পড়াশোনা
1 min read

প্রথম অধ্যায় : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরিচিতি, ষষ্ঠ শ্রেণির আইসিটি

তথ্য প্রযুক্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ তথ্য দেওয়া-নেওয়া কিংবা সংরক্ষণ করার প্রযুক্তিকে তথ্য প্রযুক্তি বলে।
তথ্য প্রযুক্তির উপাদান কি কি?
উত্তরঃ তথ্য প্রযুক্তিে অনেক ধরনের উপাদান রয়েছে। তবে বর্তমানে ব্যবহৃত উপাদানগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ

১) কম্পিউটার ও অনান্য ডিভাইস (Computer and other devices)
২) কম্পিউটিং (Computing)
৩) রেডিও, টেলিভিশন, ফ্যাক্স  (Radio, Television, Fax)
৪) অডিও ও ভিডিও (Audio and Video)
৫) স্যাটেলাইট (Satellite)
৬) কম্পিউটার নেটওয়ার্ক (Computer network)
৭) ইন্টারনেট (Internet)
৮) মডার্ন টেলিযোগাযোগ (Modern Telecommunication)
৯) মডেম ইত্যাদি (Modem etc.)

ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স কাকে বলে?
উত্তরঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে বাস্তবে রূপদান করার জন্য যেসব যন্ত্রপাতি বা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তাদেরকে ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স বলে। যেমন, কম্পিউটার, ক্যামেরা, মোবাইল ফোন, মডেম ইত্যাদি। ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের ব্যবহার মানুষের জীবনকে আরও সহজ ও সমৃদ্ধ করে তুলেছে।

ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ে কাকে বলে?
উত্তরঃ বাস, ট্রাক ইত্যাদি চালানোর জন্য যে রকম রাস্তা বা হাইওয়ে তৈরি করতে হয় ঠিক সে রকম পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তথ্য দেওয়া নেওয়া করার জন্য যে রাস্তা বা হাইওয়ে তৈরি করা হয় তাকে ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ে (Information Super Highway) বলে।

উপাত্ত কি? (What is Data?)
উত্তরঃ ইনফরমেশন বা তথ্যের ক্ষুদ্রতম এককই হচ্ছে উপাত্ত।

কোন আবিষ্কারের ফলে তথ্য বিনিময় একটি নতুন জগতে পা দিয়েছিল?
উত্তরঃ ল্যান্ডফোন।

ই-বুক (E-book) কি? ই-বুকের সুবিধা কি?
উত্তরঃ ই-বুক হলো ইলেকট্রনিক বুক। ই-বুক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার এক অনন্য প্রযুক্তি।

ই-বুক ব্যবহারের সুবিধাগুলো হলো–

  • ই-বুক ডাউনলােড করে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য পাওয়া সম্ভব।
  • ব্যবহারিকভাবে ই-বুক সংরক্ষণের জন্য কোন লাইব্রেরি বা কক্ষের প্রয়ােজন নেই, কম্পিউটার বা রিডিং ডিভাইসে ই-বুক সহজে সংরক্ষণ করা যায়।
  • ই-বুক সহজে যেখানে সেখানে নিয়ে যাওয়া যায়।
  • ই-বুকে সহজে তথ্য সার্চ করা যায়।
  • ই-বুক ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয় বলে কোন ধরনের শিপিং বা প্যাকিং খরচ নেই।
  • ই-বুক সহজে বিতরণ ও বিক্রয় করা যায়।
  • ই-বুক খুব সহজেই প্রিন্ট করা সম্ভব, ফলে আর্থিক খরচ কম হয়।

প্রসেসরের উপর ফ্যান লাগানোর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রসেসর প্রতি মুহূর্তে লক্ষ কোটি হিসাব-নিকাশ করে বলে প্রসেসরের মধ্যে দিয়ে অনেক বিদ্যুৎ প্রাবহিত হয়। ফলে প্রসেসর এত গরম হয়ে ওঠে যে তাকে আলাদাভাবে ফ্যান দিয়ে ঠাণ্ডা না করলে সেটা জ্বলে পুড়ে যেতে পারে। তাই প্রসেসরের উপরে ফ্যান লাগানো থাকে।

প্রসেসরকে কম্পিউটারের ব্রেইন বলা হয় কেন?
উত্তর : কম্পিউটারের কেন্দ্রীয় বা মূল অংশ হলো প্রসেসর। কখন কী করতে হবে, কীভাবে করতে হবে, কোন কাজটি আগে বা পরে করতে হবে ইত্যাদি নির্দেশ প্রসেসর কম্পিউটারকে দিয়ে থাকে। কম্পিউটারের প্রসেসর মেমোরি থেকে তথ্য দেওয়া-নেওয়া করে এবং সেগুলো প্রক্রিয়া করে। এটি প্রতি মুহূর্তে অসংখ্য হিসাব-নিকাশ করে থাকে। প্রসেসর হচ্ছে কম্পিউটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি কম্পিউটারের পরিচালক হিসেবে কাজ করে থাকে। তাই প্রসেসরকে কম্পিউটারের ব্রেইন বলা হয়।

মাদারবোর্ড সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : আমরা যদি একটা কম্পিউটারকে খুলে ফেলি তাহলে সাধারণত একটা বোর্ডকে দেখতে পাব যেখানে অসংখ্য ইলেকট্রনিক্স খুঁটিনাটি লাগানো আছে। এই বোর্ডটার নাম মাদারবোর্ড এবং এটি কম্পিউটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর মধ্যে অন্যতম। মা যেভাবে সবাইকে বুকে আগলে রাখে, এই বোর্ডটাও কম্পিউটারের সবকিছু সেভাবে বুকে আগলে রাখে। তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে মাদারবোর্ড। মাদারবোর্ডের সবগুলো ডিভাইসের মাঝে একটা বেশ বড় ডিভাইস থাকে। সেটি হচ্ছে প্রসেসর। প্রসেসর ছাড়াও র‌্যাম, বিভিন্ন ডিস্ক ড্রাইভ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কার্ড মাদারবোর্ডের সাথে যুক্ত থাকে।

ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস কাকে বলে?
উত্তর : যে ডিভাইসগুলো দিয়ে কম্পিউটারে ইনপুট দেওয়া হয় তাদেরকে ইনপুট ডিভাইস বলে। যেমন : কী-বোর্ড, মাউস, স্ক্যানার ইত্যাদি। আর যে সমস্ত ডিভাইসগুলো কম্পিউটারের কাজ শেষ হলে তার ফলাফল প্রদর্শন করে তাদেরকে আউটপুট ডিভাইস বলে। যেমন: মনিটর, প্রিন্টার ইত্যাদি।

সম্পদশালী দেশ বলতে কি বোঝায়?
উত্তর : আধুনিক পৃথিবীর সম্পদ হলো তথ্য। তথ্যের চর্চা ও বিশ্লেষণ থেকে জ্ঞান জন্ম নেয়। তাই যে দেশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্যকে সংগ্রহ করতে পারে, বিশ্লেষণ করতে পারে সেই দেশ হচ্ছে সম্পদশালী দেশ।

গ্লোবাল ভিলেজ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : একটা গ্রামে যে রকম একজন মানুষ আরেকজনের সাথে যখন খুশি যোগাযোগ করতে পারে, ঠিক সে রকম তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষের ফলে পুরো পৃথিবীটাই যেন একটা গ্রামে পরিণত হয়েছে। সবাই সবার সাথে যখন খুশি যোগাযোগ করতে পারছে। আর এটা বোঝাবার জন্যেই নতুন একটি শব্দের জন্ম হয়েছে আর তা হলো গ্লোবাল ভিলেজ বা বৈশ্বিক গ্রাম। সত্যিকার অর্থেই আমরা এখন বৈশ্বিক গ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজে বসবাস করছি। কারণ তথ্য ও যোগাযোগে প্রযুক্তি সব মানুষকে বাস্তবে না হলেও ‘কার্যত’ (Virtually) কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।

“বাস্তবে পাশাপাশি না থাকলেও কার্যত আমরা সবাই পাশাপাশি”— কথাটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভার্চুয়ালি পাশাপাশি বলতে আমরা বুঝি সার্বক্ষণিক একজন অন্যজনের সাথে ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারা। তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষের কল্যাণে পৃথিবী যেন আমাদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। সমগ্র পৃথিবীটা এখন আমাদের কাছে একটি গ্রামের মতো পরিণত হয়েছে। একটি গ্রামে একজন মানুষ যে রকম অন্যজনের সাথে যখন খুশি যোগাযোগ করতে পারে, ঠিক সেরকম তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে ভার্চুয়ালী জগতের মাধ্যমে পৃথিবীটাও আমাদের কাছে একটি গ্রামের মতো হয়ে উঠেছে। এখন চোখের পলকে মানুষ এক দেশ থেকে আরেক দেশে চিঠি পাঠাতে পারে। চিঠির সাথে ছবি, কথা, ভিডিও সবকিছু পাঠানো সম্ভব। ফলে যোগাযোগ অনেক সহজ হয়েছে। আর এই গ্রামে বাস্তবে পাশাপাশি না হলেও ‘কার্যত’ এখন আমরা সবাই পাশাপাশি।

বর্তমান যুগকে ডিজিটাল যুগ বলা হয় কেন?
উত্তর : বর্তমানে প্রযুক্তি সকল মানুষের হাতে পৌছে গেছে। সর্বস্তরের মানুষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছে। আমাদের দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রমেই বেড়ে চলছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি, অপটিক্যাল ফাইবার, ইন্টারনেট ইত্যাদি যোগাযোগ ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়েছে বহুদূর। এতে করে যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সকল ক্ষেত্রে কাজের গতি যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিক তেমনি সকল ক্ষেত্রের কাজগুলো এখন আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়ে গেছে। বিশেষ করে এখন শিক্ষা ব্যবস্থায় তথ্য প্রযুক্তির প্রভাব লক্ষ করার মতো। এছাড়া ব্যবসা বাণিজ্য, ব্যাংক-বিমা, সরকারি ও আধা সরকারি সব অফিসেই তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা পৃথিবীটাই মানুষের হাতের মুঠোয় চলে আসতে শুরু করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির জন্য। এসব কারণে বর্তমান যুগকে বলা হচ্ছে ডিজিটাল যুগ।

ই-কমার্স (E-commerce) বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ইলেকট্রনিক্স কমার্সকেই (Electronic Commerce) ই-কমার্স বলে। অর্থাৎ অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্যকে বুঝানো হয়েছে। বর্তমানে ই-কমার্স হয়ে উঠেছে একুশ শতকের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রধান মাধ্যম। কেননা কোনো একটি পণ্যের বিস্তারিত বর্ণনা ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দিলে তা বিশ্বের সকল দেশের ক্রেতাগণ যেকোনো স্থানে বসে দেখতে পারেন। পছন্দ হলে অনলাইন অর্ডারিং প্রক্রিয়ায় পণ্যটি ক্রয় করে নিতে পারেন। এজন্য তাকে বাসা থেকে বের হওয়ার প্রয়োজন নাই। অন্যদিকে বিক্রেতারও কোনো নির্দিষ্ট দোকান প্রয়োজনও নাই, শুধুমাত্র অনলাইনে প্রচার করলেই হলো, যা ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতি সাধন করে।

Rate this post