতো, আর চারটায় শেষ করতো। ছোট্ট ছোট্ট মেয়েরা একটু ক্লান্তও হতো না। “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই”, “বন্দী ভাইদের মুক্তি চাই”, “পুলিশি জুলুম চলবে না”- নানা ধরনের স্লোগান। এ সময় শামসুল হক সাহেবকে আমি বললাম, হক সাহেব ঐ দেখুন, আমাদের বোনেরা বেরিয়ে এসেছে। আর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা না করে পারবে না। হক সাহেব আমাকে বললেন, “তুমি ঠিকই বলেছো, মুজিব”।’
হানিফ বলেন, বাংলার মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অবিশ্বাস্য আত্মপ্রত্যয় ছিল! ’৫২-এর ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনসংলগ্ন আমতলায় ছাত্রসভা হয়। নুরুল আমীন সরকার আরোপিত ১৪৪ ধারা ভঙ্গের প্রস্তুতি। ছাত্রসভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১০ জন মিছিল করে ১৪৪ ধারা ভাঙবে। ছাত্রসমাজ প্রতিবাদ মিছিল করে ১৪৪ ধারা ভাঙলো। সরকারের পেটোয়া পুলিশবাহিনী গুলি ছুড়লে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেকে শহীদ হন। আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়। বঙ্গবন্ধু তখন কারারুদ্ধ। কারাগারেই তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে একাত্মতা প্রকাশ করে অনশন করেন।