রসায়ন প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-১১)
প্রশ্ন-১। গাঢ় দ্রবণ কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো দ্রবণে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রাবকের মধ্যে বেশি পরিমাণ দ্রব মিশ্রিত করলে তাকে গাঢ় দ্রবণ বলে।
প্রশ্ন-২। রাসায়নিক সমীকরণের সমতা কাকে বলে?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় বামপাশের বিভিন্ন মৌলের পরমাণুর সংখ্যা এবং ডানপাশের ঐ একই মৌলের পরমাণুর সংখ্যা সমান করা হয়, সেই প্রক্রিয়াকে রাসায়নিক সমীকরণের সমতা বলে।
প্রশ্ন-৩। আইসোমার (Isomer) কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল যৌগের আণবিক সংকেত একই এবং গাঠনিক সংকেতের ভিন্নতার কারণে যৌগগুলোর মধ্যে কিছু ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের মিল দেখা যায় তাদেরকে সমাণু বা আইসোমার (Isomer) বলে।
প্রশ্ন-৪। আয়নিকরণ শক্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ গ্যাসীয় অবস্থায় কোন মৌলের এক মোল পরমাণু থেকে এক মোল ইলেকট্রন বের করে আনতে যে পরিমাণ শক্তির যোগান দিতে হয়, সেই শক্তিকে ঐ মৌলের আয়নিকরণ শক্তি বলে।
প্রশ্ন-৫। ডিকার্বোক্সিলেশন বিক্রিয়া কাকে বলে?
উত্তরঃ জৈব এসিডকে সোডা লাইম দ্বারা উত্তপ্ত করলে কার্বক্সিল মূলক CO
2 হিসেবে অপসারিত হয় এবং এক কার্বন কমে গিয়ে সংশ্লিষ্ট হাইড্রোকার্বন উৎপন্ন হয়। এ বিক্রিয়াকে ডিকার্বোক্সিলেশন বিক্রিয়া বলে।
প্রশ্ন-৬। মৌলিক পদার্থ কি? মৌলিক পদার্থের উদাহরণ
উত্তরঃ যে পদার্থকে ভাঙলে শুধুমাত্র ঐ পদার্থ বাদে অন্য কিছু পাওয়া যায় না, তাই মৌলিক পদার্থ। নাইট্রোজেন, ফসফরাস, কার্বন, অক্সিজেন ইত্যাদি মৌলিক পদার্থের উদাহরণ।
প্রশ্ন-৭। একই পদার্থের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক ভিন্ন কেন?
উত্তরঃ কোনো পদার্থকে গলন বা ফুটাতে এর অণুমধ্যস্থ অন্তঃআণবিক আকর্ষন বল তথা আন্তঃআণবিক দূরত্ব হ্রাস করতে হয়। কোন পদার্থকে কঠিন হতে তরলে পরিণত করলেও এর মধ্যে দুর্বল আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বল বিদ্যমান থাকে। ফলে একে ফুটাতে এ অতিরিক্ত আকর্ষণ বল অতিক্রম করতে অধিক তাপ প্রয়োগ করতে হয়। তাই একই পদার্থের স্ফুটনাঙ্ক, গলনাঙ্ক অপেক্ষা ভিন্ন এবং বেশি হয়।
প্রশ্ন-৮। ইমালসন কি?
উত্তরঃ একটি মতরল পদার্থের মধ্যে অপর একটি অমিশ্রণীয় তরল পদার্থ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিন্দুর আকারে ছড়িয়ে থেকে যে কলয়েড দ্রবণ গঠন করে তাকে ইমালসন বলে।
প্রশ্ন-৯। স্লেকড লাইম কি? স্লেকড লাইমের সংকেত লিখ।
উত্তরঃ স্লেকড লাইম হলো ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড। এর রাসায়নিক সংকেত Ca(OH)2। একে কলিচুনও বলা হয়।
চুনাপাথরকে উচ্চ তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে কুইক লাইম CaO উৎপন্ন হয়।
CaO এর সাথে পর্যাপ্ত পানি যোগ করলে স্লেকড লাইম উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন-১০। তড়িৎ চুম্বকীয় রশ্মি কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো উষ্ণতম উৎস থেকে তাপশক্তি যে রশ্মির মাধ্যমে শীতলতম স্থানে ছড়িয়ে পড়ে তাকে তড়িৎ চুম্বকীয় রশ্মি বলে।
প্রশ্ন-১১। খনিজ বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ খনিজ বলতে আমরা সেই সব শিলাস্তুপকে বুঝি যা ভূ-পৃষ্ঠে বা ভূ-গর্ভে অবস্থিত এবং তাতে কোন মূল্যবান ধাতু বা অধাতু মুক্ত মৌল বা যৌগ হিসেবে অবস্থান করে। যেমন– লোহা বা আয়রনের খনিজ ম্যাগনেটাইট।
প্রশ্ন-১২। জারক এবং বিজারক বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ যে বস্তু অন্য কোনো বস্তুর জারণ ঘটায় এবং নিজে বিজারিত হয় তাকে জারক বলে। অপরদিকে, যে বস্তু অন্য কোনো বস্তুর বিজারণ ঘটায় এবং নিজে জারিত হয় তাকে বিজারক বলে।
প্রশ্ন-১৩। প্রিজারভেটিভস কাকে বলে?
উত্তরঃ যেসব রাসায়নিক পদার্থ পরিমিত পরিমাণে ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্য সামগ্রী প্রক্রিয়াজাত করে দীর্ঘসময় সংরক্ষণ করা হয় তাদেরকে প্রিজারভেটিভস বলে।
প্রশ্ন-১৪। এসিড কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সব যৌগ জলীয় দ্রবণে আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে বিয়োজিত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন (H+) দান করে সেসব যৌগকে এসিড বলে।
প্রশ্ন-১৫। আকরিক থেকে ধাতু নিষ্কাশন কয় ধাপে সম্পন্ন হয়?
উত্তরঃ আকরিক থেকে ধাতু নিষ্কাশন পাঁচটি ধাপে সম্পন্ন হয়। যেমন–
i. আকরিক চূর্ণ বিচূর্ণন;
ii. আকরিকের ঘনীকরণ;
iii. ঘনীকৃত আকরিককে অক্সাইডে রূপান্তর;
iv. ধাতুর অক্সাইডকে মুক্ত ধাতুতে রূপান্তর এবং
v. ধাতু বিশোধন।
প্রশ্ন-১৬। কার্বনেট যৌগ কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো মৌলের সাথে কার্বনেট (CO2−
3) মূলক যুক্ত হয়ে যে যৌগ গঠন করে তাকে কার্বনেট যৌগ বলে।
প্রশ্ন-১৭। তরল তরল দ্রবণ কাকে বলে?
উত্তরঃ যেসব দ্রবণে দ্রব ও দ্রাবক উভয়ই তরল পদার্থ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে তরল-তরল দ্রবণ বলে। লেবুর শরবত, পানি ও অ্যাসিটিক এসিডের দ্রবণ হলো তরল-তরল দ্রবণের উদাহরণ।
প্রশ্ন-১৮। “Like dissolves like” নীতি কি?
উত্তরঃ “পোলার যৌগ পোলার যৌগে এবং অপোলার যৌগ অপোলার যৌগে দ্রবীভূত হয়” – এ নীতিটি “Like dissolves like” নীতি নামে পরিচিত।
প্রশ্ন-১৯। বিকারক কি?
উত্তরঃ বিকারক হলো একটি রাসায়নিক পদার্থ বা যৌগ যা একটি সিস্টেমে যোগ করে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানো হয় অথবা বিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা হয়।
প্রশ্ন-২০। টলেন বিকারক কাকে বলে?
উত্তরঃ অ্যামোনিয়া দ্রবণ মিশ্রিত সিলভার নাইট্রেটের বর্ণহীন দ্রবণকে টলেন বিকারক বলে।